ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
মু'মিন প্রত্যেক ভাল কাজের সম্পর্ক আল্লাহর সাথে করবে। আর প্রত্যেক মন্দ কাজকে নিজের দোষত্রুটির দিকে সম্বন্ধ করবে।
আল্লাহ তা'আলা এ সম্পর্কে বলেন,
مَّا أَصَابَكَ مِنْ حَسَنَةٍ فَمِنَ اللَّهِ ۖ وَمَا أَصَابَكَ مِن سَيِّئَةٍ فَمِن نَّفْسِكَ ۚ وَأَرْسَلْنَاكَ لِلنَّاسِ رَسُولًا ۚ وَكَفَىٰ بِاللَّهِ شَهِيدًا
আপনার যে কল্যাণ হয়, তা হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে আর আপনার যে অকল্যাণ হয়, সেটা হয় আপনার নিজের কারণে। আর আমি আপনাকে পাঠিয়েছি মানুষের প্রতি আমার পয়গামের বাহক হিসাবে। আর আল্লাহ সব বিষয়েই যথেষ্ট-সববিষয়ই তাঁর সম্মুখে উপস্থিত।(সূরা নিসা-৭৯)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) আপনি পাবলিক ভার্সিটিতে পড়েন, এজন্য লোকজন সম্মান করে, মাঝেমধ্যে মনে হয় আমিই একা। এই মুহূর্তে আপনি স্বরণে নিয়ে আসবেন।এসবই আল্লাহর অনুগ্রহে হয়েছে, এতে আমার কোনো কৃতিত্ব নাই। তাহলে এটা আর অহংকার হবে না।
(২) আমি অন্যদের চেয়ে ভালো ছাত্র। এটা মনে আসার সাথে সাথেই ভাববেন,এসবতো আল্লাহর কৃপা।
(৩) আমি অন্যদের চেয়ে ভালো পজিশনে আছি, কেননা আমি জব করি। এটা মনে আসার সাথে সাথেই ভাববেন,এসবতো আল্লাহর কৃপা।
(৪)কুরআনের সুচনা রমজান মাসে হয়েছিল। তাছাড়া আরো একটি ব্যখ্যা রয়েছে, রমজান মাসে কুরআনকে লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে একত্রে নাযিল করা হয়েছে, তারপর ধারাবারিক ভাবে একটু একটু করে দুনিয়াতে নিয়ে আসা হয়,
তাফসীরে জ্বালালাইনে সূরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াতের তাফসীরে বলা হয়,
شَهْر رَمَضَان الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآن} مِنْ اللَّوْح الْمَحْفُوظ إلَى السَّمَاء الدُّنْيَا فِي لَيْلَة الْقَدْر مِنْهُ
যদি ধরে নেয়া হয় যে, একেবারেই নাযিল হয়েছে, তাহলে বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে যে বিভিন্ন আয়াত নাযিল হয়েছিলো, সেগুলো আল্লাহ পূর্ব থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন।
(৫) আমি নামাজ পড়ি, যে পড়ে না, আমি তার থেকে উত্তম ভাবা যাবে। সাথে সাথেই ভাবতে হবে,এটা আল্লাহর অনুগ্রহে।
(৬) এভাবে জামাত ডিঙ্গিয়ে যেতে হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে।সুতরাং নিজেও যাওয়া যাবে, এবং অন্যকেও সুযোগ দেওয়া যাবে না।
আব্দুল্লাহ ইবনু বুসর (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُسْرٍ، قَالَ كُنْتُ جَالِسًا إِلَى جَانِبِهِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَقَالَ جَاءَ رَجُلٌ يَتَخَطَّى رِقَابَ النَّاسِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَىِ اجْلِسْ فَقَدْ آذَيْتَ "
তিনি বলেন, আমি শুক্রবারে তার পাশে বসা ছিলাম, তারপর তিনি বলেন, এক ব্যক্তি মানুষের ঘাড় ডিঙিয়ে আসছিল, তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, বসে পড়, তুমি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছ।(সুনানে আবি দাউদ-১৪০২)
(৭)
ফজরের দু-রাকাত সুন্নত ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও পড়তে হবে।যদি প্রবল ধারণা বিশ্বাস হয় যে,জামাত শেষ হওয়ার পূর্বে সুন্নত পড়ে শেষ করা যাবে।তাহলে তখন প্রথমে সুন্নত পড়তে হবে।সুন্নত পড়া শেষ করে জামাতে শরিক হতে হবে।
তাছাড়া অন্যন্য ওয়াক্তের নামাযের ব্যাপারে হুকুম হল,জামাত শুরু হয়ে গেলে বা শুরু হয়ে যাবে,এমন মুহুর্তে আর সুন্নত পড়া যাবে না।যদি কেউ সুন্নত পড়া শুরু করে নেয়,তাহলে জামাত শুরু হয়ে গেলে দু-রাকাতের মাথায় প্রথম বৈঠক করে সুন্নতকে সমাপ্ত করে দিতে হবে।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/5084
(৮)
নামাযির সামন দিয়ে আসার কারণে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। মুসল্লির সামনে যেটা রাখা হয়, সেটা সুতরা, এটাকে মুর্তি পূজার সাথে তুলনা করা যাবে। কেননা এখানে সুতরাং ইবাদত করা হচ্ছে না।
(৯) আল্লাহকে রাজী খুশির পাশাপাশি তাড়াতাড়ি ঘুমের নিয়ত থাকলেও এতে সওয়াবে কোনো সমস্যা হবে না। তাছাড়া বন্ধুর সামনে ইফতার না করা অতিরঞ্জন। কেননা আপনি যদি ইফতার করতেন, তাহলে এটা নফল রোযা রাখার মৌন দাওয়াত হতো।