আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
101 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (5 points)

আসসালামু আলাইকুম, 

প্রশ্ন- ১। কর অফিসার হিসেবে কাজ করায় তো সমস্যা নেই। তবে কর অনেক সময় তো জুলুমের পর্যায়ে চলে যায়। সেক্ষেত্রে কর অফিসার হিসেবে কি গুনাহগার হতে হবে?

প্রশ্ন- ২। নিরীক্ষা ও হিসাব অফিসারদের কাজ তো হল সরকারের সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগে Chief Accounts Officer হিসেবে কাজ করা। সরকারের আয় ব্যয়ের সকল হিসাব রাখা। এর মধ্যে সুদি কার্যক্রম থাকলে সেই হিসাব রাখায় সাহায্যকারী হলে গুনাহ হবে কিনা? 

প্রশ্ন- ৩। শুল্ক অফিসার হিসেবে কাজ তো হল শুল্ক ফাকি ও চোরাচালান ধরা।  সেক্ষেত্রে দেশের বড় মাফিয়া বা ঊর্ধ্বতন কারো অবৈধ জিনিস পাচার করতে অপারগতাবশত নিজের চুপ থাকা লাগলে সেক্ষেত্রে কি গুনাহগার হতে হবে? নাকি অপারগ থাকার কারণে ঐ কাজ জায়েয নাজায়েযের কিছু আসবে না

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
ট্যাক্স সম্পর্কে চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " (৩৫/১৪)  এভাবে বর্ণিত রয়েছে যে,
ذَهَبَ الْفُقَهَاءُ إِلَى أَنَّ لِلإِْمَامِ فَرْض َضَرَائِبَ عَلَى الْقَادِرِينَ لِوُجُوهِ الْمَصَالِحِ الْعَامَّةِ وَلِسَدِّ حَاجَاتِ الْمُسْلِمِينَ
قَال القرطبي: اتَّفَقَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّهُ إِذَا نَزَلَتْ بِالْمُسْلِمِينَ حَاجَةٌ بَعْدَ أَدَاءِ الزَّكَاةِ فَإِنَّهُ يَجِبُ صَرْفُ الْمَال إِلَيْهَا
 (١) .(١) القرطبي ٢ / ٢٤٢، وابن عابدين ٢ / ٥٧.
الموسوعة الفقهية الكويتية ٣٥/١٤
ভাবার্থঃমহামান্য ফুকাহায়ে কেরাম মনে করেন যে,
সরকার জনসাধারণের সেবা ও বিভিন্ন প্রয়োজন মিটাতে উপার্জন সক্ষম নাগরিকদের উপর ট্যাক্স অত্যাবশ্যকীয় করতে পারবে,বৈধ রয়েছে।
ইমাম কুরতুবী রাহ উদ্ধৃতিতে বলা হয় যে, তিনি বলেন,সম্পদশালী নাগরিকগণ যাকাত প্রদাণের পরও মুসলিম জনসাধারণের আর্থিক ঘাটতি দেখা দিলে  সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ট্যাক্স প্রদান করা তাদের উপর ওয়াজিব।(তাফসীরে কুরতুবী-২/২৪২রদ্দুল মুহতার-ইবনে আবেদিন;২/৫৭।)(শেষ) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/700


সরকারী ট্যাক্স উসূল করতে যেয়ে কারো প্রতি জুলুম নির্যাতন করা যাবে না।কেননা হাদীসে এসেছে,
جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: اتَّقُوا الظُّلْمَ، فَإِنَّ الظُّلْمَ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَاتَّقُوا الشُّحَّ، فَإِنَّ الشُّحَّ أَهْلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ، وَحَمَلَهُمْ عَلَى أَنْ سَفَكُوا دِمَاءَهُمْ، وَاسْتَحَلُّوا مَحَارِمَهُمْ.
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা অত্যাচার করা থেকে বিরত থাকো। কেননা অত্যাচার কিয়ামতের দিন গভীর অন্ধকাররূপে আসবে। তোমরা কৃপণতা থেকে বিরত থাকো। কেননা এই কৃপণতা তোমাদের পূর্ববতীদের ধ্বংস করেছে এবং তাদেরকে পরস্পরের রক্তপাত করতে এবং তাদের প্রতি হারামসমূহকে হালালরূপে গ্রহণ করতে উদ্যত করেছে (মুসলিম, আবু দাউদ)।(আল আদাবুল মুফরাদ-৪৮৫)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কর অফিসারের জন্য জুলুমের পর্যায়ে চলে যাওয়া কখনো জায়েয হবে না। সেক্ষেত্রে কর অফিসার অবশ্যই গুনাহগার হবেন।

(২)
নিরীক্ষা ও হিসাব অফিসারদের কাজ হল, সরকারের সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগে Chief Accounts Officer হিসেবে কাজ করা। সরকারের আয় ব্যয়ের সকল হিসাব রাখা। এর মধ্যে যদি সুদি কার্যক্রম চলে আসে,এবং সেই হিসাব রাখায় সাহায্য করা হয়,তাহলে দেখতে হবে, সম্পূর্ণ কাজের মধ্যে সুদের হিসাব নিকাশ কম না বেশী? যদি কম থাকে, তাহলে উক্ত চাকুরী জায়েয হবে। এবং কাজের পার্সেন্টিজ হিসাব করে, যত পার্সেন্ট সুদের হিসাব আসবে, তত পার্সেন্ট টাকা সদকাহ করে নিলেই হবে।


(৩)
শুল্ক অফিসার হিসেবে কাজ তো হল শুল্ক ফাকি ও চোরাচালান ধরা।  সেক্ষেত্রে দেশের বড় মাফিয়া বা ঊর্ধ্বতন কারো অবৈধ জিনিস পাচারে অপারগতাবশত নিজের চুপ থাকা অবশ্যই গুনাহগের অন্তর্ভুক্ত হবে। প্রয়োজনিয় সকল প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করার সর্বোচ্ছ  চেষ্টা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...