ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তালাকের শর্ত পাওয়া যায়নি।
তাই তালাক পতিত হবেনা।
আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন।
,
(০২)
"আমাদের মাঝে অনেক দূরত্ব চলে আসছে" এটি বলার দ্বারা তালাক হবেনা।
(০৩)
না,এ কথার দ্বারাও তালাক হবেনা।
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ يَعْنِي ابْنَ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حَبِيبٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنِ ابْنِ مَاهَكَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ثَلَاثٌ جَدُّهُنَّ جَدٌّ، وَهَزْلُهُنَّ جَدٌّ: النِّكَاحُ، وَالطَّلَاقُ، وَالرَّجْعَةُ
আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি কাজ এমন যা বাস্তবে বা ঠাট্টাচ্ছলে করলেও তা বাস্তবিকই ধর্তব্য। তা হলোঃ বিবাহ, তালাক ও স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনা।
(হাসান : আবূ দাঊদ ২১৯৪, তিরমিযী ১১৮৪, ইবনু মাজাহ ২০৩৯, ইরওয়া ১৮২৬, সহীহ আল জামি‘ ৩০২৭,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩২৮৪।)
‘আরবী جِدٌّ-এর অর্থ ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, আগ্রহ, একাগ্রতা ইত্যাদি।
মিরকাতুল মাফাতীহ গ্রন্থাকার বলেন, «وَالْجَدُّ مَا يُرَادُ بِه مَا وُضِعَ لَه»
শব্দটি যে অর্থের জন্য গঠন করা হয়েছে সেই অর্থ গ্রহণ করা বা উদ্দেশ্য হওয়া।
আর «المهزل» শব্দটির আভিধানিক অর্থ ঠাট্টা, কৌতুক, রসিকতা ইত্যাদি।
পরিভাষায় কোনো শব্দকে যে উদ্দেশে গঠন করা হয়েছে সে অর্থ ছাড়া ভিন্ন কোনো অর্থ গ্রহণ করা, যদিও ঐ অর্থের সাথে গঠিত অর্থের কোনো সম্পর্ক ও সাদৃশ্য নেই।
৩টি বিষয় আগ্রহ বা একান্তভাবে বললে কিংবা কৌতুক রসিকতার সাথে বললেও তা কার্যকর হবে। (এক) তালাক (দুই) নিকাহ বা বিবাহ (তিন) রজ্‘আহ্ বা স্ত্রীকে প্রত্যাহার করে নেয়া। অর্থাৎ কেউ যদি সরীহ বা স্পষ্ট শব্দে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে বলে আমি খেলাচ্ছলে বা রসিকতা করে তালাক দিয়েছি তার ঠাট্টা রসিকতা ধর্তব্য হবে না বরং তার তালাকই কার্যকর হবে।
কাযী ‘ইয়ায (রহঃ) বলেনঃ আহলে ‘ইলম বা বিদ্বানগণ একমত যে, ঠাট্টাচ্ছলে তালাক প্রদান করলে তা কার্যকর হবে। প্রাপ্তবয়স্ক জ্ঞানবান ব্যক্তি যখন স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন শব্দে তালাক প্রদান করবে তখন তার এ কথার কোনো মূল্য বা ভিত্তি হবে না যে, আমি খেলাচ্ছলে বা ঠাট্টাচ্ছলে তালাক দিয়েছিলাম। কেননা ঠাট্টাচ্ছলের তালাক অকার্যকর হলে ইসলামের অনেক বিধানই অকার্যকর হয়ে যাবে। ইমাম তিরমিযী (রহঃ) হাদীসটিকে হাসান ও গরীব বলেছেন। ‘আল্লামা মুনযিরী বলেনঃ হাদীসটি সহীহের শর্তে পৌঁছেনি, অর্থাৎ হাদীসটি য‘ঈফ। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
সুতরাং তালাক নিয়ে ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত হয়ে স্বামীকে কোনো প্রশ্ন করবেননা।
এতে সে অনিচ্ছায় তালাকের কথা বললে তালাক হয়ে যাবে।
তাই সতর্কতা অবলম্বন কাম্য।
অযথা তালাকের ওয়াওয়াসা অন্তরে আসতেই দিবেননা।