আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
578 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (38 points)

1) অনেকের লেকচারার শোনা যায় যে পূর্ববর্তী যতগুলো আসমানী কিতাব রয়েছে অথবা অন্যান্য ধর্মের যে সকল কিতাব রয়েছে তাতে নবী মোহাম্মদ (সা:) এর আগমনের কিছু নিদর্শন পাওয়া গেছে ?  তাহলে আল্লাহ তায়ালা  যত গুলো আসমানী কিতাব  বা সহিফা  নাযিল করেছেন তার সবগুলোতেই মোহাম্মদ (সা:) এর আগমনের  নির্দেশনা পাওয়া যায় এর কোন শক্ত প্রমাণ আছে কি ?

2)কুরবানীর বিষয়টা  কোরআন এবং সুন্নাহর দলিলসহ  জানতে চাই এবং  নবী ইব্রাহিম  নবী ইসমাইল নাকি নবী ইসহাক কে কুরবানী করেছিলেন ?  এবং বর্তমানে আমরা সচরাচর কোরবানির ক্ষেত্রে কি ধরনের ভুল করে থাকি?

3)উলঙ্গ হয়ে থাকলে গোসল বা অজু কি ভেঙ্গে যায় ?  গোসল ফরজ হয় নি তবুও যদি ফরজ গোসলের নিয়ম অনুযায়ী গোসল করা হয় তখন কি গোসল এবং অজু দুটোই আদায় হয়ে যাবে ? গোসলের ফরজ কি কি?

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
সুরা আল ইমরানের ৮১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 وَ اِذۡ اَخَذَ اللّٰہُ مِیۡثَاقَ النَّبِیّٖنَ لَمَاۤ اٰتَیۡتُکُمۡ مِّنۡ کِتٰبٍ وَّ حِکۡمَۃٍ ثُمَّ جَآءَکُمۡ رَسُوۡلٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَکُمۡ لَتُؤۡمِنُنَّ بِہٖ وَ لَتَنۡصُرُنَّہٗ ؕ قَالَ ءَاَقۡرَرۡتُمۡ وَ اَخَذۡتُمۡ عَلٰی ذٰلِکُمۡ اِصۡرِیۡ ؕ قَالُوۡۤا اَقۡرَرۡنَا ؕ قَالَ فَاشۡہَدُوۡا وَ اَنَا مَعَکُمۡ مِّنَ الشّٰہِدِیۡنَ ﴿۸۱﴾

আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছেন- আমি তোমাদেরকে যে কিতাব ও হিকমাত দিয়েছি, অতঃপর তোমাদের সাথে যা আছে তা সত্যায়নকারীরূপে একজন রাসূল তোমাদের কাছে আসবে- তখন অবশ্যই তোমরা তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করেছ এবং এর উপর আমার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছ’? তারা বলল, ‘আমরা স্বীকার করলাম’। আল্লাহ বললেন, ‘তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম’।
,
স্মরণ কর যখন মরিয়ম তনয় ঈসা (আ.) বললেন হে বনী ইসরাইল আমি তোমাদের কাছে প্রেরিত আল্লাহর রাসুল। আমার পূর্ববর্তী তাওরাত কিতাবের আমি সত্যায়নকারী। একজন রাসুলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন, তাঁর নাম আহমদ (সা.) (সূরা সফ- ৬)

সুরা আল আ'রাফের ১৫৭ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 
اَلَّذِیۡنَ یَتَّبِعُوۡنَ الرَّسُوۡلَ النَّبِیَّ الۡاُمِّیَّ الَّذِیۡ یَجِدُوۡنَہٗ مَکۡتُوۡبًا عِنۡدَہُمۡ فِی التَّوۡرٰىۃِ وَ الۡاِنۡجِیۡلِ ۫ یَاۡمُرُہُمۡ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡہٰہُمۡ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ یُحِلُّ لَہُمُ الطَّیِّبٰتِ وَ یُحَرِّمُ عَلَیۡہِمُ الۡخَبٰٓئِثَ وَ یَضَعُ عَنۡہُمۡ اِصۡرَہُمۡ وَ الۡاَغۡلٰلَ الَّتِیۡ کَانَتۡ عَلَیۡہِمۡ ؕ فَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِہٖ وَ عَزَّرُوۡہُ وَ نَصَرُوۡہُ وَ اتَّبَعُوا النُّوۡرَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ مَعَہٗۤ ۙ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۱۵۷﴾

