আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
54 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (15 points)

আসসালামু আলাইকুম

আমার কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিলে আমি উপকৃত হবো।

প্রশ্ন ১: আমার স্ত্রীর সাথে মাঝে মাঝে ঝগড়া  এর সময় আমি বলি, "দেখো, তুমি তো আরও ভালো কাউকে ডিজার্ভ করো। যদি তোমার আর ইচ্ছা না করে, অথবা মনে হয় ভালো লাগছে না, অথবা অন্য কিছু, তাহলে আমাকে জানিয়ো। তখন আমি ভালোভাবে ডিসিশন নিবো, কী করা যায়।" অনেক সময় বলি যে "ফ্যামিলি নিয়ে পরে ডিসিশন নিবো, কী করা যায়।"
মানে এটা তো এরকম কথা-বার্তা যে সে যদি বলে, "তার ভালো লাগছে না" বা "থাকতে চাচ্ছে না," তাহলে আমরা ওই দিকেই যাবো, মানে একসাথে না থাকার সিদ্ধান্ত।

আবার কখনও বলি, "আমি আসলে কাউকে জোর করে রাখার পক্ষে না," "আমি তোমাকে জোর করে রাখবো না," ইত্যাদি।
মানে সব ভবিষ্যৎ কালে, কোনোটা বর্তমান কালে বা অতীত কালে বলি না।

অনেক সময় আবার মনে মনে চিন্তা করি যে, "থাকবো না এর সাথে," "ছেড়ে দিবো," ইত্যাদি। মনে মনে বলি, মুখে বলি না।
এতে কি আমাদের বিবাহের কোনো সমস্যা হবে?

প্রশ্ন ২: আমি একজন ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। তো আমি চলে আসবো। কিন্তু বলছে যে, "মেহমান আসবে নিজের ইচ্ছায় আর যাবে মেজবানের ইচ্ছায়।" আমি বলছিলাম যে (কঠোরভাবে), "না, আমি তো এটা মানতে পারবো না।" এতে কি আমার ইসলামের কোনো ক্ষতি হবে?


মানে আমি কি ইসলামের (কোরআন-হাদিসের) কিছু অস্বীকার করে ফেলেছি? আমি অবশ্যই মনে মনে ইস্তেগফার করেছি। এখন আমার কী হবে?

প্রশ্ন ৩: মাঝে মাঝে আমার মনে এমন খারাপ চিন্তা আসে যা মুখে আনার মতো না। তা আবার আল্লাহ, আমাদের রাসুল এবং নবীদের নিয়ে। প্রায়ই অনিচ্ছাকৃত ঘটে, নামাজের সময় আসে। আমি মুখে উচ্চারণ করতে পারবো না।
এক্ষেত্রে কি আমার ইসলামের কোনো ক্ষতি হবে? আমি কী করতে পারি?

জাযাকাল্লাহ খাইরান।

1 Answer

+1 vote
by (62,400 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/54889/  নং ফাতাওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

আল্লাহ তায়ালা অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)


অপর এক হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ

আবূ যার আল-গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মাতের ভুল , বিস্মৃতি ও বলপূর্বক যা করিয়ে নেয়া হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন। [সুনানে ইবনে মাজাহ, ২০৪৩]


হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلاَثَةٍ عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ وَعَنِ الصَّبِيِّ حَتَّى يَشِبَّ وَعَنِ الْمَعْتُوهِ حَتَّى يَعْقِلَ " .

আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির উপর থেকে দন্ডবিধি রহিত করে দেওয়া হয়েছে, ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়, শিশু যতক্ষন না সাবালক হয়, বেহুশ ব্যক্তি যতক্ষণ না তার হুশ ফিরে এসেছে। - ইবনু মাজাহ ২০৪১, ২০৪২, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৪২৩ [আল মাদানী প্রকাশনী]


হাদীস শরীফে এসেছে-

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَّامٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا شَيْئًا مَا نُحِبُّ أَنْ نَتَكَلَّمَ بِهِ وَإِنَّ لَنَا مَا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ، قَالَ: «أَوَ قَدْ وَجَدْتُمْ ذَلِكَ؟» قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ: «ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ»

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মনের মধ্যে এমন কিছু চিন্তার উদ্রেক হয় যা সূর্য উদিত হওয়ার পরিধির মধ্যকার (মূল্যবান) সবকিছুর বিনিময়েও কথায় প্রকাশ করা আমরা মোটেও সমীচীন মনে করি না। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তোমরা কি তা অনুভব করো? তারা বলেন, হাঁ। তিনি বলেনঃ এটিই ঈমানের সুস্পষ্ট পরিচয়। (মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে হিব্বান) আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং- ১২৯৬ হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

আরো জানুন- https://ifatwa.info/54114/  


https://ifatwa.info/51825/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

"দেনমোহরের টাকা যোগাড় হলে ডিভোর্স দিয়ে দিব," এটা ভবিষ্যত সূচক তালাকের ওয়াদা। এটা তালাক দেবার ওয়াদা হয়। আর ওয়াদা করার দ্বারা কোন তালাক পতিত হয় না। সুতরাং আপনাদের তালাক হবে না।

صيغة المضارع لا يقع بها الطلاق الا اذا غلب فى الحال كما صرح به الكمال بن الهمام (الفتاوى الحامدية، كتاب الطلاق-38، رشيدة(

ولو قال: أطلقك لم يقع (الدر المنتقى، كتاب الطلاق، باب إيقاع الطلاق، قديم-1/389، جديد دار الكتب العلمية بيروت-2/14)

بخلاف كنم، لأنه استقبال فلم يكن تحقيقا بالتشكيك… ولو قال بالعربية: أطلق لا يكون طلاقا (الفتاوى الهندية، قديم-1/384، جديد-1/452)

وفى الدر المختار، بخلاف قوله طلقى نفسك فقالت أنا طالق، أو أنا اطلق نفسى، لم يقع لأنه وعد، (رد المحتار، كتاب الطلاق، باب تفويض الطلاق-4/559)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!


১. আপনি তালাকের কী কী শব্দ বলেছেন তা বিস্তারিত উল্লেখ করে আবার একটি প্রশ্ন করবেন।

আর কেনায়া তালাক সংক্রান্ত জানুন- https://ifatwa.info/54715/

আর ‘পরে ডিসিশন নিবো, ছেড়ে দিবো, ওই দিকেই যাবো’ এমন ভবিষ্যত সূচক শব্দের দ্বারা তালাক হয় না।

২. না, এতে আপনার ঈমানের কোনো সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে আল্লাহর কাছে তাওবা করবেন।

৩. যখনই এসব চিন্তা চলে আসবে তখন তা পরিহার করবেন। এসব চিন্তা এড়িয়ে চলবেন। তাহলে আপনার ঈমানের সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (15 points)
আমি এই ধরণের কথা যা বলেছি

"দেখো, তুমি তো আরও ভালো কাউকে ডিজার্ভ করো। যদি তোমার আর ইচ্ছা না করে, অথবা মনে হয় ভালো লাগছে না, অথবা অন্য কিছু, তাহলে আমাকে জানিয়ো। তখন আমি ভালোভাবে ডিসিশন নিবো, কী করা যায়।

অনেক সময় বলি যে "ফ্যামিলি নিয়ে পরে ডিসিশন নিবো, কী করা যায়।"

মানে এটা তো এরকম কথা-বার্তা যে সে যদি বলে, "তার ভালো লাগছে না" বা "থাকতে চাচ্ছে না," তাহলে আমরা ওই দিকেই যাবো, মানে একসাথে না থাকার সিদ্ধান্ত।

আবার কখনও বলি, "আমি আসলে কাউকে জোর করে রাখার পক্ষে না," "আমি তোমাকে জোর করে রাখবো না," যদি সে থাকতে না চায় ইত্যাদি।

তালাকের কোন শব্দ আমি বলি নাই

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...