আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
258 views
in সালাত(Prayer) by (87 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু আমার কিছু প্রশ্ন ছিল। দয়া করে উত্তর দিবেন।

১/ কসর সালাত এর বিধান কি?

২/ কসর সালাত কখন প্রযোজ্য হয়?

৩/ কসর বাদে পূর্ণ নামাজ পড়া যায় কি?

৪/ কসর এর সময় সুন্নাত ও বিতর এর বিধান ও নিয়ম কি?

৫/ জামাত এ পড়লে কসররত ব্যাক্তির কি করণীয়?

৬/ কসররত ব্যাক্তি ইমামতি করতে পারবে?

৭/ কসর এ দুই ওয়্যাক্ত নামাজ কি একসাথে পড়া যায়? এটার নিয়ম কি?

৮/ কসর সালাত এর প্রতি ওয়াক্তের নামাজ আদায়ের নিয়ম জানাবেন।


জাজাকাল্লাহু খইরণ।

1 Answer

0 votes
by (572,970 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মুসাফিরের জন্য যোহর আসর ও ইশার ফরয নামায দুই রাকাত পড়া  (কসর) ওয়াজিব;  চার রাকাত (পূর্ণ পড়া) নাজায়েয,এতে সে গুনাহগার হবে । কারণ মুসাফিরের নামাযের বিধান হল কসর।
,
আয়েশা রাযি. বলেন,

فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ

মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)

অপর হাদিসে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

বিস্তারিত জানুনঃ 

(০২)
৭৭ কিলোমিটার থেকে বেশি দুরত্বে ১৫ দিনের চেয়ে কম সফরের নিয়তে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিজ এলাকার সীমানা পার হওয়ার পর থেকে কসর করতে হবে।
,
(০৩)
মুসাফিরের জন্য কসর পড়া ওয়াজিব।
কসর বাদ দিয়ে পূর্ণ নামাজ পড়া যাবেনা।

( উল্লেখ্য অন্যান্য কিছু মাযহাব,এবং কিছু ইসলামী স্কলারদের মত হলো মুসাফিরের জন্য কসর পড়া জায়েয, তবে ওয়াজিব নয়।
তাদের মতানুসারীরা সেই  মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।) 

(০৪)
পূর্ণ বিতর নামাজই আদায় করতে হবে।

সুন্নতে মুআক্কাদা নামাযে কসর নাই।সময় সুযোগ থাকলে সফলের হালতে সুন্নতে মু'আক্কাদার নামায পড়ে নেওয়াই উত্তম।

(০৫)
এক্ষেত্রে ইমাম মুকিম হলে এই মুসাফির মুক্তাদি হলে সে পূর্ণ নামাজই আদায় করবে। 
,
(০৬)
হ্যাঁ করতে পারবে।
তবে মুকিম ব্যাক্তি তার ইক্তেদা করলে সে নিজের নামাজ শেষে মুকিম মুক্তাদিরের পূর্ণ নামাজ (পূর্ণ নামাজ হতে যে কয় রাকাত বাকি আছে,তাহা)  আদায় করতে বলবে।

(০৭)
একই ওয়াক্তে হানাফি মাযহাব মতে এটির অনুমতি নেই।
তবে এক ওয়াক্তের শেষ মুহুর্তে  এক নামাজ আর অন্য ওয়াক্তের শুরুতে ২য় নামাজ পড়া যাবে।
,
অন্যান্য কিছু মাযহাবে একই ওয়াক্তে মুসাফিরের জন্য এটির পূর্ণ অনুমতি রয়েছে। 

(০৮)
ফজরের নামাজ তো এমনিতেই দুই রাকাত,তাই দুই রাকাত ফজর নামাজ পড়ার নিয়ত করে নামাজ শুরু করবে।
,
অন্যান্য নামাজ শুধু মাগরিব নামাজ ব্যাতিত সব গুলো ফরজ নামাজ দুই রাকাত আদায় করবে।

এই ভাবে মনে মনে নিয়ত করবে যে, জোহরের কসর নামাজ আদায়ের নিয়ত করছি।

বিতির নামাজ,আর মাগরিব নামাজ তিন রাকাতই আদায় করবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...