আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
105 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবা রকাতুহ উস্তায।

১) আমার গত প্রশ্নে  ২.৫ মাসে মিসক্যারেজ হওয়ার ফলে বলেছিলেন যে সেটাকে পূর্বের হায়েজ অভ্যাস অনুযায়ী হায়েজ ধরতে।এবং পরবর্তী দিনগুলো ইস্তেহাযা ধরতে।এখন  আমার ইস্তেহাযা ৩/৪ দিন হওয়ার পর ১ দিন সাদাস্রাব হয়েছে।কোন ব্লিডিং হয়নি।পরের দিন আবার ব্লিডিং শুরু হয়েছে।এটাকে কি ইস্তেহাযা ধরবো?   ইস্তেহাযা অবস্থায় কি রোজা এবং কোরআন পড়া যায়?
২) আমার গোল্ড প্রায় দেড় ভরির মতো। এবং রূপা আছে ৪ ভরির মতো।   এখন  আলাদা ভাবে তো কোনটার নেসাব পূর্ণ হচ্ছে না। ২ টা মিলে তো রুপার নেসাব পূর্ণ হচ্ছে।  এভাবে কি যাকাত আসবে? মানে রুপার হিসেবে তো সম্ভবত ৭৪০০০ হাজারের মতো টাকা আসছে।এই টাকা তো আমার ২ টা মিলিয়ে এসে পড়ছে।আমার উপর কি যাকাত ফর‍য হয়েছে। ডায়মন্ড কি যাকাতের মধ্যে ধরা হয়?


৩) জান্নাতে স্বামী -স্ত্রী একসাথে থাকে। কিন্তু স্ত্রী যদি স্বামীর আগে মারা যায়। এবং স্বামী পরবর্তীতে আবার বিবাহ করেন।সেক্ষেত্রে জান্নাতে স্বামী কোন স্ত্রীর সাথে থাকবে?  তদ্রুপ স্ত্রীর ক্ষেত্রেও সে কোন স্বামীকে জান্নাতে পাবে?
৪) আমি চাচ্ছি রোজার প্রত্যেকদিন কিছু টাকা সাদাকাহ করতে।কিন্তু সেটা একেবারে না। যেমন প্রতিদিন ৫ টাকা করে পুরো রোজার টাকা একজায়গায় রাখলাম বা একসাথেই ৫০০ টাকা ৩০ দিনের নিয়্যাতে রাখলাম। এবং রোজা শেষে দ্বীনের কোন খাতে সেটা দিলাম।যেহেতু রোজার মধ্যে সেখানে দেওয়া পসিবল হচ্ছে না। এক্ষেত্রে কি আমি  রোজার সমহ সাদাকাহ করার সওয়াব পাবো? নাকি প্রতিদিনের টা প্রতিদিনই দিয়ে দেওয়া লাগবে?
৫) যাকাতের টাকা বা ফেতরার টাকা  কি অন্য প্রান্তের মাজলুম ভাইদের বা দ্বীনের বড়ো কোন খাতে  মু_হিD  ভাইদের দেওয়া যাবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে। 
উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা।
(কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)

তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)

حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، - يَعْنِي ابْنَ أَبِي صَالِحٍ - عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، حَدَّثَتْنِي فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ أَنَّهَا أَمَرَتْ أَسْمَاءَ - أَوْ أَسْمَاءُ حَدَّثَتْنِي أَنَّهَا أَمَرَتْهَا فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ - أَنْ تَسْأَلَ، رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَمَرَهَا أَنْ تَقْعُدَ الأَيَّامَ الَّتِي كَانَتْ تَقْعُدُ ثُمَّ تَغْتَسِلُ - صحيح 

উরওয়াহ ইবনু যুবাইর (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতু আবূ হুবাইশ (রাঃ) আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি আসমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন অথবা আসমা-ই আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ফাতিমাহ বিনতু আবূ হুবাইশ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করার জন্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নির্দেশ দিলেন যে, (পূর্বের হিসেব মতো) হায়িযের দিনগুলোতে অপেক্ষা করবে, তারপর নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হলে গোসল করবে।
(আবু দাউদ ২৮১ নাসায়ী ২০১)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