যারা অনুসরণ করে রাসূলের, যে উম্মী নবী; যার গুণাবলী তারা নিজদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে। আর তাদের থেকে বোঝা ও শৃংখল- যা তাদের উপরে ছিল- অপসারণ করে। সুতরাং যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য করে এবং তার সাথে যে নূর নাযিল করা হয়েছে তা অনুসরণ করে তারাই সফলকাম। 
,
(০২)
কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার নেছাব সংক্রান্ত জানুনঃ 
,
কুরবানীর মাসায়েল সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

★মাসয়ালার ক্ষেত্রে সচরাচর কিছু ভুলঃ
কুরবানী পশু জবাই করে,তার যাবতীয় কাজ ইত্যাদি করে পারিশ্রমিক দেওয়া-নেওয়া জায়েয। তবে কুরবানীর পশুর কোনো কিছু (গোশত) পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া যাবে না। -কিফায়াতুল মুফতী ৮/২৬৫।
,
শরীকে কুরবানী করলে ওজন করে গোশত বণ্টন করতে হবে। অনুমান করে ভাগ করা জায়েয নয়।-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭, কাযীখান ৩/৩৫১
,
কোনো অংশীদারের ভুল নিয়ত (গোশত খাওয়ার নিয়ত) থাকা যাবেনা।

যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কুরবানী না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরীকদের কারো কুরবানী হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরীক নির্বাচন করতে হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮, কাযীখান ৩/৩৪৯
,
★শরীকানা কুরবানীতে কোনো শরীকের টাকা হারাম হওয়া যাবেনা।
,
বিস্তারিত মাসয়ালা জানুনঃ 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,বোন, 
ইবরাহীম আ. আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে জ্যেষ্ঠ পুত্র ইসমাঈলকে কুরবানী করতে আদিষ্ট হয়েছিলেন, ইসহাককে নয়। ছোট পুত্র ইসহাককে কুরবানী করার আদেশ করা হয়েছিল-এ কথা সঠিক নয়।
(তবে এক্ষেত্রে কয়েকজন দ্বীমত পোষন করেছেন।) 
,
এই ব্যপারে শায়েখ আব্দুল মালেক সাহেব দাঃবাঃ বলেছেন,    
কুরআন মজীদের ৩৭তম সূরা ‘আসসাফফাত’ এ যবাহ (কুরবানী)-এর ঘটনা উল্লেখিত হয়েছে। পরিপূর্ণ বিশ্লেষণসহ পূর্বাপর তা লক্ষ করা জরুরি। ইরশাদ হয়েছে-
قالوا ابنوا له بنيانا فألقوه في الجحيم فأرادوا به كيدا فجعلنهم الاسفلين. وقال انى ذاهب الى ربى سيهدين. رب هب لى من الصلحين. فبشرنه بغلم حليم. فلما بلغ معه السعى قال يبنى انى ارى فى المنام انى اذبحك فانظر ماذا ترى قال يابت افعل ما تؤمر ستجدنى ان شاء الله من الصبرين. فلما اسلما وتله للجبين. ونادينه ان يابرهيم. قد صدقت الرءيا انا كذلك نجزى المحسنين. ان هذا لهو البلؤا المبين. وفدينه بذبح عظيم. وتركنا عليه فى الخرين. سلم على ابرهيم. كذلك نجزى المحسنين. انه من عبادنا المؤمنين. وبشرنه باسحق نبيا من الصلحين. وبركنا عليه وعلى اسحق ومن ذريتهما محسن وظالم لنفسه مبين.

