ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
সন্তানের উপর পিতা-মাতার খোরপোষ কখন ওয়াজিব হবে?
(وَ) تَجِبُ (عَلَى مُوسِرٍ) وَلَوْ صَغِيرًا (يَسَارَ الْفِطْرَةِ) عَلَى الْأَرْجَحِ وَرَجَّحَ الزَّيْلَعِيُّ وَالْكَمَالُ إنْفَاقَ فَاضِلِ كَسْبِهِ.
গ্রহণযোগ্য মতানুযায়ী সচ্ছল, নেসাব পরিমাণ মালের মালিক সন্তানের উপর উপর মাতা-পিতার নাফক্বাহ ওয়াজিব হবে।ইমাম যাইলায়ী, ও আল-কামাল রাহ. দৈনন্দিন রোজগারের অতিরিক্ত উপার্জনকে (পিতা-মাতার জন্য খরছ করবে অন্য কিছু নয়) অগ্রাধিকার দেন।(দুর্রুল মুখতার৩/৬২১)
অন্যত্র এসেছে,
إلَّا إذَا كَانَ الْأَصْلُ زَمِنًا لَا كَسْبَ لَهُ، فَلَا يُشْتَرَطُ سِوَى قُدْرَةِ الْوَلَدِ عَلَى الْكَسْبِ
কিন্তু যদি পিতা-মাতা বার্ধক্যর ধরুণ দুর্বল,রোগগ্রস্ত হন।যদ্দরুন উপার্জন করতে অক্ষম হন।তাহলে সন্তান উপার্জন সক্ষম হলেই তার উপর পিতা-মাতার নাফক্বাহ দেওয়া ওয়াজিব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
3712
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) একাধিক ভাই-বোনের মধ্যে যারা সচ্ছল, যাদের প্রয়োজন অতিরিক্ত টাকা থাকবে, তাদের উপর মাতাপিতার ভরণপোষণ ওয়াজিব। যদি একাধিক সন্তান সচ্ছল থাকে, তাহলে তাদের সবার উপর সমানভাবে ওয়াজিব।
(i) সচ্ছল ও সামর্থবান সন্তানদের উপর মাতাপিতার ভরণপোষণ সমানভাবে ওয়াজিব।
(ii) ছেলে মেয়ের কোনো তফাৎ নাই যদি তারা সবাই ব্যক্তিগতভাবে সচ্ছল থাকে।
(iii) ছেলে মেয়ের মধ্যে কোনো একজন বাবা-মায়ের ভরণপোষণ দিতে সক্ষম হলে, বাকিদের ওপর থেকে রহিত হবে না। বরং সবাই সমানভাবে মাতাপিতার দেখাশোনা করবে।
(iv) মাতাপিতাকে ভরণপোষণ দেওয়া সামর্থবান সকল সন্তানদের উপর সমানভাবে বর্তাবে। তবে মেয়েদের যেহেতু নিজস্ব কোনো ইনকাম থাকে না, তাই মেয়েদের উপর ওয়াজিব হবে না।
(২) বাবা-মায়ের ভরণপোষণের জন্য কোনো মেয়ে যদি স্বামীর সংসার থেকে কিছুটা ছাড় চায়, তাহলে তার অনুমতি না দেওয়ার অধিকার স্বামীর থাকবে।
(i) বাবা-মায়ের সেবাযত্নের জন্য তাদের এলাকায় গিয়ে থাকা এবং স্বামীকে কয়েক মাস পরপরই শুধুমাত্র কয়েকদিন করে সময় দেওয়া,স্বামীর অনুমতি ব্যতিত এমনটা জায়েয হবে না। বরং সাপ্তাহে একবার মাতাপিতাকে গিয়ে দেখে আসবে পারবে, এক্ষেত্রে স্বামীর অনুমতি লাগবে না।
(ii) বাবা - মায়ের ভরণপোষণের জন্য চাকুরীতে জয়েন করা, সেজন্য পরিবার,সন্তান,স্বামীকে সময় কম দেওয়া বা চাকুরীর জন্য স্বামীর থেকে দূরে অবস্থান করাও স্বামীর অনুমতির উপর নির্ভর করবে। বেপর্দা চাকুরী তো কখনো জায়েয হবে না।
এমন পরিস্থিতিতে স্বামীর উচিৎ স্ত্রীর মাতা-পিতাকে দেখভাল করা। এবং স্ত্রীর উচিৎ স্বামীকে সামর্থ্যর অধিক চাপ প্রয়োগ না করা। এবং বেপর্দা চাকুরী থেকে দূরে থাকা।
(৩) স্ত্রী যদি নিজ বাবা-মায়ের ভরণপোষণের জন্য চাকুরী করে কিন্তু সেটা তার স্বামীর পছন্দনীয় না হয়, তাহলে স্ত্রীর উচিত স্বামীর পছন্দ অপছন্দকে অত্যান্ত গুরুত্বসহকারে দেখা এবং বেপর্দার চাকুরী থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখা।
(৪) বাবা-মায়ের ভরণপোষণের জন্য যদি চাকুরী করতে গিয়ে স্ত্রীকে স্বামীর থেকে দূরে থাকতে হয় এবং এক্ষেত্রে বাবা-মাও যদি কন্যা হিসেবে তাদের মেয়ের কাছে এভাবে দূরে থেকে চাকুরী করতেই আদেশ করে, স্বামীর উচিত স্ত্রীকে এভাবে চাকুরীর অনুমোদন না দেয়া বরং স্ত্রীর মাতাপিতাকে দেখভাল করা। এবং স্ত্রীর উচিত এরকম কোনো পদক্ষেপের ধারেকাছেও না যাওয়া।
(৫) প্রশ্নের বিবরণমতে স্ত্রী স্বামীর আদেশ মানতে বাধ্য।