আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
115 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (42 points)
edited by
১)ধরুন একজন মুসলিম বড় শিরক করল জেনে বুঝে। এরপর তার স্ত্রী তাকে বলল," যদি তুমি এখন তওবা না করো আর আল্লাহর প্রতি ঈমান না আনো, তবে আমাদের মধ্যে তালাক হয়ে যাবে। তাই তাড়াতাড়ি ঈমান আনো আর তওবা করো। "

এরপর সে কালিমা শাহাদাত পড়ে আল্লাহর কাছে তাওবা করল। তার তওবা করার উদ্দেশ্য ছিল দুইটা।

এক) পরকালীন শাস্তি থেকে মুক্তি

দুই) তালাক ঠেকানো

তার তওবা কবুল হবে বলে আশা করা যায়??

২)  সে কি ওই স্ত্রীর সাথে থাকতে পারবে??

৩)আমি কিছুদিন আগে আপনাদেরকে প্রশ্ন করেছিলাম,

" গত তিনদিন আগে সারাজীবন এর শিরক নিয়ে ভাবতে ভাবতে এমন একটা অবস্থা হয়েছিল যে যদি পরাশুনা ছেড়ে না দেই,তবে শিরক হবে।ঠিক কি নিয়ে চিন্তা করতে করতে অবস্থায় পড়েছিলাম এখন মনে নাই।

এখন যদি জীবন এর সকল শিরক এর জন্য তাওবা করি, তাইলে কি পরাশুনা চালায় যাইতে পারব???"

এর উত্তরে আপনারা বলেছিলেন যে তওবা করে পড়াশোনা চালানো যাবে।

 আমি তাই করি। তওবা করে পড়াশোনা চালাতে থাকি।
এরপর গতকাল আবার কোন কিছু একটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে এমন একটা অবস্থা তৈরি হয় যখন মনে হচ্ছিল আমি যদি পড়াশোনা বাদ না দেই তবে শিরক হবে। এখন কি তওবা করে আবার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারব??

৪)মুসলিম, কিন্তু বড় শিরক এ লিপ্ত।

তাওবার আগে কি এমন ব্যাক্তির দুয়া কি আল্লাহ কবুল করেন??


৫)ধরুন কেউ চায় তার শিরক, কুফরি এগুলা হলেও তার দুনিয়াদারি ঠিক থাক।

এই মনভাব কি শিরক??

1 Answer

0 votes
by (677,280 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে। 

যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি। 
,
কিছু বিষয় আছে এমন, যা তাওহীদ-পরিপন্থী তো নয়, তবে তা ‘তাওয়াক্কুলে’র সর্বোচ্চ স্তর থেকে নিম্নস্তরের। এ ধরনের বিষয়গুলোকে শিরক বলা স্পষ্ট ভুল। 
,
শিরকের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন।
আল্লাহর কাছে সবচে’ ঘৃণ্য ও জঘন্যতম পাপ হল শিরক। কুরআন মাজীদে পুত্রের প্রতি লুকমান হাকীমের ওসিয়তগুলো বিশেষ গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে তিনি নিজ পুত্রকে ওসিয়ত করে বলেন-
وَ اِذْ قَالَ لُقْمٰنُ لِابْنِهٖ وَ هُوَ یَعِظُهٗ یٰبُنَیَّ لَا تُشْرِكْ بِاللهِ  اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِیْمٌ.

স্মরণ কর, যখন লুকমান উপদেশচ্ছলে নিজ পুত্রকে বলেছিল, বৎস! তুমি আল্লাহ্র সাথে শরীক করো না। কেননা র্শিক নিশ্চয় মারাত্মক অবিচার ও পাপ। -সূরা লুকমান (৩১) : ১৩

আল্লাহ তাআলা নবীকে সতর্ক করে বলেছেন-
وَ لَقَدْ اُوْحِیَ اِلَیْكَ وَ اِلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكَ  لَىِٕنْ اَشْرَكْتَ لَیَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ.

নিশ্চয় আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি এই ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, যদি আপনি শিরক করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং নিশ্চিত আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। -সূরা যুমার (৩৯) : ৬৫

অন্যত্র আল্লাহ আরো বলেছেন-
اِنَّهٗ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَیْهِ الْجَنَّةَ وَ مَاْوٰىهُ النَّارُ.

আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। -সূরা মায়েদা (৫) : ৭২

আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন-
اِنَّ اللهَ لَا یَغْفِرُ اَنْ یُّشْرَكَ بِهٖ وَ یَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِكَ لِمَنْ یَّشَآءُ وَ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدِ افْتَرٰۤی اِثْمًا عَظِیْمًا.

নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে এক মহাপাপ করে। -সূরা নিসা (৪) : ৪৮

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি উক্ত কাজ ছেড়ে দিয়ে আর ভবিষ্যতে না করার শর্তে  অনুতপ্ত হয়ে খালেস দিলে তওবা করে থাকলে তার তওবা কবুল হবে,ইনশাআল্লাহ।  
তবে শিরকে জলি হয়ে থাকলে কালেমায়ে শাহাদত পাঠ করে নিবে, পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিবে।

(০২)
তবে শিরকে জলি হয়ে কালেমায়ে শাহাদত পাঠ করে, পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিবে।
নতুবা সেই স্ত্রীর সাথে থাকবেনা।

আর শিরকে জলি না হলে সেই স্ত্রীর সাথে থাকতে কোনো সমস্যা নেই।
তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক থাকবে।

(০৩)
হ্যাঁ আপনি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন।
তবে এহেন কথা আর বলবেননা 

(০৪)
বিষয়টি আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছাধীন।

(০৫)
মনোভাব শিরক নয়।
তবে শিরকে জলি করলে ঈমান চলে যাবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...