আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
201 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (36 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
১. নামাজগুলো কি এলোমেলোভাবে পড়া জায়েজ আছে? অর্থাৎ জোহরের চার রাকাত সুন্নত পরে পড়লাম আগে ৪ রাকাত ফরজ পড়লাম।  ফজরের দুই রাকাত সুন্নত পরে পড়লাম, আগে ফরজ পড়লাম। এরকম ভাবে অন্যান্য নামাজের ক্ষেত্রেও কি এইটা কীা যেতে পারে?  আরেকটি বিষয় যদি আমি কোনো নামাজের কিছু অংশ পড়ার পরে আবার যদি অল্প বা দীর্ঘ সময় বিরতি নিয়ে পুনরায় সালাত আদায় করি তাহলে কি সেটা জায়েজ হবে?? যেমন: আমি হয়তো আগে জোহরের চার রাকাত ফরজ করে নিলাম এরপর অল্প সময় বা দীর্ঘ সময় পরে আবার ও দুই রাকাত সুন্নত আদায় করলাম। এরকমভাবে সালাত আদায় করা কি জায়েজ আছে?

২. নামাজের মধ্যে অনেক সময়  বায়ু  আটকে রাখি। এতে মনে হয় বায়ু বেরোতে চেষ্টা করে,,, কিন্তু বেরোতে পারে না। তখন কেমন একটা অনুভূতি হয়। মানে ভেতর থেকে আওয়াজ হয়। মনে হয় বায়ু বেরোতে চেষ্টা করছে তখন আমি আটকে রাখছি তাই উপরের দিকে চলে যাচ্ছে। আমার মনে হয় বায়ুটা সামনে থেকে বেরোই না। অনুভূতিতে আমি ঠিক বোঝাতে পারছি না। এমন হলে কি ওজু ভেঙে যায়?

৩. লজ্জাস্থানের নিচে যেই ছিদ্রটি রয়েছে সেই ছিদ্রের মুখে সাদাস্রাব জমা হয়ে থাকে সেটি পায়ে বা জামা কাপড় লাগেনা আমি হাত দিলে টেরপাই ওখানে সাদাস্রাব আছে। এখন ওখানে যদি সাদাস্রাব এসে জমা হয়,, তাহলে কি আমার আমার ওজু ভেঙে যায়? দয়া করে হ্যাঁ বা না তে উত্তর দিয়েন।
নামাজের শেষে আমি সাহু সিজদা  দিতে চেয়েছিলাম এটা মনে থাকে। কিন্তু অনেক সময় মনে থাকে না কেন সাহু সিজদা  দিতে চেয়েছিলাম। অর্থাৎ কোন রাকাতের জন্য বা কোন সেজদার জন্য। এটা মনে রাখা কি জরুরী??

৪. আমি সাদা স্রাব নিয়ে খুব সমস্যাই  আছি। মাঝে মাঝে আমার সাদা স্রাব না এসে লজ্জাস্থানে শুধু পানি আসে ঘনঘন।  হায়েজের  ১০ থেকে ১৫ দিন পরে আমার সাদা স্রাব টা ঘনঘন হয়। তখন হয়তো আমি নামাজের আগে পবিত্র হলাম কিন্তু নামাজটা পড়া শেষ করে  আবার সাদাস্রাব দেখতে পেলাম অর্থাৎ শুধু ফরজ নামাজ টুকুও পড়তে পারি না। তার মাঝেও সাদাস্রাব   চলে আসে। কখনও আবার ২য় বার নামাজ পড়েও দেখি সাদা স্রাব আছে। কখনো শুধু প্রথমবারে দেখি দ্বিতীয় বার নামাজটা পড়ে আর দেখতে পাই না। এখন যদি এমন ঘনঘন সাদা স্রাব হয়,, লজ্জাস্থানে পানি আসে। তাহলে কি করনীয়? আমি মাজুর নই। কিন্তু বারবার ওজু  ভাঙবে আবার একই সালাতের মধ্যে বারবার অজু করে আসবো এটাও তো সম্ভব নয় আমার নির্দিষ্ট কোন সময় নেই যে সময়টা সাজেশন হয় এই সময়টাতে হয় না আমি ওই সময়টাতে নামাজ আদায় করে নিব এক্ষেত্রে আমি প্রত্যেক সালাতের আগে অজু করে নেই আর ওই অজুতে আদায় করি তাহলে হবে না??

