بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
প্রতিদিন আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকি। যার মধ্যে কিছু রাকাত আদায় করি
ফরজ হিসাবে। আর কিছু সুন্নত বা নফল হিসাবে।কিন্তু কোন ওয়াক্তের নামাজ কতো রাকাত তা
নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে কেবল ফরজ নামাজের রাকাতগুলোর সংখ্যাটা হিসাবে আনা যেতে পারে।এশার
নামাজের আগে চার রাকাত এবং পরে দুই রাকাত নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা হিসাবে আদায় করা
হয়।এই দিক বিবেচনায় রেখে বলা যেতে পারে এশার নামাজ দশ রাকাত। ফরজ চার রাকাত এবং সুন্নত
ছয় রাকাত।
عن عائشة أنہ -علیہ الصلاة والسلام- کان یصلي قبل العشاء أربعا ثم یصلي
بعدہا أربعًا ثم یضطجع (۱/۶۶ الاختیار
لتعلیل المختار، ط: بیروت)
এই চার রাকাত আদায় করার পর দুই রাকাত দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়া যাবে। যার নির্দিষ্ট
কোনো সংখ্যা নেই।এভাবে বিতির নামাজকেও এশার নামাজের সাথে পড়া হয়। যদিও বিতির নামাজ
এশার নামাজের অংশ নয় তবুও এশার নামাজের শেষে বিতির পড়ে নেওয়া হয়।তাহলে এশার নামাজ সুন্নতে
মুয়াক্কাদাসহ দশ রাকাত। সুন্নতে গায়র মুয়াক্কাদাসহ চৌদ্দ রাকাত। এভাবে বিতিরসহ সতের
রাকাত।
عن عائشہ رضي اللہ عنہا قالت: ما صلی رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم العشاء
قط فدخل علي إلا صلی أربع رکعات أو ست رکعات رواہ أبو داوٴد (۱/۵۰۲) وسکت عنہ، وفي ”النیل“ (۲/۲۶۲)
সুন্নতে মুআক্কাদা বলা হয়, যে আমলকে রাসূল সাঃ ইবাদত হিসেবে পাবন্দীর সাথে করেছেন। কখনো ওজর ছাড়া ছেড়ে
দিয়েছেন বা নিজেতো ছাড়েননি কিন্তু যে ছেড়ে দিয়েছে তাকে ভর্ৎসনা করেননি। এরকম আমলকে
সুন্নতে মুআক্কাদা বলা হয়। {আততাআরিফাতুল ফিক্বহিয়্যাহ-৩২৮,
আলমুজিজ ফি উসুলিল ফিক্বহ-৪৩৯-৪০}
সুন্নতে মুআক্কাদা ওয়াজিবের মতই। অর্থাৎ ওয়াজিবের ব্যাপারে যেমন জবাবদিহী করতে
হবে, তেমনি সুন্নতে
মুআক্কাদার ক্ষেত্রে জবাবদিহী করতে হবে। তবে ওয়াজিব তরককারীর জন্য সুনিশ্চিত শাস্তি
পেতে হবে, আর সুন্নতে মুআক্কাদা ছেড়ে দিলে কখনো মাফ পেয়েও যেতে
পারে। তবে শাস্তিও পেতে পারে।
وحكمها كالواجب—- إلا أن تارك الواجب يعاقب وتاركها لا يعاقب- (التعريفات
للجرجانى-138
ফরজ নামাযের আগে পরের সুন্নতে মুআক্কাদার অত্যধিক গুরুত্ব দেয়া উচিত। এ কারণেই
ফুক্বাহায়ে কেরাম লিখেন যে, যদি কেউ সুন্নতকে হক মনে না করে এটাকে ছেড়ে দেয়, তাহলে
এ কর্ম তাকে কুফরী পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে।
رجل ترك سنن الصلاة ان لم ير السنن حقا فقد كفر، لأنه تركها استخفافا (رد
المحتار-2/492، بدائع الصنائع- 1/644
তবে কেউ যদি সুন্নতকে সহীহতো মনে করে, কিন্তু অলসতা করে ছেড়ে দেয়। তাহলে সে গোনাহগার হবে।
وان رآها حقا فالصحيح أنه يأثم، لأنه جاء الوعيد بالترك، كذا فى محيط
السرخسى، (الفتاوى الهندية- 1/112
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
এশার ফরজ নামাজের পূর্বে চার রাকাত সুন্নাতে যায়েদা আছে ,যা
পড়লে সওয়াব না পড়লে গুনাহ নেই ।তবে পড়াই উত্তম। অতপর চার রাকাত ফরজ ও এর পরে দুই রাকাত
সুন্নাতে মুআক্কাদা । অতপর তিন রাকাত বিতির নামাজ পড়বে। তবে সম্ভব হলে শেষ রাতে তাহাজ্জুদের
পরে বিতির পড়া উত্তম। কেউ চাইলে নফল হিসেবে বিতিরের র্পূর্বে বা পরে সাধ্যানুযায়ী নফল
নামাজ পড়তে পারে। যদি কোন ব্যক্তি কোন কারণে দুএক দিন সুন্নাতে মুআক্কাদা ( যেমন এশার
ফরজের পরবর্তী দুই রাকাত) না পড়তে পারে তাহলে গুনাহ হবে না । তবে ইচ্ছাকৃতভাবে সুন্নাতে
মুআক্কাদা ছেড়ে দেওয়ায় অভ্যস্থ হয়ে গেলে গুনাহগার হবে এবং এ ব্যাপারে হাদীসে কঠিন হুশিয়ারী
এসেছে।