জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم
(গুনাহ ও বান্দার হক বিষয়ক)
(০১)
এক্ষেত্রে গীবত শুনলে আপনার গুনাহ হবে,বান্দার হক নষ্ট হবে,অন্যথায় নয়।
(০২)
এক্ষেত্রে আপনার জন্য ঐ বস্তুটি সরানো বাধ্যতামূলক নয়।
(০৩)
আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বেশির ভাগ সময় মুচকি হাসতেন। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারেস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) সাধারণত মুচকি হাসি দিতেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৬৪২)।
অর্থাৎ রাসুল (সা.) বেশির ভাগ সময় মুচকি হাসতেন। তিনি সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় কথা বলতেন।
হজরত জারির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যখন ইসলাম গ্রহণ করেছি তখন থেকে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাকে তাঁর কাছে প্রবেশ করতে বাধা দেননি এবং যখনই তিনি আমার চেহারার দিকে তাকাতেন তখন তিনি মুচকি হাসতেন। (বুখারি, হাদিস : ৩০৩৫)
রাসুল সাঃ আমাদের শিখিয়েছেন, একজন মুসলিম অপর ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করবে। শুধু তাই নয়, এটিকে তিনি ছদাকা হিসেবে গণ্য করেছেন।
(‘ছদাকা’ মানে দান, যার বিনিময়ে আল্লাহ আখেরাতে পুরস্কৃত করবেন।) একটি হাদীসে নবীজী বলেছেন-
كُلُّ مَعْرُوفٍ صَدَقَةٌ، وَإِنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ أَنْ تَلْقَى أَخَاكَ بِوَجْهٍ طَلْقٍ.
প্রতিটি ভালো কাজ ছদাকা। আর গুরুত্বপূর্ণ একটি ভালো কাজ হল, অপর ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৭০
আরেক হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
تَبَسُّمُكَ فِي وَجْهِ أَخِيكَ لَكَ صَدَقَةٌ.
তোমার ভায়ের (সাক্ষাতে) মুচকি হাসাও একটি ছদাকা। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৫৬
কারো সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করলে কী হয়? সে খুশি হয়। আর কারো সাথে এমনভাবে সাক্ষাৎ করা, যা তাকে অনন্দিত করে- এ কাজটি আল্লাহ অনেক পছন্দ করেন। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ لَقِيَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ بِمَا يُحِبُّ لِيُسِرَّهُ سَرَّهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَة.
যে ব্যক্তি নিজের কোনো মুসলিম ভাইকে খুশি করার জন্য এমনভাবে সাক্ষাৎ করে, যেমনটি সে পছন্দ করে (এর বিনিময়ে) কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে খুশি করবেন। -আলমুজামুস সগীর, তবারানী, হাদীস ১১৭৮; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ১৩৭২১
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে
(وَمِنْهَا الْقَهْقَهَةُ) وَحَدُّ الْقَهْقَهَةِ أَنْ يَكُونَ مَسْمُوعًا لَهُ وَلِجِيرَانِهِ وَالضَّحِكُ أَنْ يَكُونَ مَسْمُوعًا لَهُ وَلَا يَكُونُ مَسْمُوعًا لِجِيرَانِهِ وَالتَّبَسُّمُ أَنْ لَا يَكُونَ مَسْمُوعًا لَهُ وَلَا لِجِيرَانِهِ. كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ
হাসি তিন প্রকার। প্রত্যেকটির সংজ্ঞা নিম্নরূপ। যথা-
(১)ক্বাহ্ক্বাহাঃ যা সে নিজেও শুনবে এবং তার প্রতিবেশীগণ ও শুনবে।
(২)দ্বিহকঃযা সে নিজে শুনবে,তবে তার প্রতিবেশীগণ শুনবে না।
(৩)তাবাস্সুমঃযা সে নিজেও শুনবে না এবং প্রতিবেশীরা ও শুনবে না।(যাখিরাহ)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/10843
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
إيَّاك وكثرةَ الضَّحك؛ فإنَّه يميت القلبَ، ويذهب بنورِ الوجه
“উচ্চ আওয়াজে হাসা থেকে সাবধান থাকো। কেননা এতে অন্তর মরে যায় এবং মুখ মণ্ডলের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়।” (মুসনাদ আহমদ প্রমূখ। শাইখ আলবানী এটিকে সহীহ বলেছেন)
বেশি হাসা মাকরুহ, বা অট্ট হাসি দেওয়াও মাকরুহ। এর দ্বারা অন্তর মরে যায়।
দলিল হিসেবে দারুল উলুম দেওবন্দ বুখারি শরীফের টিকার একটি বাক্য উপস্থাপন করা হয়।
وأما المکروہ من الضحک فہو الإکثار من الضحک فإنہ یمیت القلب وذلک ہو مذموم (حاشیة بخاری: ۹۰۰/۲، اتحاد دیوبند)۔
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই,
অট্টহাসিকে অভ্যাস বানিয়ে নেয়া মাকরুহ।মাঝেমধ্যে হয়ে গেলে ক্ষমাযোগ্য।
(০৪)
হ্যাঁ, পড়া যাবে।
(নামাজ বিষয়ক)
(০১)
এক্ষেত্রে নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।
(০২)
পরবর্তী রাকাতের নিয়ত করক যায়না।
আর উক্ত কারনে নামাজ ভেঙ্গে দেয়া জায়েজ নেই।
এক্ষেত্রে পুনরায় নামাজের নিয়ত করলে সেক্ষেত্রে জামাতে নামাজ হলে ও ইমাম সাহেব ২য় বা পরবর্তী রাকাত গুলোতে থাকলে সেক্ষেত্রে আপনি মাসবুক হবেন।
(০৩)
এক্ষেত্রে নামাজের কোনো সমস্যা হয়নি।
(০৪)
হ্যাঁ, আদায় হয়েছে।
(০৫)
উক্ত নামাজ আদায় হয়ে গিয়েছে।
চিন্তা না করার পরামর্শ থাকবে।
(০৬)
এটা যেহেতু সেইদিনের আছর নামাজ ছিলো,তাই উক্ত আসর নামাজ আদায় হয়ে গিয়েছে।