আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
207 views
in সালাত(Prayer) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১/ সূরা পড়ার সময় নামাজে মাঝের এক আয়াত ভুলে গিয়ে এরপরের আয়াত থেকে পড়া হলে আবার তার পরের আয়াত ভুলে গিয়ে এরপরের আয়াত থেকে পড়া হলে নামাজের কোন সমস্যা হবে কি?

২/ নামাজে সূরা তেলাওয়াতের সময় যদি ভুলবশত  ভুলভাবে লাহান জালি হয়ে যায় যেটার মাধ্যমে অর্থের পরিবর্তন হয়, পরক্ষণেই আবার সেটা সঠিক করে পড়ে নেয় তবে নামাজটি হয়েছে কি?

৩/ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বা নফল স্বলাত বসে আদায় করলে আদায় হবে কি?  কোন কারণ ছাড়া  বসে আদায় করলে গুনাহ্ হবে কি?

৪/ ছোটদের কার্টুন ভিডিও শিক্ষণীয় হলে দেখানো যাবে কি?

৫/ অবিবাহিত  মেয়ে যদি পরিবারের জন্য নিজের ইনকাম থেকে ব্যয় করে, তবে কি তা উত্তম সাদকা হিসেবে গণ্য হবে? যদিও তার ভরণপোষণ তার পরিবারের পুরুষদের উপর!

৬/ মেয়ের নিজের চলার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তাকে ভরণপোষণ দেয়া পিতার উপর ওয়াজিব জেনেছি। এখন মেয়ে যদি পিতার কাছ থেকে ভরণপোষণ না নিয়ে নিজের টাকা দিয়ে চলে, তবে কি এটা ইহসান বলে গণ্য হবে?
৭/ অবিবাহিত মেয়ে যদি তার ছোট ভাইয়ের জন্য মাদ্রাসায় পড়ালেখার ব্যয় বহন করে, তবে সে কী কী ফজিলত পাবে?
বারকাল্লাহু ফীকুম।

1 Answer

0 votes
by (671,480 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)

শরীয়তের বিধান হলো নামাজে তেলাওয়াত করতে করতে যদি মাঝের কোনো আয়াত ভুলে যায়,বা বাদ যায়,তাহলে নামাজ ফাসেদ হওয়ার মতো অর্থ বিকৃত হল নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে।
আর যদি সেরকমটি না হয়,তাহলে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।    
,
বিস্তারিত জানুনঃ 
,
(০২)
নামাজের কেরাতে অর্থ বিকৃত হয়ে যায়, এমন ভুল পড়লে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। চাই তা তিন আয়াত পরিমাণের ভেতর হোক বা পরে হোক- সর্বাবস্থায় একই হুকুম। পক্ষান্তরে সাধারণ ভুল- যার দ্বারা অর্থ একেবারে বিগড়ে যায় না, তাতে নামাজ নষ্ট হবে না। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১১৮, ফাতাওয়া কাজিখান ১/৬৭)
,
লাহনে জলি সম্পর্কে জানুনঃ 
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু সেই ভুল সাথে সাথে শুধরে নিয়েছে,তাই নামাজ হয়ে যাবে।

,
(০৩)
সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ বিনা ওযরে বসে পড়া জায়েয নেই।

فلا تجوز صلاتہا قاعداً ولا راکباً اتفاقاً بلا عذر علی الأصح، لما روی الحسن عن أبي حنیفۃ لو صلی سنۃ الفجر قاعداً بلا عذر لا یجوز۔ (درمختار مع الشامي ۲؍۴۵۴ زکریا)
সারমর্মঃ কেহ যদি ফজরের সুন্নাত বিনা ওযরে বসে আদায় করে,তাহলে তাহা নাজায়েজ।     

یستثنی منہ الفجر فإنَّہا لاتصح قاعداً بلاعذر۔ (حلبی کبیر ۲۷۰، طحطاوي علی مراقي الفلاح / فصل في صلاۃ النفل جالساً ۳۲۷ مصر) 
সারমর্মঃ ফজরের সুন্নাত বিনা ওযরে বসে পড়া জায়েয নেই। 
,   
★নফল নামাজ বিনা ওযরে বসে পড়া জায়েয আছে। 
অবশ্য বিনা ওযরে পড়লে তথা দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার শক্তি থাকা সত্ত্বেও বসে নফল নামাজ পড়লে অর্ধেক ছওয়াব পাবে। 
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/৩৬৭)
,