৫. স্বপ্নদোষের পর মজি আসলেও কি গোসল ফরজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (564,060 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


 (০১)
ফজরের  সুন্নত কোন কারণে পড়তে না পারলে তার কাযা আদায় করবে সুর্য উদিত হবার পর।
জোহরের ওয়াক্ত আসলে আর আদায় করবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وفى جامع الترمذى- عن أبي هريرة قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من لم يصل ركعتي الفجر فليصلهما بعد ما تطلع الشمس (جامع الترمذى-أبواب الصلاة عن رسول الله صلى الله عليه وسلم، باب ماجاء في إعادتهما بعد طلوع  الشمس ،رقم-423)

অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত যে, নবীজি সা: বলেন-যে ফজরের দুই রাকআত সুন্নত (সময়মতো) পড়ল না সে যেন সূর্যোদয়ের পর তা আদায় করে। ( জামে তিরমিজী-১/৯৬)

আরো জানুনঃ 

★★কেহ যদি জোহরের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত পড়তে না পারে,তাহলে তার জন্য জোহরের পর দুই রাকাত সুন্নত পড়ে পূর্বের চার রাকাত সুন্নত আদায় করে নেওয়া উচিত।
(ফরজ শেষে দুই রাকাত সুন্নত পড়ার পর তা আদায় করে নিবে।) 
(আল মুহিতুল বুরহানি : ২/২৩২; ফাতহুল কাদির : ১/৪১৫; আদ্দুররুল মুখতার : ২/১২-১৩)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا لَمْ يُصَلِّ أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ صَلاَّهُنَّ بَعْدَهَا

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি কোন দিন যোহরের প্রথম চার রাকাত সুন্নত পড়তে না পারতেন, তাহলে তা ফরজের পর আদায় করে নিতেন। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৪২৬] 

তিরমিজি শরীফের ৪২৬ নং হাদীসে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ الْعَتَكِيُّ الْمَرْوَزِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا لَمْ يُصَلِّ أَرْبَعًا قَبْلَ الظُّهْرِ صَلاَّهُنَّ بَعْدَهُ .

আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি যুহরের পূর্বে চার রাকাআত না আদায় করতেন তবে যুহরের (ফরযের) পর তা আদায় করতেন।

আরো জানুনঃ-  

জোহরের ক্ষেত্রে যদি চার রাকাত সুন্নাত না পড়ে আগে ফরজ নামাজ পড়া হয়,তাহলে ফরজ শেষে দুই রাকাত সুন্নাত আদায় করে তারপর জোহরের আগের সেই চার রাকাত সুন্নাত আদায় করতে হবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
নামাজগুলো এভাবে এলোমেলোভাবে পড়া জায়েজ নেই।
অনিচ্ছায় বা ওযর বশত ফজরের আগে সুন্নাত পড়া না হলে সেক্ষেত্রে সূর্য উদিত হওয়ার পর ইশরাকের ওয়াক্তে ফজরের সেই সুন্নাত আদায় করতে হবে।

অনিচ্ছায় বা ওযর বশত জোহরের আগের চার রাকাত সুন্নাত পড়া না হলে সেক্ষেত্রে জোহরের পর দুই রাকাত সুন্নাত আদায় শেষ করে তারপর জোহরের সেই চার রাকাত সুন্নাত আদায় করতে হবে।

জোহরের ফরজ আদায়ের পর কিছু সময় বা দীর্ঘ সময় বিরতি দিয়ে পরবর্তীতে সুন্নাত আদায় করা যাবে। তবে আসরের ওয়াক্ত চলে আসলে আর জোহরের সুন্নাত আদায়ের সুযোগ থাকবেনা।

ইচ্ছাকৃতভাবে এভাবে সুন্নাত আদায়ে দেড়ি করা সুন্নাতের খেলাফ কাজ। 

(০২)
এমন হলে অযু ভেঙ্গে যায়না। 

(০৩)
না।

এটা মনে রাখা জরুরী নয়।
উল্লেখ্য, আপনার উপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব না হলে এমনিতেই সেজদায়ে সাহু আদায়ের সুযোগ নেই।

(০৪)
না,তাহলে হবেনা।

আপনি যেহেতু মা'যুর নন,তাই এমনটি করার সুযোগ আপনার নেই। 

(০৫)
এক্ষেত্রে স্বপ্নদোষ স্বরণ থাকলে গোসল ফরজ হবে। আর যদি স্বপ্নদোষ স্বরণ না থাকে,সেক্ষেত্রে গোসল ফরজ হবেনা। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...