আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
393 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১) স্বামী  যদি যিহার করে ফেলে,তাহলে কি স্বামী - স্ত্রীর মধ্যে  তালাক হয়ে যাবে?

( বিভিন্ন সময় কথাগুলা  এমন ছিলঃ
*তোমার এই রান্নাটা পুরা মায়ের মতো হয়।
** তুমি তো দেখি মায়ের মতই শাসন করো।
*** আমার মাও এমন করতো শুক্রবার  দিন।

***তোমার চুল আমার মায়ের মতোই  লম্বা

*তোমার হাতগুলো আমার বোনের মতো

*মামীর মতোই মোটা তুমি

*চাচীর মতো স্বভাব  তোমার

*স্বামীর এক বন্ধুকে বললো,আমার  স্ত্রী, আমার মায়ের মতই পর্দা করে)

২)স্বামীর ভিতর দ্বীনের জ্ঞান না থাকায়,যিহার করার পর তারা সংসার ও করে ফেলছে,এখন কি হবে????

৩) স্বামী যদি দ্বীনের ব্যাপারে উদাসীন  হয় এবং যিহারের অপরাধ  বুঝতে  না চায়,এবং এ ব্যাপারটা আমলে না নেয়,সেক্ষেত্রে  স্ত্রী  যদি স্বামীর পক্ষ হতে কাফফারা  আদায় করে এবং আল্লাহর কাছে মাফ চায় তাহলে কি হবে না???

কাফফারা  আদায়  করতে কিছুদিন বিলম্ব  হওয়ার  কারণে  তালাক হয়ে যাবে নাতো???

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم  


(০১)
শরীয়তের পরিভাষায় যিহার’বলা হয় নিজের স্ত্রীর কোনো অঙ্গ কে ‘মা’ অথবা ‘স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন কোন মহিলার এমন কোনো অঙ্গ যেটা দেখা হারাম,এমন অঙ্গের সমতুল্য বলে আখ্যায়িত করে  (যেমনঃপৃষ্ঠদেশের সমতুল্যবলে আখ্যায়িত করে) তাহাকে আরবীতে ‘যিহার’ বলা হয়।
এতে তার নিয়ত যাই থাকুক না কেনো,
যিহার হয়ে যাবে।
উদাহরণঃ স্বামী স্ত্রীকে বলবে, তুমি আমার নিকট আমার মায়ের পিঠের সমতুল্য। আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম তুমিও তেমনি আমার জন্য হারাম। তোমার শরীরের এক চতুর্থ অংশ আমার জন্য আমার ধাত্রীমায়ের মত হারাম ইত্যাদি। 

আর যদি স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন মহিলার কোনো অঙ্গের সাথে তুলনা না করে এই ভাবে বলে যে তুমি আমার তার (মা বা অন্য কেউ) মতো,তাহলে তার নিয়ত দেখতে হবে।
যদি সে  মায়ের মত বলতে মায়ের মত গুণবতী, যত্নশীল বা মায়ের মত ভালবাসে  উদ্দেশ্য নেয়,তাহলে কোনো কিছুই হবেনা।
এক্ষেত্রে যিহার তখনই হবে যখন নিয়ত থাকবে যে মা-বোন যে দিক থেকে হারাম সে দিক থেকে স্ত্রীকে হারাম বানালে।
(নাজমুল ফাতওয়া ৬/৩১৭)
,

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহার হবেনা।
কেননা বেশির ভাগ ছুরতেই কোনো অঙ্গের সাথে তুলনা করা হয়নি।

তিনটি ছুরতে অঙ্গের সাথে দেখা করা হয়েছেঃ 
*তোমার চুল আমার মায়ের মতোই  লম্বা
এখানে চুলের সাথে তুলনা করা হয়েছে,মায়ের চুল এটি ছেলের জন্য সতরের অন্তর্ভুক্ত নয়,তাই মায়ের চুল দেখা যেহেতু হারাম নয়,তাই এ ছুরতে যেহার হবেনা।  

★তোমার হাতগুলো আমার বোনের মতো।
বোনের হাত দেখা ভাইয়ের জন্য জায়েজ।
তাই এক্ষেত্রেও যেহার হবেনা।

★মামীর মতোই মোটা তুমি। 
মামি তো মাহরাম নয়।
তিনি নন মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। 
,
আজকেই যদি মামা মামিকে তালাক দেয়,তাহলে ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার পর সে তার মামিকে বিবাহ করতে পারে।
তাই এক্ষত্রেও যেহার হবেনা।  

(০২)
যদি যেহার হয়ে যায় তাহলে এতোদিনের ঘর সংসারের জন্য মহান আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে।
,
(০৩)
হ্যাঁ আদায় হয়ে যাবে। 
তবে স্বামীকে জানিয়েই এই কাফাফারা আদায় করবে।
,

যিহার করলে কাফফারা আদায় ব্যতীত স্বামীর জন্য স্ত্রীকে স্পর্শ করা বা তার সঙ্গে একত্রে সংসার করা হারাম।
তাই কাফফারা  আদায়  করতে কিছুদিন বিলম্ব  হওয়ার  কারণে গুনাহ হবে।

ইসলামী বিধানে ‘যিহার’ দ্বারা তালাক হয় না, কেবল কাফ্ফারা ফরয হয়। কাফ্ফারা পরিশোধ না করা পর্যন্ত স্ত্রী সাময়িকভাবে স্বামীর জন্য নিষিদ্ধ থাকে। কাফফারা পরিশোধের পর স্বামীর জন্য স্ত্রীর সাথে যথাযথভাবে ঘর-সংসার করা হালাল হয়ে যায়।

যিহার করলে কাফ্ফারা আদায় করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَالَّذِيْنَ يُظٰهِرُوْنَ مِن نِّسَائِهِمْ ثُمَّ يَعُوْدُوْنَ لِمَا قَالُوْا فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مِّنْ قَبْلِ أَن يَّتَمَاسَّا ذٰلِكُمْ تُوْعَظُوْنَ بِهِ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ"(سورۃ المجادلۃ:۲،۳،۴)

“যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে, তারপর তারা তাদের উক্তি ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একজন দাস মুক্তির বিধান দেয়া হলো। এটা তোমাদের জন্য নির্দেশ। আর তোমরা যা কিছুই করনা কেন,
সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সবই জানেন। এ ছাড়া যে ব্যক্তি গোলাম অর্থাৎ দাস আজাদ করার ক্ষমতা রাখে না তারজন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটানা ২মাস রোযা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি এটারও সামর্থ্য রাখে না,
তাহ’লে তাকে ৬০জন মিসকিন অর্থাৎ গরীব মানুষকে খানা খাওয়াতে হবে। এই বিধান এ জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে তোমরা ঈমান রাখ।
এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (আল- মুজাদালাহ,৩-৪)।

বিস্তারিত জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...