আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
283 views
in সালাত(Prayer) by (39 points)
আসসালামু আলাইকুম

১ | সালাত কসর করা কাকে বলে?

২ | আমার বাসা মাগুরায়। শারীরিক অসুস্থতার জন্য প্রায় ১৫ দিন খুলনা থাকা লেগেছে। ওখানে গিয়ে শারীরিক অসুস্থতার জন্য কয়েক দিন বসে বসেও সালাত আদায় করা লাগছে। বুকে প্রচুর ব্যাথা হয়েছিলো। বিশেষ করে যখন সালাত দাঁড়িয়ে আদায় করার চেষ্টা করতাম তখন রুকু বা সিজদাহ্ করতে ব্যাথা আরো বেড়ে যেত। তখন কয়েক দিন বসে বসে ইশারার মাধ্যমে সালাত আদায় করি। খুলনায় আমার তিন খালার বাসা। ওইখানেই ছিলাম। ওইখানে থেকেই চিকিৎসা করেছি।
***এখন আমার প্রশ্ন হলো -
আমি কী এই অবস্থায় সালাত কসর করতে পারবো?

৩ | আমি কী দুই ওয়াক্তের সালাত একসাথে আদায় করতে পারবো যদি একেবারেই না পারি? যেমন - ১) যুহরের সালাত আসরে ওয়াক্তে আসরের সালাতের আগে। প্রথম দুই রাকআত যুহরের ফরজ সালাতের কসর আদায় করার পর আবার দুই রাকআত আসরের ফরজ সালাতের কসর। ২) মাগরিবের সালাত ইশার ওয়াক্তে ইশারা সালাতের আগে। প্রথম মাগরিবের ফরজ তিন রাকাআত সালাত আদায়ের পর আবার ইশার দুই রাকআত ফরজ সালাতের কসর।
***এভাবে আদায় করলে হবে?

৪ | আমি ইশার দুই রাকআত কসর সালাতের পর তিন রাকাআত বিতরের ওয়াজিব সালাত আদায় করেছি এটা কী ঠিক আছে?

৫ | কখন, কোন অবস্থায় দুই ওয়াক্ত এর সালাত একসাথে আদায় করা যাবে? আমার যদি সময় হয় তার পরও যদি ইচ্ছা করে দুই ওয়াক্ত এর সালাত একসাথে আদায় করি তাহলে কী ভুল হবে?

৬ | অসুস্থতা ব্যতিত স্বাভাবিক সময় যদি মাগুরা থেকে খুলনায় যাই তাহলে কী সালাত কসর করতে পারবো? যেমন - খালাদের বাসায় বেড়াতে গেলাম তখন।

বিঃদ্রঃ মাগুরা থেকে খুলনার দুরত্ব ১০০+ কি:মি:

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/8669 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
হানাফি উলামাগণ বলেন,
ﻻ ﺟﻤﻊ ﺑﻴﻦ ﻓﺮﺿﻴﻦ ﻓﻲ ﻭﻗﺖ . ﻭﻻ ﻳﺠﻮﺯ ﺇﻻ ﺍﻟﺠﻤﻊ ﺍﻟﺼﻮﺭﻱ ﺑﺘﺄﺧﻴﺮ ﺍﻟﻈﻬﺮ ﺇﻟﻰ ﺁﺧﺮ ﻭﻗﺘﻬﺎ , ﺛﻢ ﺃﺩﺍﺀ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻌﺼﺮ ﻓﻲ ﺃﻭﻝ ﻭﻗﺘﻬﺎ , ﻣﺎ ﻋﺪﺍ ﺍﻟﺠﻤﻊ ﺑﻌﺮﻓﺔ ﻭﻣﺰﺩﻟﻔﺔ
আরাফা এবং মুযদালিফা ব্যতীত আর কোথাও দুই নামাযকে একত্রিকরণের বিধান নেই।তবে বাহ্যত দু'টি নামাযকে এভাবে একত্র করে পড়া যেতে পারে যে,যোহরের নামাযকে একেবারে শেষ ওয়াক্তে এবং আছরের নামাযকে একেবারে প্রথম ওয়াক্তে এমনভাবে পড়া যে, দৃশ্যত দু'টি নামাযকে একতত্রিত বুঝা যাবে, যদিও বাস্তবতায় প্রত্যেক নামাযকে তার ওয়াক্তে পড়া হচ্ছে।(আদ্দুর্রুল মুখতার-১/৩৮১) সফর অবস্থায় দুই নামাযকে একত্রকরণ না করা উত্তম সম্পর্কে বিভিন্ন মাযহাবের মতামত।


