আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
57 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
প্রশ্ন ১ _ অনেক ক্বারীর কুরআন তিলাওয়াতের সময় কোনো আয়াতের মাঝে কোনোরূপ ওয়াকফ চিহ্ন না থাকলেও এমন জায়গায় ওয়াকফ করেন এবং পুনরায় মিলিয়ে পড়েন না।
যেমন :
১.. Al-Bayyinah 98:5

وَمَاۤ اُمِرُوْۤا اِلَّا لِيَعْبُدُوا اللّٰهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ ۙ  حُنَفَآءَ وَيُقِيْمُوا الصَّلٰوةَ وَيُؤْتُوا الزَّكٰوةَ وَذٰلِكَ دِيْنُ الْقَيِّمَةِ ؕ
এখানে,  وَيُؤْتُوا الزَّكٰوةَ পড়ে ওয়াকফ করে গোল তা এর ওয়াকফ করেছেন।  এরপর তিলাওয়াত করেছেন وَذٰلِكَ دِيْنُ الْقَيِّمَةِ ؕ।
২.. Al-Kahf 18:14

وَّرَبَطْنَا عَلٰي قُلُوْبِهِمْ اِذْ قَامُوْا فَقَالُوْا رَبُّنَا رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ لَنْ نَّدْعُوَا۠ مِنْ دُوْنِهٖۤ اِلٰـهًا لَّقَدْ قُلْنَاۤ اِذًا شَطَطًا
একইভাবে এখানেও,  السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ এর পর ওয়াকফ করে لَنْ نَّدْعُوَا۠ مِنْ থেকে তিলাওয়াত করেছেন।
এমন আরো অনেক সূরার অনেক আয়াতেই দেখি ক্বারীরা এভাবে তিলাওয়াত করেন।  ওয়াকফের চিহ্ন না থাকলেও ওয়াকফ করেন এবং পুনরায় মিলিয়ে পড়েন না।  এবং এভাবে তিলাওয়াতে ঐ আয়াতের অর্থ ঠিক থাকে।  উনারা পরিপূর্ণ বাক্য প্রকাশ করে এমন জায়গায়ই ওয়াকফ করেন।
উনাদের অনুসরণ করে এভাবে কী পড়া যাবে?
কুরআন তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে এরকম ওয়াকফের রুলস মেনে চলা কী আবশ্যক?
আয়াতের মাঝে ওয়াকফ চিহ্ন না থাকা সত্বেও ওয়াকফ করলে যদি উক্ত আয়াতের অর্থের কোনো হেরফের না হয় এবং পরিপূর্ণ বাক্য প্রকাশ করে সেক্ষেত্রে ওয়াকফ করার হুকুম কী?
প্রশ্ন ২_ এছাড়া কোনো আয়াতে ওয়াকফের চিহ্ন থাকলেও  ঐ স্থানে ওয়াকফ না করলে যদি অর্থের কোনো পরিবর্তন না হয় সেক্ষেত্রে কী ওয়াকফ না করে মিলিয়ে পড়া যাবে?


উপরোক্ত ২ ভাবে তিলাওয়াত করলে কী গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (675,960 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,

«لاَ تَنْثُرُوهُ نَثْرَ الدَّقْل وَلاَ تَهُذُّوهُ كَهَذِّ الشِّعْرِ ، قِفُوا عِنْدَ عَجَائِبِهِ ، وَحَرِّكُوا بِهِ الْقُلُوبَ ، وَلاَ يَكُونُ هَمُّ أَحَدِكُمْ آخِرَ السُّورَةِ» .

‘তোমরা একে (কুরআন) নষ্ট খেজুরের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ো না কিংবা কবিতার মতো গতিময় ছন্দেও পড়ো না। বরং এর যেখানে বিস্ময়ের কথা আছে সেখানে থামো এবং তা দিয়ে হৃদয়কে আন্দোলিত করো। আর সূরার সমাপ্তিতে পৌঁছা যেন তোমাদের কারো লক্ষ্য না হয়।’
ইবন আবি শাইবাহ, মুসান্নাফ: ২/২৫৬, নং ৮৭৩৩।

★সুতরাং কুরআন তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে আয়াতের মাঝখানে থেমে থেমে, আগের শব্দ না মিলিয়ে তিলাওয়াত করা উত্তম নয়।

যদি ইচ্ছা করে এমন স্থানে ওয়াকফ করে যা অর্থের বিকৃতি ঘটায় তাহলে তা হারাম।

উদাহরণস্বরূপ:
আল্লাহ তাআলা বলেন,
والله لاَ يَسْتَحْيِي مِنَ الحق
“আর আল্লাহ লজ্জা করেন না হকের ব্যাপারে।”(সূরা আহযাব: ৫৩)

