আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
66 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
closed by
আস সালামু আলাইকুম।
উস্তাদ, আমি পাবলিক ভার্সিটিতে পড়ি। কিছু বিষয় নিয়ে, খুব জানতে ইচ্ছা করে।
১। আমি যখন গ্রামে যাই, মানুষ আমাকে অনেক সম্মান করে। এতে অনেক ভালো লাগে। মনে হয়, পাবলিক ভার্সিটি তে পড়ি, এলাকায় আমি একা, নিজেকে অন্যের থেকে বড় মনে হয়। এটা কি অহংকার হবে?

২। মনে করুন আমি পড়াশোনায় ভালো, স্যার অনেক আদর করে, এতে অন্যদের হতে নিজেকে ভালো ছাত্র মনে হয়। কেউ না পারলেও আমি পারি, এতে নিজে ভালো ভাবা স্বাভাবিক না?। আমি তো তাদের থেকে ভালো ছাত্র। এটা কি অহংকার হবে? পাপ হবে?

৩। আমি জব করি, আরেক ভাই/বন্ধু জব করে না, আমাকে সম্মান করে। আমি নিজেকে মনে মনে তার থেকে ভালো পজিশনে আছি, তার থেকে উত্তম আমি। কথা বললে সে নিজেকে ছোট ভাবে, এটা কি পাপ বা অহংকার হবে?

৪। কোরআন অনেক বছর মিলে নাযিল হয়েছে, তাহলে কোরআনে কেনো বলা হয়েছে, রমজান মাসে নাজিল হয়েছে? রমজান মাসে তো শুরু হয়েছিল। আর যদি একবারে নাযিল হয়, বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন আয়াত নাযিল হয়েছে, এগুলো কি আল্লাহ আগে হতেই ঠিক করে রেখেছিলেন?

৫। আমি নামাজ পড়ি, যে পড়ে না, আমি তার থেকে উত্তম ভাবা যাবে? পাপ হবে না?

৬। আমি মসজিদে ঢুকলাম, (আমি পরিচিত/শিক্ষক /উচ্চ পদস্থ কর্ম কর্তা/বড় চাকরি জীবী/জনপ্রিয় ব্যক্তি), আমাকে সামনে যাওয়ার জন্যে, জায়গা দেওয়া হচ্ছে, আমি সামনে যাচ্ছি এবং সামনের কাতারে দাঁড়ালাম। এতে করে, আমার পাপ হবে? যারা জায়গা করে দিচ্ছে তাদের পাপ হবে? [আইওএম এর একটা ক্লাসে শুনেছিলাম, সম্ভবত এরশাদ সরকার(নাম মনে নেই) একবার এভাবে যাচ্ছিলেন মসজিদে লোকেরা জায়গা করে দিচ্ছিলো, এটা দেখে ইমাম, গর্জে উঠে বলেছিলেন, সামনে না যেতে কঠিন হুশিয়ারি দিচ্ছিলেন, কোন উস্তাদ বলেছিলেন মনে নেই, আমি ভুল হতে পারি, সরি]। প্লিজ উত্তর দিবেন।

৭। মসজিদে গিয়ে, সুন্নাত নামাজ পড়ি। অনেকসময় ফরজের ইকামত হয়ে যায়। তখন নামাজ ছেড়ে দিয়ে ফরজে দাড়াবো?যে অবস্থায়, থাকবো সে অবস্থাতেই কি নামাজ ছেড়ে দিব। এরকম নাকি হাদিস আছে, ফরজ এর সময় অন্য কোনও নামাজ নেই, আমি শুনেছি।

৮। নামাজের সামনে দিয়ে হাটলে, ৪০ বছরের ইবাদত নষ্ট হয়ে যাবে৷ একদিন ভুল করে একজনের নামাজে সামনে দিয়ে আসছিলাম। এটা কি, সঠিক? আর নামাজের সামনে অনেক সময় মসজিদে প্লাস্টিক বা কাঠের একটা কিছু দিয়ে আমরা চলে আসি, সামনে এমন কিছু দেওয়া, প্রায় সব মসজিদে আছে, এটা কি, সামনে কিছু রেখে পুজা করার মত দেখায় না? এটা কিয়ে জায়েজ হবে?

৯। আমি সোমবার/বৃহস্পতিবার রোজা মাঝে মধ্যেই রাখি, সওয়াবও তাড়াতাড়ি ঘুমাতে পারবো(অনেক টায়ার্ড লাগে এতে বাধ্য হয়ে ঘুমিয়ে যেতে হয়), ফজর/তাহাজ্জুদে উঠতে পারি যেনও এই নিয়তে। এটা কি ভুল নিয়ত হবে? নাকি শুধু আল্লাহর উদ্যেশ্যে রাখতে হবে। আর একটা বিষয়, এই রোজাটা এমন ভাবে রাখি, আল্লাহ আর আমি ছাড়া কেউ জানতে পারে না, দুইদিন  রোজা অবস্থায় এক বন্ধুর সাথে ঘুরতে গিয়েছিলাম, ইফতারের সময় ইফতারও করিনি, যাতে বন্ধু বুঝতে না পারে, শুধু উপরে তাকিয়ে বলেছি, আল্লাহ রোজা কবুল করো। এটা কি গোমরাহী বা উগ্রবাদী হয়ে যাচ্ছে? এটা কি আমার ভুল হয়েছে, নিজে নিজে এমনটা ভেবে করেছি, কারো হতে শুনিনি। এটা আবার বেদায়াত করে ফেললাম কিনা, ভয় হচ্ছে।
প্রশ্নের উত্তর প্লিজ দিবেন।

