আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
112 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (38 points)
closed by
আসসালমু আলাইকুম।

1. আমি জানতে চাই, ফাঁকা ঘরে মানুষ ব্যতীত জ্বীন আর ফেরেশতা কি সবসময় থাকে? মানুষ থাক আর না থাক তাও। এখন আমি একা একা কি করবো, আমার সাথে আমার আল্লাহ আছেন এতে কোনো সমস্যা নেই, রহমতের ফেরেশতা থাকলেও হয়তো সমস্যা নেই, কিন্তু কাপড় পরিবর্তন করা বা এরকম পার্সোনাল বিষয়ে যদি অন্য কোনো সত্তার উপস্থিতি থাকে, এটা কিভাবে মেনে নিবো?

আমার মাঝে মাঝে মনে হয় যে আমি তো একা না, আমার আসে পাশেই তো কত জ্বীন, ফেরেশতা আছে, রাতে এমন বেশি মনে হয় যে আল্লাহ কেনো জ্বীন বানালেন, আর তাহলে তাদের কেনো মানুষের সাথে থাকতে দিলেন, তারা যদি আমাদের ক্ষতি করে বা ভয় দেখায় আমরা তো আগে থেকে বুঝতেও পারবোনা। আমার সচরাচর সরাসরি ভয় পাবার মত ঘটনা ঘটে না, তবে এই আতঙ্কে হ্যালুসিনেশন ঘটে, বেশিরভাগ রাত্রে যে আমি তো একা না, জ্বীন তো সব জায়গায় আছে, সূরা, দুআ কালাম পড়ে থাকলেও, এই চিন্তায় ই কত সময় সারারাত ঘুমাতে পারি না। কিছু সময় খারাপ স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেংগে গেলেও খুব ই আতঙ্ক লাগে না আসে ঘুম, না ঐভাবে জেগে থাকা যায়, এমনিতে আমি এত ভয় পাই না, আর এরকম কোনো অভিজ্ঞতাও নেই, শুধু ওরা আছে, কিছু করতে পারে, এগুলা তো সত্য, এসব ভেবে আমার হ্যালুসিনেশন ঘটে।

2. ইশরাক, (চাশত, সলাতুত দ্বোহা, আওয়াবীনের সালাত), আর যাওয়াল এগুলোর কোনটা এক, আর কোনগুলো আলাদা, নির্দিষ্ট সময়সীমা হাদীসের আলোকে ব্যাখ্যা করুন। আমি ইউটিউব থেকে অনেকের লেকচার দেখলাম, অনেক রকম বর্ণনা দেখলাম, যায় কেউ ই ভুল না, কেউ বলে ইশরাক আর চাশত, কেউ বলে মাগরিবের পরে আওয়াবিন বলে সালাত নেই, দ্বোহা, চাশত আর আওয়াবিন একই, তো কেউ বলে না আওয়াবীন আলাদা।

আর যাওয়াল স্বলাতের সঠিক সময় কোনটি। একটু ক্লিয়ার করে জানান এগুলা, স্বলাত পড়তে পারছি না, না জানার কারণে।
closed
by (38 points)
https://youtu.be/HH3VyPK8ngk

এখানে শাইখ আহমাদুল্লাহ সালাতুত যাওয়াল কে আলাদা নামাজ হিসেবে পড়তে বলেছেন। এখন কোনটি করবো? আপনার ফাতওয়া অনুযায়ী এরকম আলাদা সালাত নেই। আর থাকলেও সময় বুঝে উঠতে পারছি না।

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
selected by
 
Best answer
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ كَثِيْرٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا رَفَعَهُ قَالَ خَمِّرُوْا الْآنِيَةَ وَأَوْكُوْا الأَسْقِيَةَ وَأَجِيْفُوْا الأَبْوَابَ وَاكْفِتُوْا صِبْيَانَكُمْ عِنْدَ الْعِشَاءِ فَإِنَّ لِلْجِنِّ انْتِشَارًا وَخَطْفَةً وَأَطْفِئُوْا الْمَصَابِيْحَ عِنْدَ الرُّقَادِ فَإِنَّ الْفُوَيْسِقَةَ رُبَّمَا اجْتَرَّتْ الْفَتِيْلَةَ فَأَحْرَقَتْ أَهْلَ الْبَيْتِ

