আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
198 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম,,,, কেমন আছেন?

আমি আল্লাহকে রব ও প্রতিপালক হিসেবে বিশ্বাস করি,এবং বিশ্বাস করি,যে তার জাত,সত্ত্বা ও সিফাতে কোনো শরিক নাই,তার কোনো কুফু নেই!

কিন্তু শায়েখ,সম্প্রতি আমার অন্তরে কিছু সমস্যা হচ্ছেঃ

১.কেই অনুমান করে হয়তো কিছু বললে, তা কোনো ভাবে মিলে গেলে আমার তার প্রতি শিরিকি ধারণা চলে আসে,সাথে সাথে আমি আমার মনে বা মুখে সাক্ষ্য দিই,আল্লাহ ছাড়া কেউ গায়েব জানেনা,মনের খবর জানেনা ও তওবা করি!

২.কেউ আমার অনেক বড় কোনো উপকার করলে তার প্রতিও আমার শিরিকি ধারণার জন্মে,আউযুবিল্লাহ!তবুও আমি মনে করি যে, আল্লাহ রিজিক দাতা,এবং আল্লাহর ফয়সালা ছাড়া কেউ আমার কোনো উপকার বা অপকার করতে পারবেনা,মানুষ তো শুধু ওসিলা!
৩. অন্তরের এই  রকম কুলষিত অবস্থায় আমি কোনো ইবাদতে মজা পায়না,,,নাকি সালাত, দোয়া, জিকিরে,,,এসবের সময় আমি আল্লাহকে ডাকতে গেলে আমার কোনো নির্দিষ্ট ব্যাক্তির নাম মনে চলে আসে!এতে করে আমার অন্তরে ভয় হয় যে শিরিক হয় কিনা,,,,তখন আমি কালেমা পড়ি,এবং বলি আল্লাহর সমকক্ষ কিছুই নেই এবং তিনি সবকিছুর উর্ধে! কিন্তু অন্তর তাতে স্থির থাকতে পারেনা!

আমি কুরআন হাদিস অনুযায়ী আকিদা পোষণ করলেও অন্তরে তা মানতে চাইনা,অন্তর থেকে।কুমন্ত্রণা আসে যে আমার বিশ্বাস ঠিক নেই,অন্তর বারবার ভ্রান্ত আকিদাহর কাছে যায়,

এই রকম চিন্তাও আাসে যে,তুমিতো সবসময় আল্লাহর কাছে শিরিক কুফর থেকে আশ্রয চাও,তাহলে তোমার অন্তরে আসন্ন ভ্রান্ত আকিদাটা ঠিক!তখন আবার আমি বলি,সেগুলোতো কুরআন হাদিসে কোথাও,পুরো ভ্রান্ত!এসব নিয়ে চিন্তা করতে করতে আমি কোনে কাজই ঠিক ভাবে করতে পারছিনা,সালাতে রুকু সিজদাহ করতে গেলে অন্য কোনো ব্যাক্তির নাম মনে আসে,আল্লাহর নাম নিতে গেলে সমস্যা,,একাকী থাকা অবস্থায় কান্না করি,কেন যে এসব হচ্ছে!
আমি মনে মনে বলি আল্লাহ কারো জনক ও নন,জাতক ও নন!

শায়েখ,,,আমি কি করবো?

৪.জিকির বা দোয়া  করার সময় কবর বা মাজার বা মন্দির পাশে বা সামনে পরলে আমি শিরকের ভয়ে জিকির দোয়া বন্ধ করে দিই!তা কি ঠিক!

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

আল্লাহ তায়ালা অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

 

অপর এক হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ

আবূ যার আল-গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মাতের ভুল , বিস্মৃতি ও বলপূর্বক যা করিয়ে নেয়া হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন। [সুনানে ইবনে মাজাহ, ২০৪৩]

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلاَثَةٍ عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ وَعَنِ الصَّبِيِّ حَتَّى يَشِبَّ وَعَنِ الْمَعْتُوهِ حَتَّى يَعْقِلَ " .

আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির উপর থেকে দন্ডবিধি রহিত করে দেওয়া হয়েছে, ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়, শিশু যতক্ষন না সাবালক হয়, বেহুশ ব্যক্তি যতক্ষণ না তার হুশ ফিরে এসেছে। - ইবনু মাজাহ ২০৪১, ২০৪২, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৪২৩ [আল মাদানী প্রকাশনী]

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَّامٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا شَيْئًا مَا نُحِبُّ أَنْ نَتَكَلَّمَ بِهِ وَإِنَّ لَنَا مَا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ، قَالَ: «أَوَ قَدْ وَجَدْتُمْ ذَلِكَ؟» قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ: «ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ»

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মনের মধ্যে এমন কিছু চিন্তার উদ্রেক হয় যা সূর্য উদিত হওয়ার পরিধির মধ্যকার (মূল্যবান) সবকিছুর বিনিময়েও কথায় প্রকাশ করা আমরা মোটেও সমীচীন মনে করি না। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তোমরা কি তা অনুভব করো? তারা বলেন, হাঁ। তিনি বলেনঃ এটিই ঈমানের সুস্পষ্ট পরিচয়। (মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে হিব্বান) আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং- ১২৯৬ হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

আরো জানুন- https://ifatwa.info/54114/

গোপন গোনাহ থেকে বাঁচার আমল- https://ifatwa.info/52180/?show=52180#q52180

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১-৪. মনের অজান্তেই যদি এমন ধারণা চলে আসে তাহলে এতে আপনার কোনো গোনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ। কারণ, শুধুমাত্র খারাপ চিন্তা মাথায় আসার দ্বারাই কোন পাপ লিখা হয় না। তবে এরকম খারাপ চিন্তা আসার সাথে সাথেই ইস্তিগফার করতে হবে এবং সেই সাথে মন থেকে উক্ত খারাপ চিন্তা দূর করে ফেলতে হবে। কুফরীর চিন্তা করার দ্বারাই কুফরী হয়ে যায় না। যদি না তা কাজে বা কথায় প্রতিফলিত না করা হয়।

. আকিদা ঠিক রেখে এই সময় গুলোতেও আপনি যিকর, দুআ ইত্যাদি পড়তে পারবেন


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...