আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম,

১. আমি বেশ কিছুদিন যাবত কিছু সমস্যায় আছি। আমার মনে হয় সমস্যাটি ওয়াসওয়াসা জনিত। আমি পূর্বে ইসলামের সকল বিধিবিধান নিয়ে সবসময় খুব একটা ভাবতাম না। গত কয়েকমাস যাবত দ্বীন পালন করার চেষ্টা করতেছি। এখন আমার মূল সমস্যাটি হলো বান্দার হক নিয়ে। পূর্বে আমার দ্বারা কিছু মানুষের হক নষ্ট হয়েছে বলে আমার মনে হয়। এখন আমার যেগুলো মনে আছে আমি সেগুলো আদায় করার চেষ্টা করছি ও যেগুলো মনে নাই এবং এখন আদায় করার সামর্থ্য নাই সেগুলো পরবর্তীতে সামর্থ্য হলে আদায় করার দৃঢ় নিয়ত করেছি।

কিন্তু তারপরও এই বিষয়গুলো নিয়ে আমি অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করছি, যা আমার মস্তিকের উপর ও মানসিকতার খুব চাপ সৃষ্টি করছে। আমি নামাজে ও বিভিন্ন কাজে সঠিক ভাবে মননিবেশ করতে পারছি না। বিষয় গুলো ভুলে থাকতে চাইলেও বেশির ভাগ সময় তা কিছুতেই পারছি না। মাঝে মাঝে মনে হয় নিজের সাথে পাগলের মত আচরণ করছি। আর সবসময় কোনো কাজ করতে গেলেই মনে হয় আমি অমুকের হক নষ্ট করছি না তো? হক নষ্ট না করলেও এমনটা মনে হয়।
একটি উদাহরণ দিইঃ  আমি রিকশা থেকে নামলাম, পাশে একটি ভ্যান দাড়িয়ে ছিল, আমি আমার হাতে থাকা একটা জিনিস সেই ভ্যানের উপর কয়েক সেকেন্ডের জন্য রাখলাম এবং রিকশা ভাড়া দিয়ে ভ্যানটির উপর থেকে আমার জিনিসটি নিয়ে বাসায় চলে গেলাম। এক্ষেত্রেও আমার মনে হয় যে আমি ভ্যান চালকের হক নষ্ট করেছি তাকে না বলে জিনিসটি রেখে। অথচ ভ্যানটি এমনিতেই দাড়িয়ে ছিল, আমি শুধু রিকশা চালককে ভাড়া দেয়ার সুবিধার্থে জিনিসটি কিছু সময়ের জন্য ভ্যানটির উপর রাখি। বিষয়টি অন্যের কাছে হাস্যকর মনে হলেও আমি এমন অনেক ধরনের সমস্যা গুলোর মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। অনুগ্রহ করে আমাকে ভালো একটি সমাধান দিন।

২. মনে করুন আমি একজনের থেকে ২১০ টাকা পায়, এখন আমি মনে মনে ভাবলাম যে আমি তার থেকে ২০০ টাকা নেব বাকি ১০ টাকা মাফ করে দিলাম। কিন্তু টাকা নেয়ার সময় আমি ২১০ টাকাই নিলাম। তাহলে কি উক্ত ১০ টাকা নেয়া ঠিক হবে?

৩. আমি একজনকে বলেছি আল্লাহ শিরকের গুনাহ তওবা ছাড়া মাফ করেন না এবং আল্লাহ বান্দার হক মাফ করেন না। এই কথা বলা কি ঠিক হয়েছে? এটা বলার পর আমার এটাও মনে হচ্ছে যে, আল্লাহ তো ইচ্ছা করলেই সব কিছু মাফ করতে পারেন।

৪. নেক সুরতে শয়তানের ধোঁকা বলতে কি বোঝায়?

