আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
95 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
মুহতারাম মুফতি সাহেব,
আসসালামু আলাইকুম ।
আমার বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন ছিল

ক)  সালাত বিষয়ক:

১)  আমার সানা পাঠ করা শেষ হওয়ার আগেই যদি ইমাম সাহেবের কিরাআত শুরু হয়ে যায় তাহলে কী আমি সাথে সাথে চুপ করে যাবো না কী সানা পাঠ করা সম্পন্ন করব?

২) সালাতে দাঁড়ালে আজেবাজে অনেক কিছু মাথায় চলে আসে । এগুলো থেকে বাঁচার জন্য, বিশেষ করে সুন্নাত ও নফল সালাতে কিরাআতের সময়ে, আমি এমন কল্পনা করি যেন কুরআনের ঐ আয়াতটিই আমার চোখের সামনে ভাসছে ।  এমনও হয় যেন কুরআন মাজীদের কোন পৃষ্ঠায় ছাপানো আয়াত দেখে দেখেই আমি পড়ছি ।  এভাবে চিন্তা/ কল্পনা করলে আজেবাজে চিন্তাগুলো আসে না বা অনেক অনেক কমে যায় ।
এভাবে কল্পনাতে আয়াত দেখে পড়ার ফলে সালাতের কোন ক্ষতি হবে কী না?


খ)  কুরবানী বিষয়ক:
১)  যারা শরীকে কুরবানী দেয়, তাদের মধ্যে যদি সবার ইনকামই হালাল হয় কিন্তু তাদের মধ্যে একজনেরও যদি মাংস খাওয়ার নিয়্যাত থাকে অথবা কুরবানীর মাংসের পরিমাণ নিয়ে গৌরব করার নিয়্যাত থাকে, তবে শুনেছি যে শরিকদের কারোরই কুরবানি হবে না ।
এখানে 'কুরবানি হবে না' মানে কী কুরবানি কবুল না হওয়া না কী ওয়াজিবের জিম্মাদারিই আদায় না হওয়া?

যেমন - কেউ বিনা ওজরে বাসায় ফরজ সালাত আদায় করে, তাদের সালাতই হয় না - এর ব্যাখ্যায় মসজিদের একজন ইমাম সাহেব বলেছিলেন যে, ফরজের জিম্মাদারি আদায় হয়ে গেলেও সেই সালাতের কোন বিনিময় সে পাবে না ।
কুরবানির ক্ষেত্রেও কী বিষয়টি এরকম   যে -  ওয়াজিব কাজটি সে তরক করল না কিন্তু তার কুরবানি কবুলযোগ্যও হল না?
২)  কুরবানির পশু কেনার সময়ে ভালো ছিল কিন্তু বাসায় আনার পরে সাবধানতার পরেও কোন দুর্ঘটনায় পশুর শিং, ক্ষুর, চোখ এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে কী এই পশু দিয়ে কুরবানী করা যাবে  না কী অন্য ভালো পশু ক্রয় করে কুরবানী দিতে হবে?
গ) জিকির/ ওজিফা বিষয়ক:
১) মহান আল্লাহর আসমা-উল হুসনা -এঁর কোন নির্দিষ্ট জিকির আছে কী না?
যেমন: বাংলায় লেখা হিসনে হাসিন সহ বেশ কিছু কিতাবে এমনটি পাওয়া যায় যে, যদি কেউ এত দিন এত বার করে আল্লাহর এই নাম জিকির করে তবে তার এই কল্যাণ সাধিত হবে ।  যতদূর মনে পড়ে যে, ৪০ দিন ৪১ বার করে ইয়া 'আজিজু   ইয়া 'আজিজু পাঠ করলে ঐ বান্দাকে সৃষ্টি থেকে অমুখাপেক্ষী করে দেওয়া হবে - এরকম পড়েছিলাম ।
সুন্নাহতে কী এরকম কোন আমল পাওয়া যায়?
যদি এরকম জিকির মাসনুন জিকির না হয়ে থাকে তবে মহান আল্লাহর নামের অর্থের দিকে খেয়াল রেখে ফজিলতের আশায় এরকম জিকির করলে কী তা বিদ'আত হবে?