(তরজমা) ‘‘তারা পরস্পর বলল, ‘ইবরাহীমের জন্য একটি অগ্নিকুণ্ড প্রস্তুত কর এবং তাঁকে সে জ্বলন্ত অগ্নিতে নিক্ষেপ কর। মোটকথা তারা ইবরাহীমের অনিষ্ট করার ইচ্ছা করল। সুতরাং আমি তাদেরকে অধঃপতিত করে দিলাম। এবং ইবরাহীম বললেন, ‘আমি তো আমার রব্বের দিকে ফিরে যাচ্ছি, তিনি আমাকে (উত্তম স্থানে) পৌঁছে দিবেনই।’ (তিনি দুআ করলেন,) হে আমার রব্ব! আমাকে একটি সুসন্তান  দান করুন। অতঃপর আমি তাঁকে একজন ধৈর্য্যশীল পুত্রসন্তানের সুসংবাদ দিলাম। অনন্তর যখন পুত্রটি তাঁর সাথে চলাফেরা করার মতো বয়সে উপনীত হল, তখন তিনি বললেন, ‘বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে যবেহ করছি। অতএব তুমিও চিন্তা কর, তোমার কী মত।’ তিনি বললেন, ‘আব্বাজান! আপনি যে বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছেন তা পূর্ণ করুন, ইনশাআল্লাহ আমাকে ধৈর্য্যশীলদের    অন্ত র্ভুক্ত পাবেন।’ ফলকথা, যখন তাঁরা আত্মসমর্পণ করলেন এবং পিতা পুত্রকে কাত করে শায়িত করলেন এবং আমি তাঁকে ডেকে বললাম, ‘হে ইবরাহীম! নিশ্চয়ই আপনি স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখিয়েছেন।’ আমি বিশিষ্ট বান্দাদেরকে এরূপই পুরস্কার প্রদান করে থাকি। প্রকৃতপক্ষেও তা ছিল একটি বড় পরীক্ষা। আর আমি তার পরিবর্তে একটি শ্রেষ্ঠ যবেহের পশু দান করলাম। এবং আমি তাঁর জন্য পশ্চাতে আগমনকারীদের মধ্যে এই বাক্য থাকতে দিলাম যে, ‘ইবরাহীমের প্রতি সালাম হোক।’ আমি বিশিষ্ট বান্দাদেরকে এরূপই পুরস্কার প্রদান করে থাকি। নিঃসন্দেহে তিনি আমার ঈমানদার বান্দাগণের অন্যতম ছিলেন। আর আমি তাঁকে (পুত্র) ইসহাকের    সুসংবাদ প্রদান করলাম যিনি নবী, (এবং) সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবেন। আর আমি ইবরাহীম ও ইসহাকের প্রতি বরকত নাযিল করেছি এবং তাঁদের উভয়ের বংশে অনেক নেক ‘‘লোকও রয়েছে এবং অনেকে এমনও রয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের ক্ষতি সাধন করছে।-সূরা সাফফাত : ৯৭-১১৩

উপরোক্ত আয়াতসমূহ ও সামনে উল্লেখিত এ সম্পর্কিত অন্যান্য আয়াত সামনে রেখে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ্য করা দরকার।

১। সূরা সাফফাত-এর উপরোক্ত আয়াতসমূহে ইবরাহীম আ.-এর দু’জন সন্তানের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে। প্রথম    সন্তানের নাম উল্লেখ করা হয়নি; বরং    غلام حليم                 (ধৈর্য্যশীল একটি পুত্রসন্তান) বলে উল্লেখ করে তার কুরবানীর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় পুত্রসন্তানের সুসংবাদ নামসহ দেওয়া হয়েছে-
فبشرنه باسحق
 