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা পাত্রগুলো ঢেকে রেখো, পান করার পাত্রগুলো বন্ধ করে রেখো, ঘরের দরজাগুলো বন্ধ করে রেখো আর সাঁঝের বেলায় তোমাদের বাচ্চাদেরকে ঘরে আটকে রেখো। কারণ এ সময় জ্বিনেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং কোন কিছুকে দ্রুত পাকড়াও করে। আর নিদ্রাকালে বাতিগুলো নিভিয়ে দেবে। কেননা অনেক সময় ছোট ছোট ক্ষতিকারক ইঁদুর প্রজ্জ্বলিত সলতেযুক্ত বাতি টেনে নিয়ে যায় এবং গৃহবাসীকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়।’ 

(বুখারী শরীফ ৩৩১৬.৩২৮০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩০৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩০৭৯)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উপরোক্ত হাদীসে বলা হয়েছে যে "সাঁঝের বেলায় তোমাদের বাচ্চাদেরকে ঘরে আটকে রেখো। কারণ এ সময় জ্বিনেরা ছড়িয়ে পড়ে"
তার মানে ফাঁকা ঘরে সব সময় জীন থাকবেই,বিষয়টি এমন নহে।

তবে মানুষের সব সময় ফেরেশতা থাকে।
তবে দুটি অবস্থা ব্যাতিত।

হাদিস শরিফে এসেছে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আদম সন্তানের আমল লিপিবদ্ধ করার জন্য দু’জন ফেরেশতা নির্ধারিত থাকেন, যারা মানুষের ডানে ও বামে অবস্থান করেন। ডান দিকের ফেরেশতা সৎ আমল ও বাম দিকের ফেরেশতা গোনাহ লিপিবদ্ধ করে থাকেন। ফেরেশতাদ্বয় সর্বাবস্থায় মানুষের পাশে থাকেন, কেবল প্রস্রাব-পায়খানা, স্ত্রী সহবাস ও গোসলের সময় তারা দূরে সরে থাকেন।’  (আবু দাউদ, নাসাঈ,৪৪৭)

★সুতরাং এখান থেকে বুঝা যায় যে কাপড় পরিবর্তন করা বা এরকম পার্সোনাল বিষয়ে ফেরেশতার উপস্থিতি থাকেনা।

(০২)
ইশরাক নামাজ আলাদা।
এটি সূর্য উদয়ের পর নিষিদ্ধ ওয়াক্ত চলে গেলে পড়তে হয়।

ইশরাক নামাজের হাদীসঃ
হাদিস শরিফে এসেছে   

হযরত আনাস রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أنس، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من صلى الغداة في جماعة ثم قعد يذكر الله حتى تطلع الشمس، ثم صلى ركعتين كانت له كأجر حجة وعمرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: تامة تامة تامة.(هذا حديث حسن غريب)

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি জামাতের সাথে ফজরের নামায পড়বে,অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর যিকিরে লিপ্ত থাকবে,তারপর দু'রাকাত নামায পড়বে,তাহলে সে একটি হজ্ব ও একটি উমরার সওয়াব পাবে।এরপর তিনি তাকিদ করে বলেন,হ্যা পূর্ণ হজ্ব ও উমরার সওয়াব সে পাবে।(সুনানু তিরমিযি-৫৮৬)

★সালাতুদ-দোহা/ চাশতের নামায একই।
হযরত আনাস ইবনে মালিক রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أنس بن مالك، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من صلى الضحى ثنتي عشرة ركعة بنى الله له قصرا من ذهب في الجنة.
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি চাশতের ১২রা'কাত নামায পড়বে,আল্লাহ তা'আলা তার জন্য জান্নাতে স্বর্ণের একটি প্রসাদ নির্মাণ করে দেবেন।(সুনানু তিরমিযি-৪৭৩)

এ সংক্রান্ত আরো জানুনঃ 

★আওয়াবিন নামাজ মাগরিবের পর পড়তে হয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃঃ
   
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، - يَعْنِي مُحَمَّدَ بْنَ الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيَّ حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ أَبِي خَثْعَمٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ سِتَّ رَكَعَاتٍ لَمْ يَتَكَلَّمْ فِيمَا بَيْنَهُنَّ بِسُوءٍ عُدِلْنَ لَهُ بِعِبَادَةِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ سَنَةً " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ عِشْرِينَ رَكْعَةً بَنَى اللَّهُ لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ "

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাআত নামায আদায় করলে এবং তার মাঝখানে কোন অশালীন কথা না বললে তাকে এর বিনিময়ে বার বছরের ইবাদাতের সমান সাওয়াব দেয়া হবে।
{ইবনে মাজাহ (১১৬৭)}

এ নামাজ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

★যাওয়াল এর নামাজ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...