আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
341 views
in পবিত্রতা (Purity) by (62 points)
১. এক বোনের পিরিয়ড হয়েছে কিনা সে বুঝতে পারছে না। তার পিরিয়ডের ডেইট ছিল ৮ এপ্রিল৷
কিন্তু ৩/৪ দিন ধরে সাদাস্রাবের মতো হালকা বাদামীরঙ্গা স্রাব ডিসচার্জ হচ্ছে। এর মধ্যে  একদিন ঠিক হয়ে যাওয়ায় সে রোজা রাখে, স্বলাত আদায় করে৷ কিন্তু পরে দেখে আবারো সেইম বাদামীরঙ্গা স্রাব ডিসচার্জ হচ্ছে। এখন কি এটা হায়েজ ধরে নেবে? নাকি ইস্তিহাযার মতো সালাত সিয়াম কন্টিনিউ করবে?
২. আরেক বোনের, পিরিয়ডের ১১-১২তম দিন থেকে নিয়ে ২২-২৪তম দিন পর্যন্ত প্রচুর হোয়াইট ডিসচার্জ হয়। সে প্রতি ওয়াক্তের স্বলাত আদায় করার আগে নতুনভাবে পবিত্র হয়ে ওযু করে স্বলাত আদায় করে৷ কিন্তু কয়েক রাকাত স্বলাত আদায় করার পর আবার সাদাস্রাব ডিসচার্জ হতে থাকে। এখন সে কি করবে? প্রতিবার নামাজান্তে এভাবে বার বার ক্লিন হয়ে ওযু করে স্বলাত আদায় করবে? নাকি তার ক্ষেত্রে মাযুরের মাসয়ালা হবে? ডিটেইলসে জানতে চাই।

1 Answer

0 votes
by (711,000 points)
ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
১০ দিনের অতিরিক্ত মাসিক হলে,এই ১০ দিনের অতিরিক্ত রক্তপাত-কে ইস্তেহাযা বলা হয়ে থাকে।ইস্তেহাযার হুকুম হল,নামায রোযা করতে হবে।প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য এক অজুই যথেষ্ট হবে।

হায়েযের সর্বনিম্ন মেয়াদ হল,তিন দিন।
এখন যেহেতু আপনার আট দিনের মাথায় রক্তপাত বন্ধ হয়ে গিয়েছে।তাই আপনি পবিত্র হয়ে গিয়েছেন।দশদিনের ভিতর আবারও চলে আসতে পারে,সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।


তথা মাঝে বন্ধ হওয়ার পর আবার চালু হলে,সেই রক্তকে হায়েযের রক্ত হিসেবে গণ্য করা হবে।যেমন বর্ণিত রয়েছে,

اذا عاودها الدم في العشرة بطل الحكم بطهارتها مبتدأة كانت او معتادة و كأنها لم تطهر اصلا
হায়েয বন্ধ হওয়ার পর দশ দিনের ভিতর আবার যদি হায়েয চলে আসে,তাহলে পূর্বের পবিত্রতার বিধান খতম হয়ে যাবে।চায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন ঐ মহিলা প্রথমবার হোক বা এ ব্যাপারে অভ্যস্ত থাকুক।যেমন ঐ মহিলা পূর্বে পবিত্রই হয়নি।
(ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়া-১/৪৮৫, যাকারিয়া)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
فَإِنْ لَمْ يُجَاوِزْ الْعَشَرَةَ فَالطُّهْرُ وَالدَّمُ كِلَاهُمَا حَيْضٌ سَوَاءٌ كَانَتْ مُبْتَدَأَةً أَوْ مُعْتَادَةً
মাঝেমধ্যে হায়েয হওয়া আবার মাঝেমধ্যে বন্ধ হওয়া, দশ দিনের ভিতর সবকিছুই হায়েয হিসেবে গণ্য হবে।চায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন ঐ মহিলা প্রথমবার হোক বা এ ব্যাপারে অভ্যস্ত থাকুক।
(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭,কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/১০৮,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৩/১৭২)

কারো যদি নিয়ম থাকে যে, মাসে ৭ দিন হায়েয আসা।এবং যেকোনো কারণে পরবর্তীতে সেই নিয়ম বদলে ৩ দিন হয়ে যায,তাহলে হায়েয তিন বলেই গণ্য হবে।
এই তিন দিন অতিবাহিত হয়ে যে নামাযের ওয়াক্তে রক্ত বন্ধ হবে, সে নামাযের আখের ওয়াক্তে গোসল করে উক্ত নামায পড়বে।(আহসানুল ফাতাওয়া;২/৬৮)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
(১)
আগের হায়েয হওয়ার পর যদি ১৫ দিন পবিত্র থাকে, এবং এরপর এই রক্তস্রাব শুরু হয়, তাহলে ১০ দিন পর্যন্ত হায়েয হিসেবে গণ্য হবে। এর পর হলে ইস্তেহাযা। 

(২)
https://www.ifatwa.info/50নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,
লিকুরিয়া রোগ যা মহিলাদের জরায়ুতে হয়।
যার অর্থ হল জরায়ু থেকে সাদাস্রাব নির্গত হওয়া।
সাদাস্রাব নাপাক।যা নির্গত হলে অজু চলে যায়।কাপড়ের যে অংশে লাগবে সেটুকু ধৌত করতে হবে।তা নাজাসতে গলিজা।এক দিরহামের বেশী হলে নামায হবে না।

এই সাদাস্রাব নির্গত হওয়া দুই প্রকার।
ক/
সাদাস্রাব মাঝেমধ্যে নির্গত হয়।অর্থাৎ হঠাৎ জরায়ুতে চলে আসে।
এমতাবস্থায় যদি হঠাৎ নামাযের মধ্যে বা নামাযের পূর্বে নির্গত হয়, তখন কাপড় পাল্টিয়ে লজ্জাস্থান ধৌত করা পূর্বক নতুন করে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে।তারপর পূনরায় নামায পড়তে হবে।

খ/
যদি কোনো এক নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত ধারাবাহিক সাদাস্রাব নির্গত হতে থাকে।যেমন মাগরিবের নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত তথা ১ঘন্টা৩০মিনিট ধারাবাহিক সাদাস্রাব নির্গত হতে থাকে। তাহলে এমতাবস্থায় উনাকে মা'যুর গণ্য করে মা'যুরের হুকুম উনার উপর আরোপ করা হবে।

মা'যুরের হুকুম হল,
মা'যুর ব্যক্তি এক ওয়াক্তের জন্য এক অজু করবেন।
তারপর উক্ত অজু দ্বারা উক্ত ওয়াক্তের ভিতর যতসম্ভব উনি ফরয নফল ইত্যাদি ইবাদত করতে পারবেন।যখন ওয়াক্ত চলে যাবে তখন অজুও শেষ হয়ে যাবে।পূনরায় ভিন্ন ওয়াক্তের জন্য ভিন্ন অজু করতে হবে।ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-৫/২২৩/২২৪


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 232 views
...