জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
«لاَ تَنْثُرُوهُ نَثْرَ الدَّقْل وَلاَ تَهُذُّوهُ كَهَذِّ الشِّعْرِ ، قِفُوا عِنْدَ عَجَائِبِهِ ، وَحَرِّكُوا بِهِ الْقُلُوبَ ، وَلاَ يَكُونُ هَمُّ أَحَدِكُمْ آخِرَ السُّورَةِ» .
‘তোমরা একে (কুরআন) নষ্ট খেজুরের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ো না কিংবা কবিতার মতো গতিময় ছন্দেও পড়ো না। বরং এর যেখানে বিস্ময়ের কথা আছে সেখানে থামো এবং তা দিয়ে হৃদয়কে আন্দোলিত করো। আর সূরার সমাপ্তিতে পৌঁছা যেন তোমাদের কারো লক্ষ্য না হয়।’
ইবন আবি শাইবাহ, মুসান্নাফ: ২/২৫৬, নং ৮৭৩৩।
★সুতরাং কুরআন তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে আয়াতের মাঝখানে থেমে থেমে, আগের শব্দ না মিলিয়ে তিলাওয়াত করা উত্তম নয়।
যদি ইচ্ছা করে এমন স্থানে ওয়াকফ করে যা অর্থের বিকৃতি ঘটায় তাহলে তা হারাম।
উদাহরণস্বরূপ:
আল্লাহ তাআলা বলেন,
والله لاَ يَسْتَحْيِي مِنَ الحق
“আর আল্লাহ লজ্জা করেন না হকের ব্যাপারে।”(সূরা আহযাব: ৫৩)
কেউ যদি খারাপ উদ্দেশ্যে لاَ يَسْتَحْيِي “আল্লাহ লজ্জা করেন না” বলে থেমে যায় তাহলে তারা হারাম হবে। কারণ তা আয়াতের মূল উদ্দেশ্যকে বিকৃতি ঘটায়।
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,
والله لاَ يَهْدِي القوم الفاسقين
“আর আল্লাহ হেদায়েত দেন না ফাসিক সম্প্রদায়কে।(সূরা সফ: ৫)
এখানে কেউ যদি والله لاَ يَهْدِي “আর আল্লাহ হেদায়েত দেন না…”এতটুকু পড়ে থেমে যায় তাহলে তা হারাম হবে। কারণ তা আয়াতের মূল উদ্দেশ্যকে পরিবর্তন করে দেয়।
শায়েখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলিল বলেনঃ
কেউ যদি জেনে-বুঝে আয়াতের অর্থ বিকৃত করার উদ্দেশ্যে এভাবে পড়ে তাহলে সে মুসলিম থাকবে না।
কেউ যদি জেনে-বুঝে আয়াতের অর্থ বিকৃত করার উদ্দেশ্যে এভাবে পড়ে তাহলে সে মুসলিম থাকবে না। কারণ সে কুরআনের বিকৃতি ঘটিয়েছে। কিন্তু নি:শ্বাস শেষ হওয়ার কারণে যদি উক্ত স্থানে থামা হয় তাহলে উক্ত শব্দটি অথবা কিছু আগে থেকে পুনরায় ফিরিয়ে পড়লে আর কোন সমস্যা থাবে না ইনশাআল্লাহ।
অথবা যেখানে থামার চিহ্ন ছিল সেখানে না থেমে এক শ্বাসে পড়া চালিয়ে যাওয়া হয় তাহলে তাতেও গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ।
,
অনুরূপভাবে আরবি ভাষা না জানার কারণে (অর্থ না জানার কারণে) কোথাও ওয়াকফ করা হলে তার পর থেকে পড়া চালিয়ে গেলে (আগের শব্দকে পুনরাবৃত্তি না করে) তাতেও গুনাহ হবে না। কারণ মূলত: ইচ্ছা করে আয়াতের অর্থ বিকৃত করা তার উদ্দেশ্য নয়।
★কোন ছুরতে গুনাহ হবে,আর কোনো ছুরতে গুনাহ হবেনা তাহা উপরে উল্লেখ রয়েছে।
বিস্তারিত জানুনঃ-
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
আয়াতের মাঝে ওয়াকফ চিহ্ন না থাকা সত্বেও ওয়াকফ করলে যদি উক্ত আয়াতের অর্থের কোনো হেরফের না হয় এবং পরিপূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে সেক্ষেত্রে ওয়াকফ করা জায়েজ আছে।
তবে এক্ষেত্রে তার জন্য কুরআনের প্রতিটি শব্দের অর্থ বুঝার যোগ্যতা থাকতে হবে।
নতুবা কোথায় অর্থ বিকৃত হয়ে যাবে,সে বুঝতেই পারবেনা।
আয়াতের মাঝে ওয়াকফ চিহ্ন না থাকা সত্বেও কারীরা যদি ওয়াকফ করে,সেক্ষেত্রে যদি নিশ্চিত ভাবে উক্ত আয়াতের অর্থের কোনো হেরফের না হয় এবং পরিপূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে সেক্ষেত্রে সেসব স্থানের ক্ষেত্রে কারীদের আনুগত্য করা জায়েজ আছে।
তবে এক্ষেত্রে অর্থ বিকৃত হচ্ছে কিনা,তাহা বিজ্ঞ আরবি ভাষাবিদ থেকে জেনে নিতে হবে।
★কুরআন তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে এরকম ওয়াকফের রুলস মেনে চলা আবশ্যক,নতুবা অনেক ক্ষেত্রে অর্থ বিকৃত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তাই ওয়াকফ নেই,এমন স্থানে ওয়াকফ করলে আগের শব্দকে পুনরাবৃত্তি করে পড়তে হবে।
(০২)
এছাড়া কোনো আয়াতে ওয়াকফের চিহ্ন থাকলেও ঐ স্থানে ওয়াকফ না করলে যদি অর্থের কোনো পরিবর্তন না হয় সেক্ষেত্রে ওয়াকফ না করে মিলিয়ে পড়া যাবে।
গুনাহ হবেনা।