আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
238 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)

আমার পরিবার তেমন দ্বীনদার না ৷ এজন্য ছেলের দ্বীনি বিষয়টা তেমন প্রাধান্য পায় না ৷  বর্তমানে পরিচিত একজনের মাধ্যমে এক প্রস্তাব আসায়় আমার পরিবার তেমন কোন খোঁজ নেয় নি ৷ পরিচিতজন ও দ্বীনদার না ৷  ছেলের সঙ্গে মাহরামের উপস্থিতিতে কথা হয় ৷ তখন তিনি বলেন পাঁচওয়াক্ত নামায পড়েন,  আয় হালাল, দ্বীনি বিষয়ে জানতে আগ্রহী, পরিপূর্ণভাবে মানতে চান ৷ পরিপূর্ণ পর্দার পরিবেশ দিতে পারবেন ৷ তবে তিনি এখনও দাড়ি রাখেন নি দাড়ি রাখতে চাচ্ছেন ৷ 

প্রস্তাব আসার পর থেকে ইস্তেখারা করেছি প্রথম কয়েকদিন মনে হয়েছে আল্লাহ যা করবে তাই হবে, পরে মনে হয়েছে ছেলে ও ছেলের পরিবার সম্পর্কে খোঁজ নেয়া দরকার , সঠিক তথ্য যাচাই করা দরকার কিন্তু পরিবারের কাউকে বোঝাতে পারি নি  ৷  পরে সামান্য একটু জানতে পারি ৷ 

 ছেলের পরিবারের সদস্যরা সবাই ঠিকমতো নামায পড়়ে় না ৷ নন মাহরামও আছে ৷ তারা চায় পরিবারের সবাই তো এক পরিবার তাদের সামনে ছেলেরবউ স্বাভাবিকভাবে আসবে ৷ বাইরে কাউকে না দেখালে কোন আপত্তি নেই ৷ এতে রাজি নাহলে ছেলের পরিবার রাজি হয় পর্দার বিষয়ে ৷ 

পরে আরও জানতে পারি ছেলে প্রাইভেটে চাকরি করেন,  নির্দিষ্ট স্থানে স্থায়ী না এজন্য ছেলের পরিবারের সঙ্গে থাকতে হবে ৷ এই বিষয়ে ছেলের কাছে জানতে চাইলে বলেন, তিনি বাড়ির বড় ছেলে ও প্রাইভেট চাকরির জন্য তাঁর স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়িতে রাখবেন ৬- ১ বছর বা তার কম বেশি ৷ পরে ছেলে তার সঙ্গে রাখবে ৷

  এই ক্ষেত্রে আমার করণীয় কী? 

পরিবারকে কীভাবে বোঝাতে পারি?

তারা সেখানে বিয়়ে় দিতে চান আপত্তি তোলায়় তাড়াতাড়ি আকদ করিয়ে রাখতে চাচ্ছেন ৷

 

*যদি আমি শর্ত দেই তারা মেনে নেয় কিন্তু পরে না করে এক্ষেত্রে ইসলামের বিধান কী?

1 Answer

0 votes
by (707,840 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/18 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
হাদীস শরীফে এসেছে,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- 
لا طاعة في معصية إنما الطاعة في المعروف
গোনাহের কাজে কারো বশ্যতা স্বীকার করা যাবে না।(শরীয়ত যাদের বিধিনিষেধ মেনে চলার আদেশ দিয়েছে তাদের) আদেশ শুধুমাত্র বৈধ ও নেকীর কাজে মানা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

অন্য এক হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,
لَا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ
আল্লাহর অবাধ্যতায় কারো বিধিনিষেধ কে মান্য করা যাবে না।(মুসনাদে আহমাদ-১০৯৮)

চার মাযহাবের গ্রহণযোগ্য ফেকহী গ্রন্থ 'আল-মা'সুআতুল ফেকহীয়্যায়(২৮/৩২৭)' বর্ণিত রয়েছে,
"طاعة المخلوقين - ممّن تجب طاعتهم – كالوالدين ، والزّوج ، وولاة الأمر : فإنّ وجوب طاعتهم مقيّد بأن لا يكون في معصية ، إذ لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق" انتهى
শরীয়ত কর্তৃক যাদের বিধিনিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।যেমনঃ মাতাপিতা,স্বামী,এবং রাষ্ট্রীয় প্রধান বা তাদের আদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ।তাদের বিধিনিষেধ আমলে নেয়া তখনই ওয়াজিব যখন তা শরীয়ত বিরোধী হবে না।কেননা 'সৃষ্টিকর্তার নাফরমানীতে কোনো সৃষ্টজীবের অনুসরণ করা যায় না'(মর্মে হাদীসে বর্ণিত রয়েছে)

 
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ) 
চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী
তুমি দ্বীনদারীকে অগ্রাধিকার দাও।{যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)}(সহীহ বুখারী-৪৮০২,সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)


সম্মাণিত দ্বীনী বোন!
আপনার বিবরণ থেকে যা বুঝতে পেরেছি যে,এই সম্বন্ধটা দ্বীনদারিত্বর বিষয়ে আশংখা জনক।যদি ছেলে এবং ছেলের মাতাপিতা সবাই একত্রে সরাসরি আপনাকে অথবা আপনার বিশ্বস্ত কাউকে যেমন আপনার মাতাকে অাশ্বস্থ করে যে,আপনাকে দ্বীন পালনে সহায়তা করবে,দ্বীন পালনে কোনো প্রকার ব্যাঘাত ঘটাবে না,তাহলে আপনি সেই সম্বন্ধে রাজী হয়ে যেতে পারেন।এক্ষেত্রে পাত্র পক্ষের কোনো একজনের কথা গ্রহণযোগ্য হবে না।সবাই মিলে আপনাদেরকে বলতে হবে।

যদি পাত্রপক্ষ আশ্বস্থ করতে না পারে,তাহলে আপনার জন্য এরকম শঙ্কাযুক্ত বন্ধনে আবদ্ধ না হওয়াই উচিৎ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...