আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
269 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ্

১. বিভিন্ন পার্ক কিংবা রেস্টুরেন্টে পুলিশ কিংবা কোনো ব্যক্তিগণ যদি জিজ্ঞেস করে এই মেয়ে আপনার কি হয় ছেলে উত্তরে বলে আমার স্ত্রী। স্ত্রীও বলে উনি আমার স্বামী তাহলে কি বিয়ে হয়ে যাবে?উল্লেখ্য ২-৩ জন সাক্ষীর সামনে।

২.আমার বন্ধু আবাসিক হোটেলে স্বামী স্ত্রীর পরিচয়ে হোটেল রুলস অনুযায়ী পেপার সাইন করে ২ জনের সামনে বলে আমার স্ত্রী এবং দুইজনেই পেপারে সাক্ষর করে তাহলে কি বিয়ে হয়ে যাবে? হোটেলে থাকার জন্য তারা বয়ফ্রেন্ড+ গার্লফ্রেন্ড।

৩.স্বামীর অনুমতি নিয়ে ঢাকা থেকে চাঁদপুর একা কিংবা ছোট বোন(৬ বছর) নিয়ে সফর করতে পারবে কিনা?

৪.স্বামী স্ত্রীর তর্ক বিতর্কে স্বামীর থেকে স্ত্রীর আওয়াজ বেশি হলে এবং কথায় কথায় স্বামীর সাথে তর্ক করলে কি স্ত্রী গুনাহগার হবে?স্ত্রী পারিবারিকগতভাবে হাই টেম্পার অভ্যাস।তাদের পরিবারের সবাই অল্পতে রেগে যায়।সেই সূত্রে সেও অল্পতে রেগে যায়।
৫.স্বামীর অর্থনৈতিক অবস্থা জেনে শুনেই স্ত্রী বিয়ে করেছে। স্ত্রীর অর্থনৈতিক অবস্থা স্বামীর থেকে ভালো কিন্তু স্ত্রী ডিভোর্স ছিলো এবং স্বামীর ব্যক্তিত্ব+ দ্বীনদারিত্ব দেখে স্ত্রী  ছাড় দিয়েছিল । বৈবাহিক জীবন শুরু করার পর স্ত্রী বুঝতে পারে ছাত্র জীবনে থাকা খাওয়া ছাড়া সাজসজ্জা কিংবা শখের খাওয়ার খরচ স্বামী তেমনভাবে দিতে পারে না।এই অবস্থায় স্ত্রীর অনেক প্রয়োজন কিংবা থাকা খাওয়ার বাহিরে চাহিদা পূরণ কর‍তে পারে না।এতে কি স্ত্রী তালাক চাইতে পারবে কিংবা স্বামীর উপর অসন্তুষ্ট থাকতে পারবে???

৬. নতুন বৈবাহিক জীবনে (৬ মাস)স্ত্রীর ছোট বোন(৬ বছর) স্বামী স্ত্রীর সাথে এক বিছানায় ঘুমায় ১ মাস থাকবে একসাথে।স্বামী স্ত্রীকে যখন ইচ্ছা চাহিদামত ছোট বোনের জন্য পাচ্ছে না।আর ঘুমানো কিংবা জাগ্রত অবস্থায় স্বামী স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরলে ছোট বোন সহ্য করতে পারে না।সে মা কে জড়িয়ে ধরে ঘুমানো অভ্যাস তাই এখন বোনকে ধরে ঘুমাতে চায় নাহলে কান্না করে।এইসব কারণে স্বামী মাঝে বিরক্ত হন যদিও ছোট বোনকে অনেক আদর করে।কিন্তু ছোট বোনের আচরণে এবং চাহিদামত ছোট বোনের জন্য স্ত্রীকে কাছে পেতে পারে না বলে স্বামী বিরক্ত এবং রাগ হয়ে যান মনে মনে এতে কি স্বামী গুনাহগার হবে???

৭.মাদ্রাসায় পড়ালেখা উদ্দেশ্যে স্বামীর অনুমতি নিয়ে ঢাকা অনাবাসিকে স্ত্রী ছোট বোন(৬ বছরের)  বাসা নিয়ে থাকতে পারবে?মাদ্রাসার কাছেই বাসা। মাদ্রাসায় একা একা কিংবা ছোট বোনকে নিয়ে যাতায়াত করবে?স্বামীর বাড়ি ঢাকা থেকে দূরে এবং সে ছাত্র এখনোও সংসার জীবন শুরু হয় নাই।বিয়ের আগেই শর্ত ছিলো যে যার মত পড়াশোনা করবে ৩ বছর।

৮. স্বামীর বাবা মা কে নিয়ে এক বাসায় আলাদা রুমে থাকা উত্তম নাকি আলাদা বাসায় থাকা উত্তম?বাসায় এক রুমের কথা আরেক রুমে জোরে বললে শোনা যায়। আস্তে কথা বলতে হয়।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


বিবাহ হওয়ার জন্য ইজাব কবুল হওয়া শর্ত,শুধু বউ বলে ডাকলেই বিবাহ হয়না।
,
বিবাহের ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,

لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এখানে ইজাব কবুল পাওয়া যায়নি।
তাই এতে বিবাহ হবেনা।
যদিও ২-৩ জন সাক্ষীর সামনে হোক,তবুও বিবাহ হবেনা।

(০২)
এক্ষেত্রেও বিবাহ হয়ে যাবেনা।

(০৩)
দূরত্ব ৭৮ কিলোমিটার থেকে কম হলে এভাবে দিনের বেলা সফর করতে পারবে।

দূরত্ব ৭৮ কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি হকে এভাবে সফর করা জায়েজ হবেনা।

(০৪)
অহেতুক তর্ক করলে গুনাহ হবে।
কণ্ঠের আওয়াজ গায়রে মাহরাম পুরুষ শুনলেও স্ত্রীর গুনাহ হবে।

(০৫)
শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে এটি তালাক চাওয়ার গ্রহনযোগ্য কারন নয়।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী তালাক চাইতে পারেনা কিংবা স্বামীর উপর অসন্তুষ্ট থাকতে পারেনা।
কেননা সে জেনে শুনেই বিবাহ বসেছে।

 (০৬)
এতে কোন ভাবেই স্বামী গুনাহগার হবেনা।
এখানে স্বামীর হক নষ্ট করা হচ্ছে।

(০৭)
এক্ষেত্রে এলাকা,স্থান,পরিবেশ নিরাপদ হলে ফিতনার আশংকা না থাকলে এভাবে থাকতে পারবে।

(০৮)
যেহেতু স্বামীর উপর তারা বাবা মার দেখাশোনা ও খেদমতের দায়িত্ব ও হক রয়েছে।
সুতরাং এক্ষেত্রে স্বামীর বাবা মা কে নিয়ে এক বাসায় আলাদা রুমে থাকা উত্তম হবে।

তবে স্বামীর আলাদা বাসা নিয়ে থাকার সক্ষমতা থাকলে,স্ত্রীর অধিকার আছে, সে চাইলে স্বামীকে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকার অনুরোধ করতে পারবে।
এটি স্ত্রীর অধিকার।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...