জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ঈসালে ছওয়াবের উদ্দেশ্যে ধনীদেরকে খাওয়ানো মাকরুহে তানযিহি,তাদেরকে খাওয়ানো হলে গরিবদের খাওয়ানোর তুলনায় ছওয়াব অনেক কম হবে। (ফাতাওয়ায়ে রশিদিয়্যাহ ১৫৭)
,
তবে অনেক ইসলামী স্কলারদের মত হলো ধনীদের দাওয়াত খাওয়ানো হলে কোনো ঈসালে ছওয়াবই হবেনা।
,
যদি শুধু গরিবদের জন্য খাবার তৈরী করা হয়,সেক্ষেত্রে ধনীদের খাওয়া নাজায়েজ।
আমাদের সমাজে প্রচলিত একটি রুসম হল, মৃতব্যক্তির দাফন-কাফনে যারা শরীক হয় তাদের উদ্দেশ্যে যিয়াফত তথা আড়ম্বরপূর্ণ দাওয়াত অনুষ্ঠানকে ঈসালে সওয়াবের মাধ্যম হিসেবে মনে করা হয়। সমাজে এটাকে ‘’মাটিয়াল’’ও বলা হয়। অথচ শরীয়তে যিয়াফতের আয়োজনের কথা তো আছে আনন্দের মুহূর্তে, মুসিবতের মুহূর্তে নয়।
হাদীস শরীফে এসেছে- হযরত জারীর ইবনে আবদুল্লাহ আলবাজালী রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা (সাহাবাগণ) দাফনের পর মৃতকে কেন্দ্র করে সমবেত হওয়া ও খাবারের আয়োজন করাকে জাহিলিয়াতযুগের ‘নিয়াহা’ বলে গণ্য করতাম। (মুসনাদে আহমদ ২/২০৪; ইবনে মাজাহ ১৬১২)
তবে কোনো দিন-তারিখ নির্ধারিত না করে গরীব-মিসকীনদেরকে সাদকার নিয়তে খানা খাওয়ানো ঈসালে সাওয়াবের একটি বৈধ পন্থা । যেমন হাদীস শরীফে এসেছে-
أَنَّ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ رَضِي اللَّه عَنْه تُوُفِّيَتْ أُمُّهُ وَهُوَ غَائِبٌ عَنْهَا فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أُمِّي تُوُفِّيَتْ وَأَنَا غَائِبٌ عَنْهَا أَيَنْفَعُهَا شَيْءٌ إِنْ تَصَدَّقْتُ بِهِ عَنْهَا قَالَ نَعَمْ قَالَ فَإِنِّي أُشْهِدُكَ أَنَّ حَائِطِيَ الْمِخْرَافَ صَدَقَةٌ عَلَيْهَا
সা‘দ ইবন ‘উবাদাহ রা. এর মা তার অনুপস্থিতিতে মারা যান। পরে তিনি বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ ﷺ, আমার অনুপস্থিতিতে আম্মা মারা গেছেন। আমি যদি তাঁর জন্য কিছু সাদাকাহ করি তবে কি তা তাঁর উপকারে আসবে ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আপনি সাক্ষী, আমার মিখরাফ নামক বাগানটি তাঁর জন্য সাদাকাহ করলাম। (বুখারী, কিতাবুর ওয়াসায়া ২৫৫১)
ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ তে আছে , ‘খানা তৈরি করে খাওয়ানো ৫টি শর্তে জায়েয।
★প্রচলিত প্রথা ও রুসুম বশবর্তী হয়ে না করা।
★লোক দেখানোর জন্য না করা।
★মৃতের মিরাছ বন্টনের পরে করা। মিরাছ বন্টনের পূর্বে হলে সকলেই বালেগ হতে হবে এবং সকলের অনুমতি থাকতে হবে।
★হালাল মাল হতে হবে। হারাম মাল হলে চলবে না।
★প্রচলিত নিয়মে দিন, তারিখ, মাস ইত্যাদি নির্দিষ্ট করতে পারবে না। ( ফাতাওয়ায়ে হাক্কানীয়া : ২/৫০)