কেউ যদি খারাপ উদ্দেশ্যে لاَ يَسْتَحْيِي “আল্লাহ লজ্জা করেন না” বলে থেমে যায় তাহলে তারা হারাম হবে। কারণ তা আয়াতের মূল উদ্দেশ্যকে বিকৃতি ঘটায়।

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,

والله لاَ يَهْدِي القوم الفاسقين

“আর আল্লাহ হেদায়েত দেন না ফাসিক সম্প্রদায়কে।(সূরা সফ: ৫)

এখানে কেউ যদি والله لاَ يَهْدِي “আর আল্লাহ হেদায়েত দেন না…”এতটুকু পড়ে থেমে যায় তাহলে তা হারাম হবে। কারণ তা আয়াতের মূল উদ্দেশ্যকে পরিবর্তন করে দেয়।

শায়েখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলিল বলেনঃ
কেউ যদি জেনে-বুঝে আয়াতের অর্থ বিকৃত করার উদ্দেশ্যে এভাবে পড়ে তাহলে সে মুসলিম থাকবে না।
কেউ যদি জেনে-বুঝে আয়াতের অর্থ বিকৃত করার উদ্দেশ্যে এভাবে পড়ে তাহলে সে মুসলিম থাকবে না। কারণ সে কুরআনের বিকৃতি ঘটিয়েছে। কিন্তু নি:শ্বাস শেষ হওয়ার কারণে যদি উক্ত স্থানে থামা হয় তাহলে উক্ত শব্দটি অথবা কিছু আগে থেকে পুনরায় ফিরিয়ে পড়লে আর কোন সমস্যা থাবে না ইনশাআল্লাহ।
অথবা যেখানে থামার চিহ্ন ছিল সেখানে না থেমে এক শ্বাসে পড়া চালিয়ে যাওয়া হয় তাহলে তাতেও গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ।
,
অনুরূপভাবে আরবি ভাষা না জানার কারণে (অর্থ না জানার কারণে) কোথাও ওয়াকফ করা হলে তার পর থেকে পড়া চালিয়ে গেলে (আগের শব্দকে পুনরাবৃত্তি না করে) তাতেও গুনাহ হবে না। কারণ মূলত: ইচ্ছা করে আয়াতের অর্থ বিকৃত করা তার উদ্দেশ্য নয়।

★কোন ছুরতে গুনাহ হবে,আর কোনো ছুরতে গুনাহ হবেনা তাহা উপরে উল্লেখ রয়েছে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
আয়াতের মাঝে ওয়াকফ চিহ্ন না থাকা সত্বেও ওয়াকফ করলে যদি উক্ত আয়াতের অর্থের কোনো হেরফের না হয় এবং পরিপূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে সেক্ষেত্রে ওয়াকফ করা জায়েজ আছে।

তবে এক্ষেত্রে তার জন্য কুরআনের প্রতিটি শব্দের অর্থ বুঝার যোগ্যতা থাকতে হবে।
নতুবা কোথায় অর্থ বিকৃত হয়ে যাবে,সে বুঝতেই পারবেনা।

আয়াতের মাঝে ওয়াকফ চিহ্ন না থাকা সত্বেও কারীরা যদি ওয়াকফ করে,সেক্ষেত্রে যদি নিশ্চিত ভাবে উক্ত আয়াতের অর্থের কোনো হেরফের না হয় এবং পরিপূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে সেক্ষেত্রে সেসব স্থানের ক্ষেত্রে কারীদের আনুগত্য করা জায়েজ আছে।

তবে এক্ষেত্রে অর্থ বিকৃত হচ্ছে কিনা,তাহা বিজ্ঞ আরবি ভাষাবিদ থেকে জেনে নিতে হবে।

★কুরআন তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে এরকম ওয়াকফের রুলস মেনে চলা আবশ্যক,নতুবা অনেক ক্ষেত্রে অর্থ বিকৃত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তাই ওয়াকফ নেই,এমন স্থানে ওয়াকফ করলে আগের শব্দকে পুনরাবৃত্তি করে পড়তে হবে।

(০২)
এছাড়া কোনো আয়াতে ওয়াকফের চিহ্ন থাকলেও ঐ স্থানে ওয়াকফ না করলে যদি অর্থের কোনো পরিবর্তন না হয় সেক্ষেত্রে ওয়াকফ না করে মিলিয়ে পড়া যাবে।

গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...