بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، قَالَ:
أَخْبَرَنَا ح وحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ دَاوُدَ
بْنِ عَمْرٍو، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي زَكَرِيَّا، عَنْ أَبِي
الدَّرْدَاءِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
إِنَّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ، وَأَسْمَاءِ
آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ
আবূ দারদা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামাতের দিন তোমাদেরকে, তোমাদের ও তোমাদের
পিতাদের নাম ধরে ডাকা হবে। তাই তোমরা তোমাদের সুন্দর নামকরণ করো। (আহমাদ ২১৬৯৩, আবূ দাঊদ ৪৯৪৮, য‘ঈফ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ১২২৭, য‘ঈফুল জামি‘
২০৩৬, সহীহ
ইবনু হিব্বান ৫৮১৮,
শু‘আবুল ঈমান ৮৬৩৩,
সুনানুদ্ দারিমী ২৬৯৪,
হিলইয়াতুল আওলিয়া ৫/১৫২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৭৮৬।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ وَالْمَعْصُوْمُ
مَنْ عَصَمَ اللهُ ‘নিষ্পাপ হল সেই, যাকে আল্লাহ রক্ষা করেন’ (সহীহ বুখারী,
হা/৬৬১১; নাসাঈ, হা/৪২০২)
এছাড়া রাসূলুল্লাহ সা. সাহাবীদের মধ্যে কারো মন্দ নাম থাকলে তা পরিবর্তন করে সুন্দর নাম রেখেছেন মর্মে
অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেমন, মুহাম্মাদ ইবনু আমর ইবনু ‘আত্বা রহ. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার শিশু
কন্যার নামকরণ করেছিলাম ‘বাররাহ’ নামে। সে সময় যায়নাব বিনতু আবী সালামাহ রা. আমাকে বললেন যে, রাসূলুল্লাহ সা. এ নাম রাখতে নিষেধ
করেছেন। আমার নামও ‘বাররাহ’ (অর্থাৎ পুণ্যবতী)’ রাখা হয়েছিল। তাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা নিজেই
স্বীয় আত্মাকে পরিশুদ্ধ বলে দাবি কর না। বরং আল্লাহ তা‘আলাই অধিকতর জ্ঞাত তোমাদের মাঝের
নেককার ও পুণ্যবানদের সম্পর্কে। অতঃপর তারা বলল, তবে আমরা তার কী নামকরণ করব? তিনি বললেন, তার নাম রাখ
যাইনাব’ (সহীহ মুসলিম, হা/২১৪০-২১৪২; আবূ দাঊদ, হা/৪৯৫৩; মিশকাত, হা/৪৭৫৬)।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. মা‘ছূমা
(معصومة) শব্দটি আরবী। এর অর্থ হল- المحفوظ البعيد عن المعاصي والأخطاء ‘সংরক্ষিত,
গুনাহ এবং ভুলভ্রান্তি থেকে মুক্ত’ বা নিষ্পাপ নারী, পবিত্র ও নিরীহ৷ যাকে
আমরা এক কথায় নিষ্পাপ বলে থাকি। শব্দগত ও অর্থগত ভাবে উক্ত নাম রাখা জায়েয আছে। আল্লাহ
তায়ালা যেন উক্ত নামের নারীকে গুনাহ থেকে হেফাজত করেন এই প্রত্যাশায় এই নাম রাখা যাবে।
এতে গুনাহ হবে না। সুতরাং নামটি পরিবর্তন করা আবশ্যক নয়।
তবে কোন কোন স্কলারের মতে উক্ত নাম না রাখাই শ্রেয়। কারণ, এ ধরণের
শব্দ দ্বারা নামকরণ করতে রাসূলুল্লাহ সা. নিষেধ করেছেন। অতএব
উক্ত শব্দ দ্বারা নামকরণ করা থেকে বিরত থাকা উচিৎ।
২. জন্মসনদ ও সার্টিফিকেটে নাম পরিবর্তন করতে পারলে সেটি করার চেষ্টা
করবেন। আর যদি বিষয়টি আপনার জন্য কষ্টকর হয়, সেক্ষেত্রে যদি আপনার পরিবার ও ঘনিষ্ঠ
বান্ধবীরা শুধু নতুন নামে ডাকে। তাহলে পরকালে আপনাকে নতুন নামে ডাকা হবে ইনশাআল্লাহ।
৩. মা-বাবা সৎকর্মশীল হোক বা পাপী ও হত্যাকারী হোক, এমনকি কাফিরই
হোক, তবু
তাদের সঙ্গে সদাচরণ করা সন্তানের ওপর অপরিহার্য। যদিও মা-বাবা স্ব স্ব পাপের শাস্তি
আল্লাহ তাআলার নিকট ভোগ করবে। কিন্তু সন্তানদের পাপী মা-বাবার সঙ্গেও অসদাচরণ করা বৈধ
হবে না।
হ্যাঁ, যদি মা-বাবা শরিয়তবিরোধী কোনো কাজের জন্য সন্তানকে আদেশ দেয়, তাহলে সন্তানরা
তাদের ওই হুকুম অমান্য করে তা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা আল্লাহর হুকুম অমান্য করে
অন্য কারো হুকুম মান্য করা যাবে না। তবে সে ক্ষেত্রেও তাদের মা-বাবার সঙ্গে অসদাচরণ
করা বৈধ নয়। কোনো মা-বাবা যদি সন্তানের ওপর অত্যাচার করে, তবে তাদের জন্য
দোয়া করতে হবে।
যখন তাদের মন ভালো থাকে তখন তাদের বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে।
তবে কোনো অবস্থায়ই খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। (আল মুজামুল কাবির
লিততাবারি, হাদিস
: ২২০২, জখিরাতুল
উকবা : ২৬/১২৮)
সুতরাং তাদের হেদায়াতের জন্য দোয়া করার পাশাপাশি নফল সদকা করা জায়েয আছে।
৪. একত্রে
সমস্ত রোগ থেকে মুক্তি লাভ উদ্দেশ্যে সাধ্যানুযায়ী একত্রে সদকা করাই যথেষ্ঠ।
প্রতিটি রোগের জন্য পৃথক পৃথক সদকা করার প্রয়োজন নেই। তবে কেউ যদি প্রতিটি রোগের
জন্য ভিন্ন ভিন্ন সদকা করে তাতেও কোন গুনাহ হবে না। এটিও জায়েয আছে।