https://www.ifatwa.info/8508 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
তিন দিন বা তার সমপরিমাণ দূরত্বের অধিক সফর করলে কেউ মুসাফির হিসাবে গণ্য হবে।যেমন ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে-
أَقَلُّ مَسَافَةٍ تَتَغَيَّرُ فِيهَا الْأَحْكَامُ مَسِيرَةُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ، هُوَ الصَّحِيحُ
সর্বনিম্ন দূরত্ব যার দ্বারা শরীয়তের বিধি-বিধানে  পরিবর্তন আসে।(তথা মানুষ মুসাফির হয়)তিন দিনের দূরত্ব।(তাবয়ীন) এটাই বিশুদ্ধ মত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩৮)বিস্তারিত জানুন-১২৮১

তিনদিনের দূরত্বকে ফুকাহায়ে কেরাম ৭৭কিলো সমপরিমাণ নির্ধারণ করেন।তাই বর্তমানে কেউ ৭৭কিলো সমপরিমাণ সফর করলে সে শরয়ী মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/4429

মুসাফিরের নামায কসর/অর্ধেক করে পড়তে হয়।অর্থাৎ চার রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে দু রা'কাত পড়তে হবে।দুই রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে দুই রা'কাত পড়তে হবে। এবং তিন রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে কোনো কসর নেই।তবে সুন্নাত নামায সমূহে কসরের বিধান প্রযোজ্য নয়,তথা পড়লে সম্পূর্ণই পড়তে হবে।এবং সাধারণত সুন্নাতকে তরক/পরিত্যাগ করা যাবে না।বরং সময় থাকলে সুন্নাত নামায সমূহকে পড়ে নেয়া উচিৎ।সময় সুযোগ না থাকলে অবশ্য সুন্নাত-কে পরিত্যাগ করার রুখসত রয়েছে।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৭/৫১৭)তবে পড়ে নেয়াটা-ই উত্তম।কেননা বর্ণিত রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাঃ সফরের সময় সুন্নাত পড়েছেন।(তিরমিযি-১/৭২)

لما في الدرالمختار ،ج٢ـ ص:١٣١
(وَيَأْتِي) الْمُسَافِرُ (بِالسُّنَنِ) إنْ كَانَ (فِي حَالَ أَمْنٍ وَقَرَارٍ وَإِلَّا) بِأَنْ كَانَ فِي خَوْفٍ وَفِرَارٍ (لَا) يَأْتِي بِهَا هُوَ الْمُخْتَارُ لِأَنَّهُ تَرْكٌ لِعُذْرٍ تَجْنِيسٌ، قِيلَ إلَّا سُنَّةَ الْفَجْرِ
وفي ردالمحتار تحت(قوله هو المختار) وقيل الأفضل الترك ترخيصا، وقيل الفعل تقربا. وقال الهندواني: الفعل حال النزول والترك حال السير، وقيل يصلي سنة الفجر خاصة، وقيل سنة المغرب أيضا بحر قال في شرح المنية والأعدل ما قاله الهندواني. اهـ.
قلت: والظاهر أن ما في المتن هو هذا وأن المراد بالأمن والقرار النزول وبالخوف والفرار السير لكن قدمنا في فصل القراءة أنه عبر عن الفرار بالعجلة لأنها في السفر تكون غالبا من الخوف تأمل
 
বিতির নামায ওয়াজিব।বিতিরে কসর প্রযোজ্য নয়।এবং পরিত্যাগ করাও যাবে না।বরং সফরের হালতেও বিতির নামাযকে পড়তে হবে। (ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-৪/৩৩১) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/737

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনি মুসাফির। আপনি কসর নামায পড়বেন।
সররের দূরত্ব পরিমাণ জায়গা যেকোনো কারণেই অতিক্রম করা হোক না কেন,আপনাকে কসর করতেই হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 293 views
0 votes
1 answer 220 views
...