আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
82 views
in পবিত্রতা (Purity) by (19 points)
১. দাতের ফাঁকে খাবার আটকে থাকা অবস্থায় ফরজ গোসল করলে কি তা আদায় হবে?

২. আমার পেটে গ্যাসের সমস্যা আছে। আমার সবসময় পায়াখানার রাস্তায় বায়ু বের হচ্ছে বলে অনুভূত হয়। যেমনঃ পায়খানার রাস্তায় বাতাস ফসকে যাচ্ছে,বায়ু আটকে আছে,বুদবুদের মত বায়ু বের হচ্ছে,সরিষা দানার মত কিছু বের হচ্ছে এমন। আমার ভুল ধারণা কিনা যাচাই করেছি,কিন্তু আমি  নিশ্চিত যে এমনটা অনুভূতি হচ্ছে।সাধারণত যেমন বেগ পেয়ে বায়ু নির্গত হয় তেমন কিন্তু ওয়াক্তের ভিতর তিন/চার বার হয়। তবে পূর্বে উল্লেখিত সমস্যা গুলো অনূভুত হতে থাকে। আমি এক ওয়াক্তের ভিতর ৬/৭ বারও অজু করে নামাজ পড়েছি। তবে এমন অবস্থা থেকে পুরোপুরি ভালো অবস্থায় নামাজ আদায় হয় না,আবার অনেক সময় ৪/৫ বার চেষ্টায় ১ বার পড়তে পারি।আমি বছর যাবত এভাবে কাটাচ্ছি।মাঝে পাত্তা না দিয়েই নামাজ পড়েছি, এখন আবার সাহস হচ্ছে না,মনে হয়েছে সমস্যা বেড়েছে।। এমন অবস্থায় আমি কিভাবে নামাজ কন্টিনিউ করবো?

৫. বায়ুর বেগ আসলে যখন চেপে রাখি, অনেক সময় বেগ বেশি হলে মনে হয় চেপে রাখলেও বায়ু বের হচ্ছে। এমন অবস্থায় কি নামাজ ছেড়ে দিবো নাকি চলমান রাখব।

★আমি ৪০ দিন তাকবীরে উলা পেতে চাই। ৪ ও ৫ নং সমস্যার মধ্যে আমি কি এই আমল করতে পারি,কোন উপায় আছে?

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
দাতের ফাঁকে খাবার আটকে থাকা অবস্থায় ফরজ গোসল করলে তা আদায় হবে।
তবে খাবার বের করে ফেলাই সতর্কতা।

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ-

ولو کان سنہ مجوفاً فبقي فیہ أو بین أسنانہ طعام أو درن رطب في أنفہ تم غسلہ علی الأصح کذا فی الزاھدي، والاحتیاط أن یخرج الطعام عن تجویفہ ویجری الماء علیہ ھکذا في فتح القدیر (الفتاوی الھندیة، کتاب الطھارة، الباب الثاني فی الغسل، ۱: ۱۳، ط: المطبعة الکبری الأمیریة، بولاق، مصر)۔
সারমর্মঃ-
কাহার দাঁতের মাঝে যদি খাদ্য আটকে থাকে,সেক্ষেত্রেও তার ফরজ গোসল আদায় হয়ে যাবে। তবে সতর্কতা হলো দাঁতের ফাকা হতে খাবার বের করে দেয়া,এবং তার মাঝেও পানি জারী করে দেয়া।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، قَالَا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح : 

‘আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম ৩৬২ (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর উযু নষ্ট হওয়ার সন্দেহ হলেও ঐ অবস্থায় সালাত আদায় করা জায়িয,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৬)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ

ব্যাখ্যা: قَوْلُهٗ (حَتّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَو يَجِدَ رِيْحًا) (যতক্ষণ না সে বায়ু বের হওয়ার শব্দ বা নির্গত বায়ুর গন্ধ পাবে ততক্ষণ নামাজ ছেড়ে আসবে না)। এর অর্থ হলো যতক্ষণ না সে শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া বা অন্য যে কোন পন্থায় তার বায়ু নির্গত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় ততক্ষণ নামাজ পরিত্যাগ করবে না বা ছেড়ে আসবে না। তবে এতে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শুধুমাত্র শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়াটিই শর্ত নয়।

এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে, শারী‘আতের কোন বিষয়ে সন্দেহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত বিষয় বাতিল হয়ে যাবে না। অতএব যার সন্দেহ হবে বায়ু নির্গত হয়েছে কিনা তবে সে তার অজু ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবে। নিশ্চিত না হাওয়া পর্যন্ত এ সন্দেহ তার কোন ক্ষতি করবে না। আর এটি অন্যান্য বিষয়েও সমভাবে প্রযোজ্য।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
যদি আপনি নামাজের মধ্যে বায়ু বের হওয়ার আওয়াজ/গন্ধ না পান,বায়ু বের হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত না হোন,সেক্ষেত্রে নামাজ কন্টিনিউ করবেন।

আর যদি আপনি বায়ু বের হওয়ার আওয়াজ/গন্ধ পান, বা বায়ু বের হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত  হোন,সেক্ষেত্রে নামাজ ছেড়ে দিয়ে অযু করে এসে অবশিষ্ট নামাজ আদায় করবেন।
যেমন রুকু অবস্থায় অযু ভেঙ্গে গেলে অযু করে এসে সেই রুকু থেকেই নামাজ আদায় করবেন। একেবারে শুরু থেকে নামাজ আদায় করতে হবেনা।
তবে অযু করতে যাওয়া আসার  মাঝে কোনো কথাবার্তা বলা যাবেনা।

(০৫)
আপনি যদি বায়ু বের হওয়ার আওয়াজ/গন্ধ না পান,বায়ু বের হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত না হোন,সেক্ষেত্রে নামাজ চলমান রাখবেন।

আর যদি আপনি বায়ু বের হওয়ার আওয়াজ/গন্ধ পান, বা বায়ু বের হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত  হোন,সেক্ষেত্রে নামাজ ছেড়ে দিয়ে অযু করে এসে অবশিষ্ট নামাজ আদায় করবেন।

★বায়ুজনিত সমস্যার মধ্যেও আপনি তাকবিরে উলার এই আমল করতে পারবেন।
কোনো সমস্যা নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 70 views
0 votes
1 answer 215 views
...