জবাবঃ-
(a)
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَلَمْ تَجِدُواْ مَاء فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُواْ بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُورًا
যদি পানিপ্রাপ্তি সম্ভব না হয়, তবে পাক-পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-তাতে মুখমন্ডল ও হাতকে ঘষে নাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ক্ষমাশীল।(সূরা নিসা-৪৩)
(জমিন ছাড়া) মাটি জাতীয় অন্যান্য জিনিসের উপরও তায়াম্মুম করা দুরুস্ত আছে; যেমন, মাটি, বালু, পাথর, বিলাতী মাটি, পাথর চুন, হরিতাল, সুরমা, গেরুমাটি ইত্যাদি। মাটি জাতীয় জিনিস না হইলে উহার উপর তায়াম্মুম জায়েয নহে; যেমন- সোনা, রূপা, রাং, গেহু, কাঠ, কাপড় এবং অন্যান্য শস্য ইত্যাদি। কিন্তু যদি এই সব জিনিসের উপর মাটি জমিয়া থাকে, তবে অবশ্য মাটির কারণে ইহার উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত হইবে।
ফাতাওয়ায়ে বর্ণিত রয়েছে,কোন জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে আর কোন জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে না।
(وَمِنْهَا الصَّعِيدُ الطَّيِّبُ) يَتَيَمَّمُ بِطَاهِرٍ مِنْ جِنْسِ الْأَرْضِ. كَذَا فِي التَّبْيِينِ كُلُّ مَا يَحْتَرِقُ فَيَصِيرُ رَمَادًا كَالْحَطَبِ وَالْحَشِيشِ وَنَحْوِهِمَا أَوْ مَا يَنْطَبِعُ وَيَلِينُ كَالْحَدِيدِ وَالصُّفْرِ وَالنُّحَاسِ وَالزُّجَاجِ وَعَيْنِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَنَحْوِهَا فَلَيْسَ مِنْ جِنْسِ الْأَرْضِ وَمَا كَانَ بِخِلَافِ ذَلِكَ فَهُوَ مِنْ جِنْسِهَا. كَذَا فِي الْبَدَائِعِ.
যে জিনিষ মাঠির জিনস বা প্রকার থেকে হবে,সে জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম জায়েয রয়েছে।যে জিনিস আগুনে দিলে জ্বলেও না, গলেও না তাহা মাটি জাতীয়। তাহার উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত আছে। যে জিনিস জ্বলিয়া ছাই হইয়া যায় বা গলিয়া যায়,যেমন স্বর্ণ রৌপ্য ইত্যাদি।তাহার উপর দুরুস্ত নহে।এবং ছাইয়ের উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত নহে।
(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এক মাঠি দ্বারা যতদিন সম্ভব তায়াম্মুম করতে পারবেন।এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নাই। ৪০/৪১ দিন মেয়াদ বলতে কিছু নাই।
(b)
বাস বা যান বাহনে থাকার কারণে যদি কোনো মহিলা পর্দা করতে সক্ষম না হয়,এবং তায়াম্মুম করতেও সক্ষম না হয়,তাহলে ইশারায় নামায আদায় করবে,তবে যদি তায়াম্মুম করার সুযোগ থাকে,তাহলে তায়াম্মুম করে নামাযকে আদায় করবে,এবং পরে নামাযকে পূনরায় পড়ে নেবে।
যদি শতচেষ্টার পরও কোনো মহিলা পর্দা সম্মত অজু ও নামাযের স্থান না পায়। এবং তখন অজুর তুলনায় তায়াম্মুমকে পর্দার জন্য সুবিধাজনক মনে হয়, তাহলে মহিলা তায়াম্মুম করে নামাযকে আদায় করে নিবে।
যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে,যাতে নিজেকে পুরপুরুষের দৃষ্টি থেকে বাঁচিয়ে রাখতে।
যেহেতু পর্দা সম্মত নামাযের ব্যবস্থার চেষ্টা সে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত করেছে, তাই তায়াম্মুম দ্বারা আদায়কৃত ঐ নামাযকে আর দোহড়াতে হবে না। বরং তা যিম্মা থেকে আদায় হয়ে যাবে।
কিন্তু যদি কেউ পর্দার সাথে অজু ও নামায পড়ার চেষ্টা ব্যতীত ওয়াক্তের প্রথমেই তায়াম্মুম করে নেয়,এবং ঐ তায়াম্মুম দ্বারা নামায আদায় করে নেয়, তাহলে এই তায়াম্মুম দ্বারা আদায়কৃত নামাযকে পানি দ্বারা অজু সহ আবার পূনরায় আদায় করতে হবে।
(c)
নৌপথ বা সমুদ্র পথে সফর করলে,৭৭ কিলো দূরে গেলে,সেখান থেকে কসর করতে হবে।কেউ যদি সমুদ্রে বসবাস করে,তাহলে যতদিন সে সমুদ্রে থাকবে,ততদিন সে মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে।কেননা সমুদ্রের অবস্থান এক জায়গায় স্থায়ী হয় না।সুতরাং সমুদ্রে কেউ বসবাস করলে,সে সর্বদাই মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে।
(d)
ইমাম সাহেবের অনুসরণ তিনভাবে হতে পারে।(১)ইমাম সাহেবের সাথে সাথেই রুকুন পরিবর্তন করা।(২) ইমাম সাহেবের যৎসামান্য পর রুকুন পরিবর্তন করা।(৩)ইমাম সাহেবের এক রুকুন থেকে পরিপূর্ণরূপে অন্য রুকুনে চলে যাওয়ার পর মুক্তাদির রুকুন পরিবর্তন করা।এই তিন পদ্ধতির সবকটিরই অনুমোদন রয়েছে।রুকুন ফরয হলে ইমাম সাহেবের অনুসরণ করে রুকুন পরিবর্তন করা ফরয।ওয়াজিব হলে ওয়াজিব।এবং সুন্নত হলে সুন্নত।তবে যে সমস্ত স্থানে ইমামের অনুসরণ না করার কথা বর্ণিত রয়েছে,সে গুলো ব্যতীত এ বিধান প্রযোজ্য হবে। (রদ্দুল মুহতার-১/৪৭১)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
তৃতীয় প্রকারের অনুসরণ করা যেতে পারে।তথা ইমাম সাহেবের সেজদা থেকে উঠার কিছুক্ষণ পর সেজদা থেকে উঠা যাবে।তবে বেশ দেড়ী করা যাবে না।ইমাম সাহেব অন্য রুকুন তথা তাশাহুদ শুরুর পূর্বেই সেজদা থেকে উঠে যেতে হবে।নতুবা ইমামের অনুসরণ না হওয়ার দরুণ মাকরুহে তানযিহি হয়ে যাবে।