আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (3 points)

আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ,

১. আমরা জেনে আসছি ঈদে মিলাদুন্নবি উদযাপন  বিদআত,কিন্তু আমাদের পুরো মহল্লা উদযাপন করছে,মাসজিদের ইমাম ও নিশ্চুপ। সেই তবারক খাইনি।খেলে কি গুনাহ হতো?নাকি বর্জন করাই উত্তম  হবে।

২.শবে বরাত উপলক্ষ্যেও তবারকের বিশাল আয়োজন হয় প্রতি বছর,আমিও না বুঝে টুকটাক কাজ করে দেই এবং সেই তবারুক খেয়েও ফেলি।ভুল করে ফেললাম কিনা বুঝতে পারিনি।

৩.মুহাররম মাস উপলক্ষেও এমন ঘটা করে আয়োজন করা হয়।মাসজিদ থেকেই তবারক বিতরণ করা হয়।

আমার প্রশ্ন,  এইযে বিভিন্ন মাস উপলক্ষে তবারুকের আয়োজন করা হয় এটা কতটুকু সহিহ?

আমার দাদা-দাদি মারা গেছেন কয়েক বছর আগেই,উনাদের মৃত্যুবার্ষিকি উপলক্ষেও খিচুড়ি-বিরিয়ানির আয়োজন করেন।সেটা আবার বাবা-চাচারাই করেন।আমরাও হাতে হাতে কাজ করে দেই।সামনে দাদির মৃত্যু বার্ষিকি এবার হয়তো করবেন।এটা কি ঠিক হচ্ছে?নাকি পরবর্তীতে এ ধরনের সর্বপ্রকার  কাজ থেকে বিরত থাকবো? যেহেতু প্রতিবছরই  দাদা-দাদি,নানা,খালুর,বড় আব্বা,বড় আম্মার মৃত্যুবার্ষিকিতে তবারুকের আয়োজন করেন।

যেহেতু বাড়িতে আয়োজন কাজ না করলে বা বিরত থাকলে ফিতনার সৃষ্টি সম্ভাবনা বেশি।এমতাবস্থায় কি করবো উস্তাদ। 

আফওয়ান পোস্ট বড় হওয়ায়।

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো যে পদ্ধতিতে কোন ইবাদত খাইরুল কুরুনে আদায় করা হতো না, সেটিকে জরুরী মনে করে বা একমাত্র পদ্ধতি মনে করে, বা আবশ্যকীয় পদ্ধতি বানিয়ে উক্ত ইবাদত করাও বিদআতের শামিল।

সুতরাং প্রচলিত ঈদে মিলাদুন্নবী পালন বিদআত।

রাসুল সাঃ বলেন-

وَإِيّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنّ كُلّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ.

আর সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ, সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।’ (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭১৪২, ১৭১৪৫)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ

‘(দ্বীনের নামে) নবউদ্ভাবিত সকল বিষয় থেকে দূরে থাক।’

আরেক হাদীসে আছে-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدّ .

‘যে আমাদের এই বিষয়ে (অর্থাৎ দ্বীন ও শরীয়তে) এমন কিছু উদ্ভাবন করবে, যা তার অংশ নয়, তা প্রত্যাখাত।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৯৭

আরো জানুনঃ 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
খেলে বিদআতি কাজে শামিল হওয়ার গুনাহ হতো। 
সুতরাং এক্ষেত্রে বর্জন করাই উত্তম।

(০২)
এই তাবারক খাওয়া ঠিক নয়।
অনেক ক্ষেত্রে তাহাও বিদআতের পর্যায়ে পড়ে।
তাই বর্জন করাই উত্তম।

(০৩)
দুই নং প্রশ্নের জবাব দ্রষ্টব্য।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
আপনার দাদা,দাদী সহ আত্মীয় স্বজনদের এভাবে মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা নাজায়েজ।
এ উপলক্ষে খাবারের আয়োজন বিদআত।

এ ধরনের সর্বপ্রকারের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।

দাদা,দাদী সহ আত্মীয় স্বজনদের ঈসালে ছওয়াবের জন্য মৃত্যুবার্ষিকী পালন না করে অন্য কোনো দিন ফকির মিসকিনকে খাওয়াতে পারেন।
এতে দাদা,দাদী সহ আত্মীয় স্বজন ছওয়াব পাবেন।

উল্লেখ্য, ফকির মিসকিনকেই খাওয়াতে হবে, এক্ষেত্রে ধনীদের খাওয়ালে মৃত দাদা,দাদী সহ মৃত কোনো আত্মীয় স্বজনই ছওয়াব পাবেনা।

আরো জানুনঃ- 

★মাইয়্যিতের ঈসালে ছওয়াব এর লক্ষ্যে দাওয়াতের ইহতিমামের এই পদ্ধতি শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে প্রমানিত নয়।
 এবং মাইয়্যিতের ছওয়াব পৌছানোর নিয়তে যেই খাবার তৈরী করা হয়েছে,তাতে শুধু ফকিরদের হক রয়েছে।
ধনীরা তার মধ্যে শরীক হবেনা।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১/৩৯১)

তবে যেই খাবার মেহমানদারীর জন্য পাকানো হয়েছে,সেটা ধনীরা খেতে পারবে।
(ফাতাওয়ায়ে রশিদিয়্যাহ ১৫২, কিতাবুন নাওয়াজেল ১/৩৭২)

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡهَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُهُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۶۰﴾

সাদাকাহ হচ্ছে শুধুমাত্র গরীবদের এবং অভাবগ্রস্তদের, আর এই সাদাকাহর (আদায়ের) জন্য নিযুক্ত কর্মচারীদের এবং (দীনের ব্যাপারে) যাদের মন রক্ষা করতে (অভিপ্রায়) হয় (তাদের), আর গোলামদের আযাদ করার কাজে এবং কর্জদারদের কর্জে (কর্জ পরিশোধে), আর জিহাদে (অর্থাৎ যুদ্ধ সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য) আর মুসাফিরদের সাহায্যার্থে। এই হুকুম আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, অতি প্রজ্ঞাময়।
(সুরা তওবা ৬০)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَحِلُّ الصَّدَقَةُ لِغَنِيٍّ وَلَا لِذِي مِرَّةٍ سَوِيٍّ»

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সদকার মাল ধনীদের জন্য হালাল নয়, সুস্থ সবলদের (খেটে খেতে সক্ষম) জন্যও নয়।
(আবূ দাঊদ ১৬৩৪, আত্ তিরমিযী ৬৫২, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক্ব ৭১৫৫, ইবনু আবী শায়বাহ্ ১০৬৬৩, আহমাদ ৬৫৩০, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১৪৭৮, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ৭২৫১।)

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...