আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
146 views
in সালাত(Prayer) by (24 points)
১। মুসাফির যদি ভুল করে পুরো সালাত আদায় করে ফেলে তবে কি সেই নামাজ কাজা করতে হবে? দীর্ঘদিন আগের এরূপ সালাতের মাসায়লা কী হবে?


২। যারা গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে মেসে থেকে লেখাপড়া করেন তারা কি মুসাফির? তারা কি যাকাত পাবেন (যদি নিসাব পরিমান সম্পদ না থাকে)? তারা কি কসর নামাজ পড়বেন?


৩। কেউ গ্রাম থেকে ঢাকায় আসলো কলেজে ভর্তি হতে, এসে আত্মীয়ের বাড়ি উঠলো, এখনও তার ঢাকায় কোনো ঠিকানা নেই, তবে সে মেস খুঁজছে, পেলে সেখানে উঠবে, মেসে উঠার আগ পর্যন্ত আত্মীয়ের বাড়ি থাকবে। সে কি মুসাফির? সে কি নামাজ কসর করবে?


৪। 1281 নং ফতোয়ার বলা আছে নিজ এলাকা অতিক্রম করা মুসাফির হওয়ার শর্ত, কেউ ঢাকায় যদি মেসে থাকে তবে সে এলাকা কীভাবে নির্ধারন করবে?


৫। কে মুসাফির আর কে সালাত কসর করবে এটা নিজে নিজেই বুঝতে পারবো কোন মূলনীতির আলোকে?

1 Answer

0 votes
by (676,240 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
আয়েশা রাযি. বলেন,

فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ

মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)

শরীয়তের বিধান মতে মুসাফিরের জন্য যোহর আসর ও ইশার ফরয নামায দুই রাকাত পড়া  (কসর) ওয়াজিব;  চার রাকাত (পূর্ণ পড়া) নাজায়েয,এতে সে গুনাহগার হবে । কারণ মুসাফিরের নামাযের বিধান হল কসর।

তবে যদি ভুলে ৪ রাকাত পড়ে ফেলে তাহলে ২ রাকাত পড়ে যদি বৈঠক করে থাকে তাহলে প্রথম ২ রাকাত ফরয হবে, আর বাকি ২ রাকাত নফল হিসেবে ধর্তব্য হবে। কিন্তু সালাম ফিরাতে দেরী হওয়ায় সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। 
(মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/৫৪১)

যদি নামাযের শেষে সেজদায়ে সাহু দেয়, তাহলে নামায হয়ে যাবে,(মাকরুহের সহিত)। আর যদি সেজদায়ে সাহু না দেয়, তাহলে নামায পুনরায় পড়তে হবে।
যদি ২ রাকাতের পর বৈঠক না করে থাকে, তাহলে নামায হয় নি, নামাযটি পূণরায় পড়তে হবে।
(মারাকিল ফালাহ ২৩১; শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৮)

وأما الثالث․․․ فہو تغییر بعض الأحکام فذکر المصنف منہا قصر الصلاة والمراد وجوب قصرہا حتی لو أتمّ فإنہ آثم وعاصٍ؛ لأن الفرض عندنا من ذوات الأربع رکعتان في حقہ لا غیر إلخ (۲/ ۲۲۹، ط: زکریا)
যদি মুসাফির পুরো নামাজ পড়ে,তাহল সে গুনাহগার হবে,,,,,,।

فلو أتمّ وقعد في الثانیة صحّ وإلا فلا أي وإن لم یقعد علی رأس الرکعتین لم یصحّ فرضہ الخ (البحر الرائق، ۲/۲۳۰، ط: زکریا)
যদি কেহ চার রাকাত নামাজই পড়ে নেয়,২য় রাকাতে বৈঠক করে,তাহলে নামাজ ছহীহ হয়ে যাবে।
অন্যথায় নামাজ ছহীহ হবেনা,,,,,।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত সালাত গুলোর ক্ষেত্রে উক্ত মুসাফির যদি ২য় রাকাত গুলোতে বৈঠক করে থাকে,তাহলে সে গুনাহগার হলেও সেই সালাত গুলির কাজা আদায় করতে হবেনা।

আর যদি উল্লেখিত সালাত গুলোর ক্ষেত্রে উক্ত মুসাফির ২য় রাকাত গুলোতে বৈঠক না করে থাকে,তাহলে সেই সালাত গুলির কাজা আদায় করতে হবে।

(০২)
যেহেতু তারা মেসে এসে ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি দিন থাকার নিয়ত করেন,তাই তারা মুসাফির নন।
তাই তারা কসর নামাজ আদায় করবেনা।

নিসাব পরিমান সম্পদ না থাকলে তারা যাকাত গ্রহনের উপযুক্ত। 

(০৩)
সে যেহেতু ঐ এলাকায় এসে ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি দিন থাকার নিয়ত করে,তাই সে মুসাফির নয়।
তাই সে কসর নামাজ আদায় করবেনা।

(০৪)
তিনি তার নিজ বাসা হতে ঢাকায় যাওয়ার সময় নিজ গ্রামের/শহরের সীমানা পার হওয়ার পর থেকে কসর করবেন।

ঢাকা হতে বাসায় যাওয়ার সময় তিনি  যেই শহরে আছেন,সেই শহরের সীমানা পার হওয়ার পর থেকে কসর করবেন।

(০৫)
শরীয়তের বিধান হলো ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) তে এক দিনের জন্য গেলেও পুরো নামাজ পড়তে হবে।
    
ব্যক্তি নিজের স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয়না। স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।

ব্যাক্তি ওয়াতনে ইকামত, যেখানে সে ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি দিন থাকার নিয়ত করেছে,সেখানে গেলেও মুসাফির থাকেননা।

শরীয়তের বিধান হলো কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলেও কসর পড়তে হবে। বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পার। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (676,240 points)

 الدر المختار ج:۲’ص:۱۳۲ باب صلاة المسافر  : (و)یبطل (وطن الاقامة بمثلہ و) بالوطن الاصلی (و) بانشاء (السفر)۔ 


 فتاویٰ ہندیہ الباب الخامس عشر’ ج:۱’ ص:۱۴۲  : ووطن الاقامة یبطل بوطن الاقامة وبانشاء السفر وبالوطن الاصلی ہکذا فی التبیین

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 326 views
0 votes
1 answer 1,069 views
...