শায়েখ আমি উক্ত বিষয় গুলো নিয়ে খুবই মানসিক পীড়ার মধ্যে আছি। অনুগ্রহ করে সঠিক সমাধান দিন।

1 Answer

0 votes
by (696,320 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন,
ﻣﻌﻨﺎﻩ ﺃﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺇﻧﻤﺎ ﻳﻮﺳﻮﺱ ﻟﻤﻦ ﺃﻳﺲ ﻣﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻓﻴﻨﻜﺪ ﻋﻠﻴﻪ ﺑﺎﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ؛ ﻟﻌﺠﺰﻩ ﻋﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻭﺃﻣﺎ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ : ﻓﺈﻧﻪ ﻳﺄﺗﻴﻪ ﻣﻦ ﺣﻴﺚ ﺷﺎﺀ ، ﻭﻻ ﻳﻘﺘﺼﺮ ﻓﻲ ﺣﻘﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ، ﺑﻞ ﻳﺘﻼﻋﺐ ﺑﻪ ﻛﻴﻒ ﺃﺭﺍﺩ ، ﻓﻌﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ : ﺳﺒﺐ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ : ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﺃﻭ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ﻋﻼﻣﺔ ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﻭﻫﺬﺍ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺍﺧﺘﻴﺎﺭ ﺍﻟﻘﺎﺿﻲ ﻋﻴﺎﺽ ...
অর্থাৎ শয়তান সে ব্যক্তিকেই প্ররোচনা দেয়,যাকে গোমরাহ করতে সে নিরাশ হয়ে যায়।সে কাউকে গোমরাহ করতে নিরাশ হয়ে গেলে সর্বশেষে সে মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিতে চায়।
আর কাফিরের নিকট শয়তান যেকোনো থেকে যেহেতু আসতে পারে,তাই কাফিরকে প্ররোচনা দেয়ার কোনো প্রয়োজন তার থাকে না।কেননা সে যেকোনো সময় তার ইচ্ছামত কাফিরকে ব্যবহার করতে পারে।সুতরাং হাদীসের অর্থ হলো এই যে,ঈন্তরে ঈমানের দানা থাকার দরুণই শয়তান ঈমানদারদেরকে প্ররোচনা দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে এটাই কাযী ঈয়ায রাহ এর পছন্দনীয় ব্যাখ্যা।
(আল-মিনহাজ্ব-২/১৫৪)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
বান্দার হক বান্দার কর্তৃক মাফ করা ব্যতিত সাধারণত মাফ হবে না। তবে আপনি যে ছোটোখাটো জিনিষকে বান্দার হক ভাবছেন, তা কিন্তু সঠিক নয়। একজন ভ্যান চালকের সামনে যখন আপনি ভ্যানে কিছু রাখলেন,এবং সে যখন আপত্তি তুলছে না, তাহলে তখন বুঝা গেল যে, এতে ভ্যান চালকের মৌন সম্মতি রয়েছে।সুতরাং এক্ষেত্রে তার হক নষ্ট হচ্ছে না।

(২)
কেউ একজন অন্যজনের নিকট ২১০ টাকা পায়, এখন  সে মনে মনে ভাবল যে, আমি তার থেকে ২০০ টাকা নেব বাকি ১০ টাকা মাফ করে দিলাম। কিন্তু টাকা নেয়ার সময় সে ২১০ টাকাই নিল। তাহলে অনুচিৎ কাজ করলো। তার জন্য উক্ত ১০ টাকা নেয়া কখনো জায়েয হবে না।

(৩)
আল্লাহ শিরকের গুনাহ তওবা ছাড়া মাফ করেন না এবং আল্লাহ বান্দার হক মাফ করেন না। এই কথা বলা ঠিক হয়েছে। হ্যা, আল্লাহ তো ইচ্ছা করলে যে কাউকে মাফ করতে পারেন।সেই চিন্তা মনে রাখলেই হবে।

(৪)
নেক সূরতে শয়তানের ধোকা বলতে, আপনি ভাববেন সওয়াবের কাজ করছেন কিন্তু বাস্তবে এটি গোনাহের কাজ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (26 points)
২ নং প্রশ্নের ক্ষেত্রে, 
যার থেকে টাকা পাওয়া যায় তাকে তো জানানো হয়নি যে, তার থেকে উক্ত টাকা তাকে কম নেয়া হবে বা মাফ করে দেয়া হয়েছে। শুধু মনে চিন্তা করা হয়েছে যে উক্ত টাকা নেব না বা মাফ করা হয়েছে। এক্ষেত্রেও কি পরবর্তীতে সে টাকা নেয়া যাবে না?

এবং যার থেকে টাকা পাওয়া যায় তাকে যদি বলা হয় তোমার থেকে অমুক পরিমাণ টাকা নেয়া হবে না। তারপরও সে যদি সেই পরিমাণ টাকা দেয় তাহলে কি গ্রহন করা যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...