জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো, স্ত্রী গরিব হোক বা ধনী। অসুস্থ হোক সুস্থ। বৃদ্ধা হোক বা যুবতী,সর্বাবস্থায় স্ত্রীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব স্বামীর ওপর। এমনকি স্বামীর অনুমতিক্রমে স্ত্রী তার বাবার বাড়ি থাকলেও ভরণ-পোষণের অধিকারী হবে।
তবে স্বামীর অবাধ্য হয়ে স্ত্রী পিত্রালয়ে বা অন্য কোথাও চলে গেলে ভরণ-পোষণের অধিকারী হবে না।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
، اتَّقُوا اللَّهَ فِي النِّسَاءِ، فَإِنَّكُمْ أَخَذْتُمُوهُنَّ بِأَمَانَةِ اللَّهِ، وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنَّ بِكَلِمَةِ اللَّهِ، وَإِنَّ لَكُمْ عَلَيْهِنَّ أَنْ لَا يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ، أَحَدًا تَكْرَهُونَهُ، فَإِنْ فَعَلْنَ فَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ، وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ،
তোমরা নারীদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় করো। কেননা তাদেরকে তোমরা আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছো এবং আল্লাহর বিধান মোতাবেক তোমরা তাদের লজ্জাস্থানকে নিজেদের জন্য হালাল করেছো। তাদের উপর তোমাদের অধিকার আছে, তারা যেন তোমাদের অপছন্দনীয় ব্যক্তিকে তোমার ঘরে স্থান না দেয়। তারা এরূপ করলে তাদেরকে খুবই হালকা মারধর করো।
‘তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব তোমাদের ওপর। তোমরা তা স্বাভাবিকভাবে আদায় করবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৯০৫)
আরো জানুনঃ-
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য হয়ে নিজ পিত্রালয়ে বা অন্য কোথাও চলে গেলে ভরণ-পোষণের অধিকারী হবে না।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্ত্রী ভরনপোষণ এর অধিকার পাবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
رواه الحاكم في "المستدرك" (7330) عن ابن عمر رضي الله عنهما، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اثنان لا تجاوز صلاتهما رءوسهما: عبد آبق من مواليه حتى يرجع، وامرأة عصت زوجها حتى ترجع وصححه الألباني في صحيح الجامع برقم 136
রাসূল (ছাঃ) বলেন, দু’জন ব্যক্তির ছালাত তার মাথা অতিক্রম করবে না (কবুল হবে না)। (১) যে দাস তার মালিক হ’তে পলায়ন করেছে যতক্ষণ না সে ফিরে আসে। (২) অবাধ্য স্ত্রী যতক্ষণ না সে আনুগত্যে ফিরে আসে (হাকেম হা/৭২৩০; ছহীহাহ হা/২৮৮; ছহীহুত তারগীব হা/১৮৮৮)।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন
অবাধ্য স্ত্রীর নামাজ কবুল হবে না মর্মে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।
তবে সে যদি তওবা করে আবার আনুগত্য ফিরে আসে, তাহ’লে কবুল হবে।
قال المناوي في فيض القدير (1/ 150): " (امرأة عصت زوجها) بنشوز، أو غيره مما يجب عليها أن تطيعه، فلا تُرفع صلاتها كما ذُكر، (حتى ترجع) إلى طاعته فإباقه ونشوزها بلا عذر كبيرة. قالوا: ولا يلزم من عدم القبول عدم الصحة، فالصلاة صحيحة لا يجب قضاؤها، لكن ثوابها قليل أو لا ثواب فيها. أما لو أبق لعذر كخوف قتل أو فعل فاحشة أو تكليفه على الدوام ما لا يطيقه، أو عصت المرأة بمعصية ، كوطئه في دبرها أو حيضها، فثواب صلاتهما بحاله ، ولا طاعة لمخلوق في معصية الخالق" انتهى.
সারমর্মঃ-
ইমাম মুনাবী রহঃ বলেন, এখানে নামাজ কবুল না হওয়া দ্বারা নামাজই সহীহ হবেনা বিষয়টি এমন নহে। নামাজ সহীহ হয়ে যাবে,তার কাজা আবশ্যক হবেনা। তবে ছওয়াব কম হবে অথবা ছওয়াবই হবেনা।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
স্ত্রী অবাধ্য হলে বাধ্য করার জন্য করনীয়ঃ-
প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে উপদেশ দেওয়া ।
খুব ভালো ভাবে নিজে বুঝানো,তাতে কাজ না হলে মুরব্বিদের মাধ্যমে বুঝানো।
স্ত্রী বাবার বাসার মুরব্বিদের মাধ্যমে বুঝানো।
তাতে কাজ না হলে দ্বিতীয় পদক্ষেপ বিছানা পরিত্যাগ করা ।
তাকে আলাদা বিছানায় থাকতে দেয়া।
প্রয়োজনে আলাদা রুমেও থাকতে পারেন।
এতে কাজ না হলে কিছুদিনের জন্য বাবার বাসায় রেখে আসতে পারেন।
তাতেও কাজ না হলে তৃতীয় পদক্ষেপ মৃদু প্রহার করা।
,
আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, وَاضْرِبُوهُنَّ এবং তাদেরকে প্রহার করবে।
এর তাফসীরে হাফেয ইবন কাসীর [রহ.] বলেন, যদি উপদেশ প্রদান ও আলাদা রাখার পরও কোনো কাজ না হয়, স্ত্রীগণ সংশোধনের পথে ফিরে না আসে, তবে হালকা করে তাদেরকে প্রহার করবে।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
পরামর্শ থাকবে স্ত্রীকে বাধ্য করার জন্য ও পূর্ণ শরীয়তের উপর চালানোর জন্য উপরোক্ত পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করার।
এরপরে কাজ না হলে তাকে তালাক দিলে আপনার কোনো গুনাহ হবেনা।
বিস্তারিত জানুনঃ-