এ কথা সর্বজনস্বীকৃত যে, ইবরাহীম আ.-এর মাত্র দুজন পুত্রসন্তান ছিলেন : ইসমাঈল ও ইসহাক। সুতরাং একজন অর্থাৎ ইসহাক আ.-এর উল্লেখ নামসহ হলে অপরজন, যাকে  غلام حليم   (একজন ধৈর্য্যশীল পুত্রসন্তান) আখ্যা দিয়ে তার কুরবানীর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে তিনি ইসমাঈল আ. ছাড়া আর কে হবেন?
ইসহাক আ.-এর আলোচনা তো কুরবানীর ঘটনার পরে উল্লেখ করা হয়েছে এবং তাঁর সুসংবাদ তো নিজের ‘একমাত্র পুত্র’ ইসমাঈলকে কুরবানী করার আদেশ পালনের পুরস্কার হিসাবে প্রদান করা হয়েছে। আয়াতের বর্ণনাভঙ্গি থেকেই তা সুস্পষ্ট।

২। কুরবানীর ঘটনা যে পুত্রের সঙ্গে সংঘটিত হয়েছে তাকে কুরআন মজীদে (সূরা সাফফাত (৩৭) : ১০৭)  
     غلام حليم    (ধৈর্য্যশীল  পুত্রসন্তান) আখ্যা দেওয়া হয়েছে। অথচ ইসহাক আ.কে তো    غلام عليم       (বিদ্বান সন্তান) আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দেখুন : সূরা হিজর (১৫) : ৫৩; সূরা যারিয়াত (৫১) : ২৮
বোঝা গেল,     غلام حليم        দ্বারা ইসমাইল আ. উদ্দেশ্য। যিনি নিঃসঙ্কোচে নিজের জীবন উৎসর্গ করাকে           বরণ     করে নিয়েছেন। এরচেয়ে বড়    حلم  (সহনশীলতা) আর কী হতে পারে?

কুরআন মজীদে ইসমাঈল আ.কে  من الصابرين  (ধৈর্য্যশীল) বলেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে। (দেখুন : সূরা আম্বিয়া (২১) : ৮৫)  এ গুণটিই উপরোক্ত আয়াতসমূহে কুরবানীর ঘটনায় (সূরা সাফফাত (৩৭) : ১০২) উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ কুরআন মজীদের কোথাও ইসহাক আ.-এর জন্য এ গুণের উল্লেখ নেই।

৩। যে পুত্রের সঙ্গে কুরবানীর ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তার সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা ইবরাহীম আ.-এর দুআর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর     সুসংবাদ প্রদান করেছেন। ইরশাদ হয়েছে-
رب هب لى من الصلحين. فبشرنه بغلم حليم.
 (তরজমা) হে আমার রব্ব! আমাকে একটি সুসন্তান দান করুন। অতঃপর আমি তাঁকে একজন ধৈর্য্যশীল    পুত্রসন্তানের সুসংবাদ দিলাম।-সূরা সাফফাত (৩৭) : ১০০-১০১

আর ইসহাক আ.  غلام عليم এর জন্মের সুসংবাদ ইবরাহীম আ.-এর দুআ ছাড়াই বৃদ্ধবয়সে ফেরেশতাদের মুখে প্রদান করা হয়েছে। যার কারণে তিনি অনেকটা অবাকও হয়েছেন যে, আমি তো বৃদ্ধ, আমার স্ত্রীও বৃদ্ধা ও বন্ধ্যা, তাহলে সন্তান কীভাবে হবে? বিবি (সারা রা.)ও বিস্মিত হয়েছেন এবং এই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন। কুরআন মজীদে (সূরা হুদ (১১) : ৬৯-৭৫; সূরা হিজর (১৫) : ৫১-৫৬; সূরা যারিয়াত (৫১) : ২৪-৩০) এ ঘটনা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ  করা হয়েছে।
লক্ষ্যণীয় বিষয় এই যে, দুআ ব্যতীত যে     غلام       (পুত্রসন্তান)-এর সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে তার নাম ইসহাক। সূরা হুদ (১১:৭১) এ তা স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। আর সূরা সাফফাত (৩৭: ১০০-১০১) এ কথা সুস্পষ্ট যে, কুরবানীর ঘটনা যে পুত্রের সঙ্গে সংঘটিত হয়েছে তার সুসংবাদ ইবরাহীম আ.-এর দুআর পরিপ্রেক্ষিতে প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং তা ইসহাকের নয়, ইসমাঈলের ঘটনা।

