আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
214 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।

আমার আব্বু আমার মায়ের এবং ছোট বোনের দায়িত্ব ছেড়ে দিছে। উনি আর্থিকভাবে আর দেখে না। আব্বুর আরেক পরিবার আছে উনি সেখানেই থাকেন।

বর্তমানে আমার আম্মু, ছোট বোনকে নিয়ে আমার বড় খালার বাসায় থাকেন।আলহামদুলিল্লাহ,  তাদের আর্থিক অবস্থা খুবই ভালো। কিন্তু তারাও আমার আম্মু আর বোনকে রাখতে চাচ্ছে না বেশিদিন।

আমার স্বামী নওমুসলিম। আমাদের ২ জনের পরিবার। আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো না।

আমার ছোট বোনের এখনো পর্দা ফরজ হয়নি। ১১/১২ বছর বয়স। তবে ওর আচরণ আমার স্বামীর খারাপ লাগে। আমার স্বামীকে হুট করে চুমু দেওয়া আরো অনেক বিষয় আছে যার কারণে আমার স্বামী আমার বোন আমাদের বাসায় আসা পছন্দ না।

২ বছর ধরে সন্দেহ ছিলো ও হয়তো স্কুলে কোনো খারাপ সংগে আছে। এখন তো ওর স্কুল বদলানো হইছে। তো কিছুদিন আগে আমরা মোবাইল চেক করে জানতে পারি
আমার বোন মোবাইলে বিভিন্ন খারাপ ভিডিও দেখে। আমরা শাসনের পরও ও ঠিক হয় নি এখনো। মোবাইল দিতে মানা করলেও ও যখন কান্নাকাটি করে তখন আম্মু ওরে মোবাইল দিয়ে দেয়।

আমার স্বামী এসব বিষয় নিয়ে অনেক চিন্তিত। আমার আম্মুকে রাখলেও আমার বোনকে বাসায়  রাখা নিয়ে উনি অনেক চিন্তিত। আবার এখনই চাইলেও ওরে বিয়ে দিতে পারবে না। কারণ আম্মু আব্বু কেও চায় না ওরে ১৮ বছরের আগে বিয়ে দিতে। বড়জোর ১৫/১৬ তে রাজী করানো যাবে বিয়ের জন্য। কিন্তু এই ৫/৬ বছর ওকে সামলানো আমাদের জন্য কষ্টকর।

আরো অনেক বিষয় আছে যা আমি বুঝায়ে বলতে পারতেছি না। ও যে কয়দিন বেড়াতে আসতো আমার ঘরে অশান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকত। বদনজরের অনেক বিষয় আছে।

আমার আম্মু এবং বোন সবসময়ই যে কারো ভালো কিছু নিয়ে আফসোস করে সবসময়। কেনো উনারাও সেটা পায়নি এই নিয়ে। আর আমার বোনকে কেউ কম গুরুত্ব দিয়ে আমাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া ওর পছন্দ না। বিয়ের পর থেকে এটা নিয়ে ও আমার সামনেই মন খারাপ করতো। আমার স্বামী আমাকে বেশি গুরুত্ব দেয় কেনো তাই।
আমার ভালো কিছু হলে আম্মু সবসময় আফসোস করতো।
আমি ২ বছর ধরে স্বাভাবিক ভাবে খাবার খেতে পারি না। গিলতে সমস্যা।দীর্ঘদিন সরাসরি রুকইয়াহ করার পর এখন কিছুটা ঠিক হইছে। এখনও অনেক খাবার আমি গিলতে পারি না।

আমরা ২ জন আম্মুর বাসায় ২ মাস ছিলাম। তখন আম্মুকে অন্যদের সাথে আমার খাওয়া নিয়ে কথা বলতে শুনতাম। এরপর আমার সামনে সরাসরিই বলতো। আমি বেশি বেশি খাই আরো অনেক কিছু। ঠিক সে সময় থেকে আমার খাওয়া বন্ধ হয়। পানিও আমি গিলতে পারতাম না সেই সময়। ১ মাসে ২০ কেজি ওজন কমে। এখনো ওজন কমতেছেই।

এরপর রুকইয়াহর পর যখন একটু একটু খেতে পারি। তখন আম্মুর বাসায় বেড়াতে গেলে আমার আবার কয়েকদিন গিলতে সমস্যা হয়। আবার আমার বোন বাসায় আসলে ও যেই জিনিসই আমাকে খেতে দেখে সেটা ঠিক ওই দিনের পর থেকে আমি আর খেতে পারি না। এরকমটা আমার সাথে অনেকবার হইছে।

যার কারণে আমার স্বামী মনে করতেছে আমার বোন, আম্মু আসলে আমি আবার অসুস্থ হয়ে যাবো।

এখন আমার আম্মু আর বোনের দায়িত্ব নিতে কি আমার স্বামী বাধ্য??  শরীয়তের নির্দেশ কি এক্ষেত্রে??

