আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
427 views
in সালাত(Prayer) by (5 points)
closed by
a) তায়াম্মুমের জন্য পাক মাটি নিয়ে আমার কাছে রেখে দিলাম সফরের সময়(আমার আশঙ্কা যে পানি পাবো না সামনে)। এই মাটি আমি কতদিন ব্যবহার করতে পারবো? কোন নির্দিষ্ট সময় আছে কি একই মাটি তায়াম্মুমের ক্ষেত্রে ব্যবহার এর ব্যাপারে? একজন বলেছেন ৪০/৪১ দিন এরকম নাকি হিসাব আছে।

b) পর্দার কারণে মেয়ে যদি বাসে বা যানে তায়াম্মুম করতে না পারে (তার কাছে পানিও নাই), তাহলে কি নামায ইশারায় পড়ে পরে আবার কাযা করবে?
দরসে উস্তাদ এইটাই বললেন যে পরে কাযা করতে। কারণ নামায কাযা আদায়ের করার সুযোগ আছে কিন্তু পর্দা খোলার গুনাহ তখনই হয়ে যাচ্ছে যা পরে মিটানোর উপায়  নাই। এইটা উনি নিশ্চিত না।
c) নৌপথে কসরের বিধান কি?
d) অনেকে জামাতে নামাযের সময় শেষ রাকাতের শেষ সিজদাহ্তে অনেকক্ষণ সিজদাহ্তে থাকে ইমাম উঠে যাওয়ার পরেও। এইটা কোন মাযহাব অনুযায়ী?  আর এইটা হানাফিরা পারবে?
closed

1 Answer

+1 vote
by (589,140 points)
selected by
 
Best answer
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(a)
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَلَمْ تَجِدُواْ مَاء فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُواْ بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُورًا
যদি পানিপ্রাপ্তি সম্ভব না হয়, তবে পাক-পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-তাতে মুখমন্ডল ও হাতকে ঘষে নাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ক্ষমাশীল।(সূরা নিসা-৪৩)

(জমিন ছাড়া) মাটি জাতীয় অন্যান্য জিনিসের উপরও তায়াম্মুম করা দুরুস্ত আছে; যেমন, মাটি, বালু, পাথর, বিলাতী মাটি, পাথর চুন, হরিতাল, সুরমা, গেরুমাটি ইত্যাদি। মাটি জাতীয় জিনিস না হইলে উহার উপর তায়াম্মুম জায়েয নহে; যেমন- সোনা, রূপা, রাং, গেহু, কাঠ, কাপড় এবং অন্যান্য শস্য ইত্যাদি। কিন্তু যদি এই সব জিনিসের উপর মাটি জমিয়া থাকে, তবে অবশ্য মাটির কারণে ইহার উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত হইবে।

ফাতাওয়ায়ে বর্ণিত রয়েছে,কোন জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে আর কোন জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে না।
(وَمِنْهَا الصَّعِيدُ الطَّيِّبُ) يَتَيَمَّمُ بِطَاهِرٍ مِنْ جِنْسِ الْأَرْضِ. كَذَا فِي التَّبْيِينِ كُلُّ مَا يَحْتَرِقُ فَيَصِيرُ رَمَادًا كَالْحَطَبِ وَالْحَشِيشِ وَنَحْوِهِمَا أَوْ مَا يَنْطَبِعُ وَيَلِينُ كَالْحَدِيدِ وَالصُّفْرِ وَالنُّحَاسِ وَالزُّجَاجِ وَعَيْنِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَنَحْوِهَا فَلَيْسَ مِنْ جِنْسِ الْأَرْضِ وَمَا كَانَ بِخِلَافِ ذَلِكَ فَهُوَ مِنْ جِنْسِهَا. كَذَا فِي الْبَدَائِعِ.
যে জিনিষ মাঠির জিনস বা প্রকার থেকে হবে,সে জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম জায়েয রয়েছে।যে জিনিস আগুনে দিলে জ্বলেও না, গলেও না তাহা মাটি জাতীয়। তাহার উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত আছে। যে জিনিস জ্বলিয়া ছাই হইয়া যায় বা গলিয়া যায়,যেমন স্বর্ণ রৌপ্য ইত্যাদি।তাহার উপর দুরুস্ত নহে।এবং ছাইয়ের উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত নহে।
(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬)
বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/5269