فَإِنْ لَمْ يُجَاوِزْ الْعَشَرَةَ فَالطُّهْرُ وَالدَّمُ كِلَاهُمَا حَيْضٌ سَوَاءٌ كَانَتْ مُبْتَدَأَةً أَوْ مُعْتَادَةً وَإِنْ جَاوَزَ الْعَشَرَةَ فَفِي الْمُبْتَدَأَةِ حَيْضُهَا عَشَرَةُ أَيَّامٍ وَفِي الْمُعْتَادَةِ مَعْرُوفَتُهَا فِي الْحَيْضِ حَيْضٌ وَالطُّهْرُ طُهْرٌ. هَكَذَا فِي السِّرَاجِ الْوَهَّاجِ.
«الفتاوى الهندية» (1/ 37)

মাঝেমধ্যে হায়েয হওয়া আবার মাঝেমধ্যে বন্ধ হওয়া, দশ দিনের ভিতর সবকিছুই হায়েয হিসেবে গণ্য হবে।চায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন ঐ মহিলা প্রথমবার হোক বা এ ব্যাপারে অভ্যস্ত থাকুক।
যদি রক্তস্রাব দশদিন অতিক্রম করে যায়, তাহলে প্রথমবার এ পরিস্থিতির সম্মুখিন মহিলার জন্য দশদিন হায়েয। আর কোনো এক সংখ্যায় আদত ওয়ালী মহিলার জন্য তার পূর্বের আদতই হায়েয় এবং বাদবাকী সময় তুহুর। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭,কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/১০৮,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৩/১৭২)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/7474

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেদিন আপনার ব্লিডিং হয়েছে,এটা আপনার এই মাসের হায়েজ আসার দিন থেকে হিসাব করলে কত তম দিন হয়?
যদি ১১ তম দিন বা এর পরবর্তী দিন হয়ে থাকে,তাহলে এটি স্পষ্ট ইস্তেহাজা।
এ সময় নামাজ আদায় করতে হবে। কুরআন পড়া যাবে।

আর যদি ১০ দিনের আগেই হয়, তাহলে এটা যেহেতু ১০ দিনের মধ্যেই হয়েছে,তাই সেটি হায়েজ।
এই সময়ে নামাজ পড়া যাবেনা।

দশদিনের আগেই বন্ধ হলে পুরোটাই হায়েজ বলে গন্য হবে।
দশদিন পরেও যদি এমন কিছু আসে,তাহলে পূর্বের মাসের অভ্যাস হিসেবে দিন গুলু হায়েজ হবে, এর পর দিন থেকে ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা ধরা হবে। 
তখন নামাজ পড়তে হবে।

(০২)
আপনার কাছে যেই স্বর্ণ ও রুপা আছে,এটার বর্তমান বাজারের দাম ধরতে হবে।
দেড় স্বর্ণ আনুমানিক ১৫০০০০ টাকার মতো হবে।

আর চার ভরি রুপার দাম ১৪০০×৪=৫৬০০ টাকার মতো আসে।
মোট ১৫৫৬০০ টাকার মতো হয়।

সুতরাং এ হতে ৪০ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে। মোট ৩৮৯০ টাকা।

ডায়মন্ড যাকাতের মধ্যে ধরা হবেনা।

(০৩)
ক, সেক্ষেত্রে জান্নাতে স্বামী তার উভয় স্ত্রীর সাথেই থাকবে।

খ, ঐ মহিলা যে দুনিয়াতে দুই বা ততোধিক স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল,সে সর্বশেষ স্বামীর সাথে জান্নাতে থাকবে,অথবা প্রথম স্বামীর সাথে থাকবে( যদি বিবাহ বিচ্ছেদ না হয়ে থাকে),অথবা স্ত্রীকে এখতিয়ার দেয়া হবে।

(০৪)
রমজান মাস শেষ হওয়ার পর দান করলে রমজানে দান করার ছওয়াব পাওয়া যাবেনা।

যদি আপনি রমজান মাসের মধ্যেই দান করেন,সেক্ষেত্রে কেবল আপনি রমজানে দান করার ছওয়াব পাবেন।

এক্ষেত্রে ৩০ দিনেরটা এক দিনে দান করলেও হবে। আল্লাহ তায়ালা আপনার মনের নিয়ত অনুযায়ী নেকী দান করবেন,ইনশাআল্লাহ। 

(০৫)
তারা যদি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়ে থাকেন,যাকাত গ্রহনের হকদার হয়ে থাকেন,তাহলে তাদেরকে দেয়া যাবে।

যাকাতের খাত সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 242 views
0 votes
1 answer 132 views
0 votes
1 answer 183 views
...