২) আরোগ্য লাভের উদ্দেশ্যে সুরাতুল ফাতিহা কীভাবে কোন পদ্ধতিতে আমল করতে হবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করার অনুরোধ রইল ।
ঘ)  বিবিধ:

iFatwa -তে এক মাসে সর্বোচ্চ চারটি প্রশ্ন করা যায় ৷ এই মাসের হিসেবটি কী আরবী মাসের হিসেবে না কী ইংরেজি মাসের হিসেবে ধরতে হবে?
by (9 points)
মুফতি সাহেব, আমার আরবী পড়ার গতি একটু ধীরগতির ।  সমস্যা যেটা হয়,  "ওয়া লা--  ইলাহা গইরুক " এ অংশটি পড়তে পড়তে 'গইরুক' শব্দটি বলার আগেই কিরাআত শুরু হয় ।  এখন 'গইরুক' পর্যন্ত না পড়লে তো পুরো অর্থই পরিবর্তন হয়ে যায়,  ইলাহকে অস্বীকার করা হয় । 
এক্ষেত্রেও কী আমি থেমে যাবো না কী "ওয়া লা-- ইলাহা গইরুক" শেষ পর্যন্ত পড়ব? 

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(ক, সালাত বিষয়ক)
(০১)
وقرأ سبحانک اللّٰھم إلا إذا شرع الإمام فی القراء ة وفی رد المحتار: ولو أدرک الإمام بعد ما اشتغل بالقراء ة، قال ابن الفضل: لا یثنی وقال غیرہ: یثنی، وینبغی التفصیل، إن کان الإمام یجھر لا یثنی، وإن کان یسرّ یثنی۔ ( الدر المختار مع رد المحتار: ۱۸۹/۲، ۱۹۰، ط: زکریا، دیوبند)۔
সারমর্মঃ-
তাকবিরে তাহরিমার পর মুক্তাদী سبحانک اللّٰھم তথা ছানা পড়বে,তবে যদি ইমাম সাহেব কিরাআত শুরু করে দেয়,তাহলে ছানা পড়া বন্ধ করে দিবে।
তবে যদি ইমাম সাহেব আস্তে কিরাআত বিশিষ্ট নামাজে কিরাআত শুরু করে দেয়,সেক্ষেত্রে মুক্তাদী ছানা পড়া শেষ করবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মুক্তাদীর ছানা পড়া অবস্থায় ইমাম সাহেব যদি কিরাআত শুরু করে দেয় সেক্ষেত্রে মুক্তাদী চুপ হয়ে যাবে। যতটুকু ছানা পড়েছে,ততটুকুর উপর ক্ষান্ত করে ইমামের কিরাআত শুনবে।

তবে যদি আস্তে কিরাআত বিশিষ্ট নামাজ হয়, সেক্ষেত্রে মুক্তাদী ছানা পড়া শেষ করবে।

(০২)
এভাবে কল্পনাতে আয়াত দেখে পড়ার ফলে সালাতের ক্ষতি হবেনা।

খ)  কুরবানী বিষয়ক:

(০১)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এক্ষেত্রে কুরবানী কবুল হবেনা।
তবে কুরবানী আদায় হয়ে যাবে।
পুনরায় কুরবানী দিতে হবেনা।

আল্লাহ তা’আলা বলেন, 

لَن يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَاؤُهَا وَلَكِن يَنَالُهُ التَّقْوَى مِنكُمْ كَذَلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ لِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَبَشِّرِ الْمُحْسِنِينَ

এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন। (সূরা হাজ্ব-৩৭)