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এক মাঠি দ্বারা যতদিন সম্ভব তায়াম্মুম করতে পারবেন।এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নাই। ৪০/৪১ দিন মেয়াদ বলতে কিছু নাই। 


(b)
বাস বা যান বাহনে থাকার কারণে যদি কোনো মহিলা পর্দা করতে সক্ষম না হয়,এবং তায়াম্মুম করতেও সক্ষম না হয়,তাহলে ইশারায় নামায আদায় করবে,তবে যদি তায়াম্মুম করার সুযোগ থাকে,তাহলে তায়াম্মুম করে নামাযকে আদায় করবে,এবং পরে নামাযকে পূনরায় পড়ে নেবে।

যদি শতচেষ্টার পরও কোনো মহিলা পর্দা সম্মত অজু ও নামাযের স্থান না পায়। এবং তখন অজুর তুলনায় তায়াম্মুমকে পর্দার জন্য সুবিধাজনক মনে হয়, তাহলে মহিলা তায়াম্মুম করে নামাযকে আদায় করে নিবে।

যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে,যাতে নিজেকে পুরপুরুষের দৃষ্টি থেকে বাঁচিয়ে রাখতে।

যেহেতু পর্দা সম্মত নামাযের ব্যবস্থার চেষ্টা সে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত করেছে, তাই তায়াম্মুম দ্বারা আদায়কৃত ঐ নামাযকে আর দোহড়াতে হবে না। বরং তা যিম্মা থেকে আদায় হয়ে যাবে।

কিন্তু যদি কেউ পর্দার সাথে অজু ও নামায পড়ার চেষ্টা ব্যতীত ওয়াক্তের প্রথমেই তায়াম্মুম করে নেয়,এবং ঐ তায়াম্মুম দ্বারা নামায আদায় করে নেয়, তাহলে এই তায়াম্মুম দ্বারা আদায়কৃত নামাযকে পানি দ্বারা অজু সহ আবার পূনরায় আদায় করতে হবে।

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/9190


(c)
নৌপথ বা সমুদ্র পথে সফর করলে,৭৭ কিলো দূরে গেলে,সেখান থেকে কসর করতে হবে।কেউ যদি সমুদ্রে বসবাস করে,তাহলে যতদিন সে সমুদ্রে থাকবে,ততদিন সে মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে।কেননা সমুদ্রের অবস্থান এক জায়গায় স্থায়ী হয় না।সুতরাং সমুদ্রে কেউ বসবাস করলে,সে সর্বদাই মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে।

(d)
ইমাম সাহেবের অনুসরণ তিনভাবে হতে পারে।(১)ইমাম সাহেবের সাথে সাথেই রুকুন পরিবর্তন করা।(২) ইমাম সাহেবের যৎসামান্য পর রুকুন পরিবর্তন করা।(৩)ইমাম সাহেবের এক রুকুন থেকে পরিপূর্ণরূপে অন্য রুকুনে চলে যাওয়ার পর মুক্তাদির রুকুন পরিবর্তন করা।এই তিন পদ্ধতির সবকটিরই অনুমোদন রয়েছে।রুকুন ফরয হলে ইমাম সাহেবের অনুসরণ করে রুকুন পরিবর্তন করা ফরয।ওয়াজিব হলে ওয়াজিব।এবং সুন্নত হলে সুন্নত।তবে যে সমস্ত স্থানে ইমামের অনুসরণ না করার কথা বর্ণিত রয়েছে,সে গুলো ব্যতীত এ বিধান প্রযোজ্য হবে। (রদ্দুল মুহতার-১/৪৭১)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
তৃতীয় প্রকারের অনুসরণ করা যেতে পারে।তথা ইমাম সাহেবের সেজদা থেকে উঠার কিছুক্ষণ পর সেজদা থেকে উঠা যাবে।তবে বেশ দেড়ী করা যাবে না।ইমাম সাহেব অন্য রুকুন তথা তাশাহুদ শুরুর পূর্বেই সেজদা থেকে উঠে যেতে হবে।নতুবা ইমামের অনুসরণ না হওয়ার দরুণ মাকরুহে তানযিহি হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (5 points)
edited by
।,,,,,,,,,,,,,,,,,
by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...