আমার আম্মুর তো আর কেউ নেই। আর বোনকে একা রেখেও আম্মু আসবে না আমার বাসায়।

তাহলে আমাদের করণীয় কি??
বোন হিসাবে, বড় মেয়ে হিসাবে আমার দায়িত্ব কি উনাদের প্রতি??

আমি আমার স্বামী ছাড়া কারো সাথে এইসব ব্যাপার শেয়ার করি না। স্বামীর সাথে মা,বাবা, বোনের সমস্যা গুলো বা কোনো আত্নীয়ের আমাদের সাথে করা অন্যায় নিয়ে আলোচনা বা শেয়ার করলে কি গিবত হবে??

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://www.ifatwa.info/6683 নং ফাতওয়ায় বর্ণিত রয়েছে ,
শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে,তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন
فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع 
তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)।(সুরা : নিসা, আয়াত-৩)

দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া। আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।
قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)
 আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক। 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/6683

একাধিক স্ত্রীর মাঝে দুই বিষয়ে সমতা রক্ষা করা অতীব প্রয়োজন। স্ত্রীদের সঙ্গে রাতযাপন ও ভরণ-পোষণ। 

এ দুই অধিকার সব স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমানভাবে স্বামীকে পালন করে যেতে হবে। কোন স্ত্রী সুন্দর বা অসুন্দর, আর কোনটি কুমারী বা বিধবা তা পার্থক্য করা যাবে না। 

কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি মনের ভালোবাসা বেশি হওয়া, আবার অন্য স্ত্রীর প্রতি কম হওয়া তা সমতার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা, এটি মনের বিষয়, আর মনের ওপর কারও কোনো অধিকার নেই। একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে শুধু রাতযাপন ও খরচাপাতি এ দুই বিষয়ে সমতা ধর্তব্য। এটাই হলো একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সমতা রক্ষার ইসলামি শরিয়তের বিধান। 

হাদিসে আছে, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) স্ত্রীদের মধ্যে পালাবণ্টন করতেন এবং ন্যায়বিচার করতেন। আর বলতেন, হে আল্লাহ! আমি আমার শক্তি-সামর্থ্যানুযায়ী পালাবণ্টন করলাম। সুতরাং যাতে শুধু তোমার ক্ষমতা রয়েছে, তাতে আমার শক্তি নেই। কাজেই তাতে তুমি আমাকে ভর্ৎসনা করো না। (তিরমিজি : ১১৭০, আবু দাউদ : ২১৩৬)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
আপনার আম্মু আর বোনের দায়িত্ব আপনার বাবার উপর।
আপনার আম্মু আর বোনের দায়িত্ব নিতে আমার স্বামী বাধ্য নয়।

শরীয়ত এই দায়িত্ব আপনার স্বামীকে দেয়নি।

আপনার স্বামী যদি তাদের দায়িত্ব নেয়,সেক্ষেত্রে তাহা ইহসান আর দয়া হবে।
(এমতাবস্থায় আপনার বোনকে কোনোভাবেই মোবাইল দেয়া যাবেনা,তাকে কওমি মাদ্রাসায় আবাসিক রেখে আসতে পারেন। বাড়িতে কোনোক্রমেই আনবেননা।)

আপনার আম্মু আর বোনের দায়িত্ব আপনার বাবার উপর। তিনি যেহেতু দায়িত্ব নিতে চাচ্ছেননা,সেক্ষেত্রে আপনার আম্মু আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন।

আপনার তো ইনকাম নেই,সুতরাং বোন হিসাবে, বড় মেয়ে হিসাবে উনাদের প্রতি আপনার দায়িত্ব নেই।

হ্যাঁ আপনি শরীয়ত সম্মত পন্থায় আপনি ইনকাম করতে পারলে আপনার মাকে নানার বাসায় রেখে তাদের ভরনপোষণ এর ব্যবস্থা করতে পারবেন।

তবে কাজটি আপনার উপর আবশ্যক নয়।

★স্বামীর সাথে মা,বাবা, বোনের সমস্যা গুলো বা কোনো আত্মীয়ের আপনাদের সাথে করা অন্যায় নিয়ে আলোচনা বা শেয়ার করলে গিবত হবে।

হ্যাঁ যদি স্বামী তাদেরকে সংশোধন করার ক্ষমতা রাখে,সেক্ষেত্রে তাদেরকে সংশোধন করে দেয়ার লক্ষ্যে স্বামীকে এসব বিষয় বলা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...