শরীয়তের বিধান হলো যে পদ্ধতিতে কোন ইবাদত খাইরুল কুরুনে আদায় করা হতো না, সেটিকে জরুরী মনে করে বা একমাত্র পদ্ধতি মনে করে, বা আবশ্যকীয় পদ্ধতি বানিয়ে উক্ত ইবাদত করাও বিদআতের শামিল।
সুতরাং প্রচলিত ঈদে মিলাদুন্নবী পালন বিদআত।
রাসুল সাঃ বলেন-
وَإِيّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنّ كُلّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ.
আর সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ, সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।’ (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭১৪২, ১৭১৪৫)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ
‘(দ্বীনের নামে) নবউদ্ভাবিত সকল বিষয় থেকে দূরে থাক।’
আরেক হাদীসে আছে-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدّ .
‘যে আমাদের এই বিষয়ে (অর্থাৎ দ্বীন ও শরীয়তে) এমন কিছু উদ্ভাবন করবে, যা তার অংশ নয়, তা প্রত্যাখাত।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৯৭
আরো জানুনঃ
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
খেলে বিদআতি কাজে শামিল হওয়ার গুনাহ হতো।
সুতরাং এক্ষেত্রে বর্জন করাই উত্তম।
(০২)
এই তাবারক খাওয়া ঠিক নয়।
অনেক ক্ষেত্রে তাহাও বিদআতের পর্যায়ে পড়ে।
তাই বর্জন করাই উত্তম।
(০৩)
দুই নং প্রশ্নের জবাব দ্রষ্টব্য।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনার দাদা,দাদী সহ আত্মীয় স্বজনদের এভাবে মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা নাজায়েজ।
এ উপলক্ষে খাবারের আয়োজন বিদআত।
এ ধরনের সর্বপ্রকারের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
দাদা,দাদী সহ আত্মীয় স্বজনদের ঈসালে ছওয়াবের জন্য মৃত্যুবার্ষিকী পালন না করে অন্য কোনো দিন ফকির মিসকিনকে খাওয়াতে পারেন।
এতে দাদা,দাদী সহ আত্মীয় স্বজন ছওয়াব পাবেন।
উল্লেখ্য, ফকির মিসকিনকেই খাওয়াতে হবে, এক্ষেত্রে ধনীদের খাওয়ালে মৃত দাদা,দাদী সহ মৃত কোনো আত্মীয় স্বজনই ছওয়াব পাবেনা।
★মাইয়্যিতের ঈসালে ছওয়াব এর লক্ষ্যে দাওয়াতের ইহতিমামের এই পদ্ধতি শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে প্রমানিত নয়।
এবং মাইয়্যিতের ছওয়াব পৌছানোর নিয়তে যেই খাবার তৈরী করা হয়েছে,তাতে শুধু ফকিরদের হক রয়েছে।
ধনীরা তার মধ্যে শরীক হবেনা।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১/৩৯১)
তবে যেই খাবার মেহমানদারীর জন্য পাকানো হয়েছে,সেটা ধনীরা খেতে পারবে।
(ফাতাওয়ায়ে রশিদিয়্যাহ ১৫২, কিতাবুন নাওয়াজেল ১/৩৭২)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡهَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُهُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۶۰﴾
সাদাকাহ হচ্ছে শুধুমাত্র গরীবদের এবং অভাবগ্রস্তদের, আর এই সাদাকাহর (আদায়ের) জন্য নিযুক্ত কর্মচারীদের এবং (দীনের ব্যাপারে) যাদের মন রক্ষা করতে (অভিপ্রায়) হয় (তাদের), আর গোলামদের আযাদ করার কাজে এবং কর্জদারদের কর্জে (কর্জ পরিশোধে), আর জিহাদে (অর্থাৎ যুদ্ধ সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য) আর মুসাফিরদের সাহায্যার্থে। এই হুকুম আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, অতি প্রজ্ঞাময়।
(সুরা তওবা ৬০)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَحِلُّ الصَّدَقَةُ لِغَنِيٍّ وَلَا لِذِي مِرَّةٍ سَوِيٍّ»
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সদকার মাল ধনীদের জন্য হালাল নয়, সুস্থ সবলদের (খেটে খেতে সক্ষম) জন্যও নয়।
(আবূ দাঊদ ১৬৩৪, আত্ তিরমিযী ৬৫২, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক্ব ৭১৫৫, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১০৬৬৩, আহমাদ ৬৫৩০, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১৪৭৮, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৭২৫১।)