আরো জানুনঃ- 

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى الرَّازِيُّ، قَالَ: أَخْبَرَنَا، ح وحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ بَحْرِ بْنِ بَرِيٍّ، حَدَّثَنَا عِيسَى الْمَعْنَى، عَنْ ثَوْرٍ، حَدَّثَنِي أَبُو حُمَيْدٍ الرُّعَيْنِيُّ، أَخْبَرَنِي يَزِيدُ ذُو مِصْر، قَالَ: أَتَيْتُ عُتْبَةَ بْنَ عَبْدٍ السُّلَمِيَّ فَقُلْتُ: يَا أَبَا الْوَلِيدِ، إِنِّي خَرَجْتُ أَلْتَمِسُ الضَّحَايَا فَلَمْ أَجِدْ شَيْئًا يُعْجِبُنِي غَيْرَ ثَرْمَاءَ فَكَرِهْتُهَا فَمَا تَقُولُ؟ قَالَ: أَفَلَا جِئْتَنِي بِهَا. قُلْتُ: سُبْحَانَ اللَّهِ تَجُوزُ عَنْكَ وَلَا تَجُوزُ عَنِّي. قَالَ: نَعَمْ، إِنَّكَ تَشُكُّ وَلَا أَشُكُّ، إِنَّمَا " نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ المُصْفَرَّةِ، وَالْمُسْتَأْصَلَةِ، وَالْبَخْقَاءِ وَالْمُشَيَّعَةِ، وَكِسَرَا، وَالْمُصْفَرَّةُ: الَّتِي تُسْتَأْصَلُ أُذُنُهَا حَتَّى يَبْدُوَ سِمَاخُهَا وَالْمُسْتَأْصَلَةُ: الَّتِي اسْتُؤْصِلَ قَرْنُهَا مِنْ أَصْلِهِ، وَالْبَخْقَاءُ: الَّتِي تُبْخَقُ عَيْنُهَا، وَالْمُشَيَّعَةُ: الَّتِي لَا تَتْبَعُ الْغَنَمَ عَجَفًا وَضَعْفًا، وَالْكَسْرَاءُ: الْكَسِيرَةُ

ইয়াযীদ মিসরী (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘উতবাহ ইবনু আবদ আস-সুলামীর নিকট এসে বলি, হে ওয়ালীদের পিতা! আমি কুরবানীর পশুর খোঁজে বের হই, কিন্তু কোনো পশুই পছন্দ হয়নি। একটি বকরী পছন্দ হয়েছিল, তার একটি দাঁত না থাকায়, সেটাও বাদ দিয়েছি। এখন এ বিষয়ে আপনি আমাকে পরামর্শ দিন। ‘উতবাহ বলেন, তুমি আমার কাছে সেটা নিয়ে আসনি কেন? আমি বলি, সুবহানাল্লাহ! দাঁতপড়া পশু কুরবানী আপনার জন্য বৈধ, অথচ আমার জন্য বৈধ নয়! তিনি বললেন, হ্যাঁ। তুমি সন্দিহান হয়েছো কিন্তু আমি সন্দিহান হইনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কানকাটা, শিংবিহীন, অন্ধ, দুর্বল এবং পা ভাঙ্গা পশু কুরবানী করতে নিষেধ করেছেন।

মুসফারা হচ্ছে ঐ পশু যার কানকাটার ছিদ্র স্পষ্ট দেখা যায়। মুস্তাসালা হলো ঐ পশু যার শিং গোড়া থেকে ভেঙ্গে গেছে। বাখকা হলো, যে পশুর দৃষ্টিশক্তি লোপ পেয়েছে। মুশায়্যি‘আহ হলো, যে পশু দুর্বলতার কারণে মেষের সাথে সাথে চলতেও অক্ষম। কাসরা হলো ঐ পশু যার পা ভাঙ্গা।
(আবু দাউদ ২৮০৩)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কানকাটা, শিংবিহীন, অন্ধ, দুর্বল এবং পা ভাঙ্গা পশু কুরবানী করতে নিষেধ করেছেন।

সুতরাং উক্ত পশুতে এই সমস্যা গুলি দেখা দিলে সেই পশু দিয়ে কুরবানী করা যাবেনা।
অন্য একটি সুস্থ পশু দিয়ে কুরবানী দিতে হবে। 
আরো জানুনঃ- 

গ) জিকির/ ওজিফা বিষয়ক:

(০১)
সুন্নাহতে এরকম কোন আমল পাওয়া যায়না।
যদি এরকম জিকির মাসনুন জিকির মনে না করে, মহান আল্লাহর নামের অর্থের দিকে খেয়াল রেখে ফজিলতের আশায় এরকম জিকির করলে তা বিদ'আত হবেনা।

তবে আবশ্যকীয় বা দ্বীনের অংশ মনে করা যাবেনা।

(০২)
একবার,তিনবার,সাতবার,৪০ বার,৪১ বার বিভিন্ন রকমের রেওয়ায়াত পাওয়া যায়।

ঘ)  বিবিধ:

ইংরেজি মাসের হিসেবে ধরতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...