আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
23 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শাইখ,

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম 


(১) হুজুর আমি ও আমার পরিবারের উপর আমার এক সম্পর্কের মামা জ্বিন দ্বারা কালোজাদু করেছে। আমার পরিবারের এক সদস্যের শরীরে জিন ভর নিয়ে ওই ব্যক্তির নাম নিয়ে বলে যে তার হুকুমেই তারা এই কালোজাদু করেছে। এখন উক্ত ব্যক্তিকে এই বিষয়ে বলা হলে সে প্রমাণ চায় এবং বিষয়টি অস্বীকার করে। কিন্তু আমরা জানি সে বড় মাপের একজন কবিরাজ। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করেও সমাধান হচ্ছে না। কালোজাদুর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের জটিল সমস্যা তৈরি করছে। লেখাপড়ায় সমস্যা তৈরি করছে। এখন উক্ত ব্যক্তিকে কীভাবে এই কাজ হতে বিরত রাখা যায় পরামর্শ দিবেন।

(২) সে আমার পিছনে একটি নারী জ্বিনকে লাগিয়ে দিয়েছে। বিয়ের কথা উঠলেই বিভিন্ন অশান্তি তৈরি হয়। অত্যাচার বেড়ে যায়। ওই জ্বিন শরীরে ভর দিয়ে বলেছে বিয়ে করতে দিবে না এমন। কিছুদিন ধরে লক্ষ করছি হুজুর আমার মুখ দিয়ে জোর করে শর্তযুক্ত তালাক বলানোর চেষ্টা চলছে যাতে আমি ভবিষ্যতে বিয়ের ক্ষেত্রে ঝামেলায় পড়ি। এমতাবস্থায় করণীয় কী?


আশা করি ভালো একটি সমাধান পাবো শাইখ।

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (83,340 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/52701/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

শরীয়তের বিধান হলো জাদু টোনা করা হারাম, এমনকি এর মধ্যে কিছু ছুরত রয়েছে,যেটি মানুষকে কুফর পর্যন্ত পৌছিয়ে দেয়। ইসলামী রাষ্ট্রে প্রমান সাক্ষী সহকারে কাহারো এমনটি করার প্রমান হয়,তাহলে জাদুগরের শাস্তি মৃত্যুদন্ড। (কিতাবুন নাওয়াজেল ১৬/২৭১)

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

وَ اتَّبَعُوۡا مَا تَتۡلُوا الشَّیٰطِیۡنُ عَلٰی مُلۡکِ سُلَیۡمٰنَ ۚ وَ مَا کَفَرَ سُلَیۡمٰنُ وَ لٰکِنَّ الشَّیٰطِیۡنَ کَفَرُوۡا یُعَلِّمُوۡنَ النَّاسَ السِّحۡرَ ٭

আর সুলাইমানের রাজত্বে শয়তানরা যা আবৃত্তি করত তারা তা অনুসরণ করেছে। আর সুলাইমান কুফরী করেননি, বরং শয়তানরাই কুফরী করেছিল। তারা মানুষকে শিক্ষা দিত জাদু। (সূরা বাকারা, আয়াত নং-১০২)

,

قال أبوحنیفۃ: الساحر إذا أقر لسحرہ أو ثبت بالبینۃ یقتل ولا یستتاب منہ۔ (شامي ۴؍۲۴۰ کراچی، ۶؍۳۸۲ زکریا)

সারমর্মঃ ইমাম আবু হানিফা রহঃ বলেন, কেহ যদি তার জাদু করার কথা স্বীকার করে অথবা দলিল দ্বারা প্রমানীত হয়, তাকে হত্যা করা হবে।

তওবা চাওয়া হবেনা। 

বিস্তারিত জানুনঃ  

https://ifatwa.info/28469/ 

,

যাদুকরের কাছ থেকে যদি কুফরি কালাম করায়, এবং কুফরি কালাম করতে যাদুকরকে নির্দেশ দেয়, তাহলে সে কাফির হয়ে যাবে। কিন্ত যদি সে কিছু না বলে, বরং যাদুকর এমনিতেই কুফরি কালাম দ্বারা কিছু করে দেয়, তাহলে এজন্য ঐ ব্যক্তি কাফির হবেনা। হ্যাঁ, উদ্দেশ্য খারাপ হলে সে অবশ্যই গোনাহগার হবে। (এক্ষেত্রে শুধু জাদুকর কাফের হবে।) 

সুতরাং কুফরি কালাম ছাড়া জাদু করা হলে এহেন জাদু করা বা করানো হারাম। এতে কেউ কাফের হবেনা। তবে কুফরি কালাম দ্বারা জাদু করলে জাদুকর কাফের হবে। কুফরি কালাম করতে যাদুকরকে নির্দেশ করলে নির্দেশ দাতাও কাফের হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

https://ifatwa.info/26169/  

.

https://ifatwa.info/59703/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

(১) সর্বপ্রথম পরামর্শ দিবো, ভালো কোনো বিশুদ্ধ আকিদার মুদাব্বিরের শরণাপন্ন হওয়ার। মুদাব্বির মানে যিনি কুরআন হাদীস থেকে সেহেরের চিকিৎসা করে থাকেন। যাকে রুকইয়ায়ে শরঈয়্যাহ বলা হয়।

,

তাছাড়া আপনাকে কিছু রুকইয়ার পরমার্শ দিচ্ছি

(১) সকল প্রকার ফরয ওয়াজিব ইবাদত যত্নসহকারে পালন করা এবং সকল প্রকার হারাম ও নাজায়ে কাজ হতে বেঁচে থাকে।

(২) অধিক পরিমাণ কুরআন তেলাওয়াত করা।

(৩) দু'আ, জায়েয তাবীয ও যিকিরের মাধ্যমে নিজেকে হেফাজতের চেষ্টা করা।

,

নিম্নোক্ত দু'আকে সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে পড়া।

بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ، فِي الْأَرْضِ، وَلَا فِي السَّمَاءِ، وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ،

দেখুন- http://istefta.info/1093 

,

প্রত্যক নামাযের পর ঘুমাইবার সময় এবং সকাল সন্ধ্যা আয়াতুল কুরসী পড়া এবং ঘুমাইবার সময় ও সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে সূরা নাস,সূরা ফালাক্ব ও সূরা ইখলাস তিনবার করে পড়া এবং প্রতিদিন নিম্নোক্ত দু'আটি একশতবার করে পড়া।

لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيئ قدير،

প্রতিদিন সকাল সাতটা করে খেজুর খাওয়া। মদিনার খেজুর হলে ভালো (এলাজে কুরআনী-০৩)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/10103 

,

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

,

আমাদের পরামর্শ থাকবে যে, ভালো কোনো বিশুদ্ধ আকিদার মুদাব্বিরের শরণাপন্ন হওয়ার। মুদাব্বির মানে যিনি কুরআন হাদীস থেকে সেহের বা জ্বীনের চিকিৎসা করে থাকেন। যাকে রুকইয়ায়ে শরঈয়্যাহ বলা হয়। তিনি আপনার উপরোক্ত বিষয়গুলোর বিষয়ে বেশী ভালো বলতে পারবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 376 views
...