৪। কুরআন মজীদে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, কুরবানীর আদেশ ছিল আল্লাহর পক্ষ হতে পরীক্ষা। আর এটা ইসমাইল আ.-এর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, ইসহাক আ.-এর ক্ষেত্রে নয়। কারণ ইসহাক আ.-এর জন্মের সুসংবাদ দেওয়ার সময় আরো দুটি বিষয়ের    সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছিল। প্রথমত তার ভবিষ্যত প্রজন্ম থেকে ইয়াকুব জন্মলাভ করবেন। দ্বিতীয়ত তিনি (অর্থাৎ ইসহাক আ.) নবী হবেন।

প্রথম বিষয়টি সূরা হুদ ((১১) : ৭১) এবং দ্বিতীয় বিষয়টি সূরা সাফফাত ((৩৭) : ১১২) উল্লেখিত রয়েছে। যেহেতু তাঁর সম্পর্কে পূর্ব থেকেই এ দুটি বিষয়ের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে তাই তিনি পরীক্ষার বিষয় হতে পারেন না। কেননা, পূর্ববর্তী     সুসংবাদের কারণে তার সম্পর্কে ইবরাহীম আ. অবগত আছেন যে, এই সন্তান বড় হবে, তাঁর বংশে ইয়াকুব জন্মলাভ করবেন এবং তিনি নবী  হবেন। আর আল্লাহ তাআলা এসব স্পষ্ট দুটি সুসংবাদ প্রদানের পর এর পরিপন্থী কোনো নির্দেশ কখনো দিবেন না। অতএব পরীক্ষা ইসমাঈল আ.-এর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, যার জন্মের       সুসংবাদের সাথে এমন কোনো সুসংবাদ যোগ করা হয়নি যা পরীক্ষার প্রতিবন্ধক হতে পারে।

মোটকথা, কুরআন মজীদের উল্লেখিত আয়াতসমূহ এবং বর্ণনাভঙ্গি দ্বারা অকাট্যভাবে প্রতীয়মান হয় যে, কুরবানীর ঘটনা ইসহাক আ.-এর সাথে নয়; বরং ইবরাহীম আ.-এর অপর পুত্র ইসমাঈল আ.-এর সাথেই সংঘটিত হয়েছে।

এ বিষয়ে আরো জানতে হলে সূরা সাফফাতের সংশ্লিষ্ট আয়াতসমূহের তাফসীর তাফসীরে ইবনে কাসীর খ  : ৪, পৃষ্ঠা : ১৬-২১; তাফসীরে উসমানী পৃষ্ঠা : ৫৮৩-৫৮৪; তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন খ  : ৭, পৃষ্ঠা : ৪৬২-৪৬৬ দেখা যেতে পারে।

(০৩)
শরীয়তের বিধান মতে  সতর খুলে গেলে বা উলঙ্গ হয়ে গেলে গোসল অযু কোনোটাই ভেঙ্গে যাবেনা। 
বিস্তারিত জানুনঃ 
,
'গোসলের দ্বারা অযুও হয়ে যায় পরে অযু করার প্রয়োজন নেই ৷
[আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল ,২/ ৭,কেফায়াতুল মুফতি,২/ ৩১২]

হাদীস শরীফে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ، – رضى الله عنها – قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ لاَ يَتَوَضَّأُ بَعْدَ الْغُسْلِ

অর্থাৎ আয়েশা রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ গোসলের পর অযু করতেন না।
[সূনানে  নাসাঈ: ২৫৩]
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে অযু গোসল উভয়টিই আদায় হয়ে যাবে।    

গোসল করার  ফরয পদ্ধতি হচ্ছে– 

*গড়গড়াইয়া কুলি করা।
*নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌছানো।
*গোটা দেহে পানি ঢালা।

বিস্তারিত জানুনঃ   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 205 views
0 votes
1 answer 76 views
...