জাযাকাল্লাহ।
closed

1 Answer

+1 vote
by (713,640 points)
selected by
 
Best answer
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
মু'মিন প্রত্যেক ভাল কাজের সম্পর্ক আল্লাহর সাথে করবে। আর প্রত্যেক মন্দ কাজকে নিজের দোষত্রুটির দিকে সম্বন্ধ করবে।
আল্লাহ তা'আলা এ সম্পর্কে বলেন,
مَّا أَصَابَكَ مِنْ حَسَنَةٍ فَمِنَ اللَّهِ ۖ وَمَا أَصَابَكَ مِن سَيِّئَةٍ فَمِن نَّفْسِكَ ۚ وَأَرْسَلْنَاكَ لِلنَّاسِ رَسُولًا ۚ وَكَفَىٰ بِاللَّهِ شَهِيدًا
আপনার যে কল্যাণ হয়, তা হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে আর আপনার যে অকল্যাণ হয়, সেটা হয় আপনার নিজের কারণে। আর আমি আপনাকে পাঠিয়েছি মানুষের প্রতি আমার পয়গামের বাহক হিসাবে। আর আল্লাহ সব বিষয়েই যথেষ্ট-সববিষয়ই তাঁর সম্মুখে উপস্থিত।(সূরা নিসা-৭৯)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) আপনি পাবলিক ভার্সিটিতে পড়েন, এজন্য লোকজন সম্মান করে, মাঝেমধ্যে মনে হয় আমিই একা। এই মুহূর্তে আপনি স্বরণে নিয়ে আসবেন।এসবই আল্লাহর অনুগ্রহে হয়েছে, এতে আমার কোনো কৃতিত্ব নাই। তাহলে এটা আর অহংকার হবে না।

(২) আমি অন্যদের চেয়ে ভালো ছাত্র। এটা মনে আসার সাথে সাথেই ভাববেন,এসবতো আল্লাহর কৃপা। 

(৩) আমি অন্যদের চেয়ে ভালো পজিশনে আছি, কেননা আমি জব করি। এটা মনে আসার সাথে সাথেই ভাববেন,এসবতো আল্লাহর কৃপা। 

(৪)কুরআনের সুচনা রমজান মাসে হয়েছিল। তাছাড়া আরো একটি ব্যখ্যা রয়েছে, রমজান মাসে কুরআনকে লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে একত্রে নাযিল করা হয়েছে, তারপর ধারাবারিক ভাবে একটু একটু করে দুনিয়াতে নিয়ে আসা হয়,

তাফসীরে জ্বালালাইনে সূরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াতের তাফসীরে বলা হয়,
شَهْر رَمَضَان الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآن} مِنْ اللَّوْح الْمَحْفُوظ إلَى السَّمَاء الدُّنْيَا فِي لَيْلَة الْقَدْر مِنْهُ

যদি ধরে নেয়া হয় যে, একেবারেই নাযিল হয়েছে, তাহলে বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে যে বিভিন্ন আয়াত নাযিল হয়েছিলো, সেগুলো আল্লাহ পূর্ব থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন।


(৫) আমি নামাজ পড়ি, যে পড়ে না, আমি তার থেকে উত্তম ভাবা যাবে। সাথে সাথেই ভাবতে হবে,এটা আল্লাহর অনুগ্রহে।

(৬) এভাবে জামাত ডিঙ্গিয়ে যেতে হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে।সুতরাং নিজেও যাওয়া যাবে, এবং অন্যকেও সুযোগ দেওয়া যাবে না।

আব্দুল্লাহ ইবনু বুসর (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُسْرٍ، قَالَ كُنْتُ جَالِسًا إِلَى جَانِبِهِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَقَالَ جَاءَ رَجُلٌ يَتَخَطَّى رِقَابَ النَّاسِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَىِ اجْلِسْ فَقَدْ آذَيْتَ "
 তিনি বলেন, আমি শুক্রবারে তার পাশে বসা ছিলাম, তারপর তিনি বলেন, এক ব্যক্তি মানুষের ঘাড় ডিঙিয়ে আসছিল, তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে বললেন, বসে পড়, তুমি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছ।(সুনানে আবি দাউদ-১৪০২)


(৭) 
ফজরের দু-রাকাত সুন্নত ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও পড়তে হবে।যদি প্রবল ধারণা বিশ্বাস হয় যে,জামাত শেষ হওয়ার পূর্বে সুন্নত পড়ে শেষ করা যাবে।তাহলে তখন প্রথমে সুন্নত পড়তে হবে।সুন্নত পড়া শেষ করে জামাতে শরিক হতে হবে।

তাছাড়া অন্যন্য ওয়াক্তের নামাযের ব্যাপারে হুকুম হল,জামাত শুরু হয়ে গেলে বা শুরু হয়ে যাবে,এমন মুহুর্তে আর সুন্নত পড়া যাবে না।যদি কেউ সুন্নত পড়া শুরু করে নেয়,তাহলে জামাত শুরু হয়ে গেলে দু-রাকাতের মাথায় প্রথম বৈঠক করে সুন্নতকে সমাপ্ত করে দিতে হবে।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/5084

(৮) 
নামাযির সামন দিয়ে আসার কারণে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। মুসল্লির সামনে যেটা রাখা হয়, সেটা সুতরা, এটাকে মুর্তি পূজার সাথে তুলনা করা যাবে। কেননা এখানে সুতরাং ইবাদত করা হচ্ছে না।

(৯) আল্লাহকে রাজী খুশির পাশাপাশি তাড়াতাড়ি ঘুমের নিয়ত থাকলেও এতে সওয়াবে কোনো সমস্যা হবে না। তাছাড়া বন্ধুর সামনে ইফতার না করা অতিরঞ্জন। কেননা আপনি যদি ইফতার করতেন, তাহলে এটা নফল রোযা রাখার মৌন দাওয়াত হতো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (713,640 points)
+1
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...