عن عائشۃ رضي اللّٰہ عنہا قالت: کان رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم یصلي لیلاً طویلاً قائماً ولیلا طویلاً قاعداً، فإذا صلی قائماً رکع قائماً، وإذا صلی قاعداً رکع قاعداً۔ (سنن أبي داؤد، کتاب الصلاۃ / باب في صلاۃ القاعد ۱۸۳ رقم: ۹۵۵ دار الفکر بیروت)
সারমর্মঃ রাসুল সাঃ রাত্রিবেলা অনেক নামাজ দাঁড়িয়ে আদায় করেছেন,অনেক নামাজ বসেও আদায় করেছেন।    

عن عمران بن حصین رضي اللّٰہ عنہ أنہ سأل النبي صلی اللّٰہ علیہ وسلم عن صلاۃ الرجل قاعداً، فقال: ’’صلا تہ قائماً أفضل من صلاتہ قاعداً، وصلاتہ قاعداً علی النصف من صلاتہ قائماً، وصلاتہ نائماً علی النصف من صلاتہ قاعداً۔ (سنن أبي داؤد، کتاب الصلاۃ / باب في صلاۃ القاعد ۱۸۲ رقم: ۹۵۱ دار الفکر بیروت)
সারমর্মঃ বসে নামাজ পড়লে দাড়িয়ে নামাজ পড়া থেকে অর্ধেক ছওয়াব মিলবে। 

ویجوز التطوع قاعداً بغیر عذر۔ (حلبی کبیر ۲۷۰)
বিনা ওযরে নফল নামাজ বসে আদায় করা জায়েজ আছে।     

ویتنفل قاعداً مع قدرتہ علی القیام ابتدائً وبنائً… وقد حکی فیہ إجماع العلماء إلی ما قال، وروي البخاري عن عمران بن حصین مرفوعاً: من صلی قائما فہو أفضل، ومن صلی قاعداً فلہ نصف أجر القائم …، وأما إذا صلاہ مع عجزہ فلا ینقص ثوابہ عن ثوابہ قائما۔ (البحر الرائق ۲؍۶۲، مراقي الفلاح علی الطحطاوي: ۳۲۷)
সারমর্মঃ বিনা ওযরে নফল নামাজ বসে আদায় করা জায়েজ আছে।     
দাড়িয়ে নামাজ পড়ার শক্তি থাকা সত্ত্বেও,,,  

من صلی قائماً فہو أفضل ومن صلی قاعداً فلہ نصف أجر القائم ومن صلیٰ نائماً فلہ نصف أجر القاعد۔ (حلبی کبیر۲۷۰، ہدایۃ / باب النوافل ۱؍۳۰۸ مکتبۃ البشریٰ کراچی)
সারমর্মঃ বসে নামাজ পড়লে দাড়িয়ে নামাজ পড়া থেকে অর্ধেক ছওয়াব মিলবে। 

,
(০৪)
উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ এর কারনে সতর্কতামূলক না দেখানোই উচিত।
,
ভিডিও দেখা নিয়ে বিস্তারিত জানুনঃ 
,
(০৫)
যদি অভিভাবকদের অনুমতি নিয়ে শরয়ী সীমারেখার আওতায় থেকে মেয়ে যদি ইনকাম করে,অতঃপর যদি পরিবারের জন্য নিজের ইনকাম থেকে ব্যয় করে, তবে তা উত্তম সাদকা হিসেবে গণ্য হবে।

হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোনো ব্যক্তি তার পরিবারে যে খরচ করে তা-ও সদকাস্বরূপ, অর্থাৎ এতেও সে সদকার সওয়াব পাবে। ’ (বুখারি : হাদিস ৪০০৬)
,
তবে এটি তার উপর জরুরি নয়।
তার ভরনপোষণ তার পিতার উপর ওয়াজিব। 
,
(০৬)
এটি ইহসান নয়। কারন এটি তাদের উপর ওয়াজিব ছিলো।
,
হ্যাঁ যদি তার পিতা,অভিভাবকগন একেবারেই দরিদ্র হয়,এবং তার পিতা অভিভাবকদের পক্ষে তার স্বাভাবিক ভরনপোষণ অনেক কষ্টকর হওয়ার কারনে তাদের অনুমতি সাপেক্ষে শরয়ী সীমারেখার  আওতায়  থেকে ইনকাম করে নিজের খরচ নিজেই চালায়,তাহলে সেটি বাবার প্রতি ইহসান হবে।
,
(০৭)
উপরে উল্লেখিত শর্ত মেনে যদি ইনকাম করে,আর সেই টাকা যদি তার ছোট ভাইয়ের জন্য দ্বীনি মাদ্রাসায় পড়ালেখার ব্যয় বহন করে,এক্ষেত্রে দুইটি ছওয়াব পাবে।
এক, উত্তম সাদকার ছওয়াব।
দুই,ইশা আতে দ্বীন তথা দ্বীনের প্রচার প্রসারে সহযোগীতার ছওয়াব।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...