আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
90 views
in পবিত্রতা (Purity) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ,
শাইখ, আমার আগে ৮/৯ দিন করে হায়েজ চলতো আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু প্রায় ৭/৮ মাস হবে, আমার ১০ দিনের থেকে বেশি হয়ে যায়। প্রথম আমার মানে হয়েছে সার্কেল চেঞ্জ হয়েছে তাই হয়তো এমন হচ্ছে। কিন্তু এখনও আমার প্রায় ১২/১৩ দিন পর সাদাস্রাব আসে। এজন্য আমি ১০ দিন পার হলে ফরয গোসল সেরে সালাত আদায় করা শুরু করে দেই। বাকি ১০ দিনের অতিরিক্ত দিনগুলোকে ইস্তেহাজা কাউন্ট করি এবং এই ইস্তিহাজা থেকে ভালো হলে ফরয গোসল করি না। এমনি সাধারণ গোসল করি।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে--

১/ আমার যেহেতু কন্টিনিউয়াসলি ১০ দিন থেকে বেশি থাকছে তাই ১০ দিন আমার রেগুলার অভ্যাস ধরে নিয়ে বাকিদিন কি ইস্তিহাজা গণ্য করবো?
২/ যদি হঠাৎ কোন মাসে ৫ দিন হয় হায়েজের দিন(সাধারণত এটা খুবই রেয়ার), তাহলে এর পরের মাস থেকে যদি কন্টিনিউয়াসলি আবার ১০ দিনের থেকে বেশি দিন ব্লাড দেখা যেতে থাকে, প্রত্যেক মাসেই এমন হতে থাকে তাহলে আমি কোনটাকে অভ্যাস ধরে নিবো?  আর পরের মাসে ১০ দিন থেকে বেশি হলে বাকি ৫ দিনের এক্সট্রা সালাতগুলো কি কাজা করতে হবে? উল্লেখ্য ৫ দিন হায়েজ শুধু কো-ইনসিডেন্টলি হয়েছিল এক মাস/২ মাস। বাকি সব সসময়ই আমার ১০ দিন থেকে বেশি থেকেছে।

এখন আমি অভ্যাস কোনটাকে ধরবো -হঠাৎ করে এক/দুই মাসে ৫ দিন হয়েছে যে এটা,  না কি এজ ইউজুয়ালি  প্রত্যেক মাসেই যেহেতু ১০ দিন থেকে বেশি হচ্ছে, আমি ১০ দিনকে রেগুলার ধরে নিবো? কোনটা হবে এখানে। আমি কনফিউজড। কারণ আমার হায়েজ আগে থেকেই লং টাইম থাকতো, এখন কন্টিনিউয়াসলি ১০ দিন থেকে বেশি দেখা যায় আজকে প্রায় ৭/৮ মাসের বেশি হবে ইনশাআল্লাহ। আমি কি করবো, আমাকে একটু বলে দিন প্লিজ।
৩/ ১০ দিন পরে তো আমি ফরয গোসল করে নেই আলহামদুলিল্লাহ। তাহলে ১০ দিনের পর অতিরিক্ত যে ৩ দিনকে আমি ইস্তিহাজা হিসেবে কাউন্ট করছি, সেটা ভালো হলে কি আমার ফরয গোসল করা লাগবে?

৪/ ফরয রোজা থাকাবস্থায় ফরয গোসল করতে চাইলে কুলি ও নাকে পানি দেয়ার নিয়ম কেমন হবে?

1 Answer

0 votes
by (677,280 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে। 
উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা।
(কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)

তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)
,

أن النساء کن یبعثن بالکرسف إلی عائشۃ رضی اللہ تعالیٰ عنھا فکانت تقول : لا حتی ترین القصۃ البیضاء‘‘ ( المؤطأ للإمام مالک : ۱/۵۹۱ ،  : مصنف ابن عبد الرزاق، حدیث نمبر : ۱۱۵۹ )
সারমর্মঃ আয়েশা সিদ্দিকা রাঃ সেই সমস্ত মহিলাদের বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা দেখিতে না পাও। 
,
আরো জানুনঃ

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
হ্যাঁ, আপনি এক্ষেত্রে ১০ দিন আপনার রেগুলার অভ্যাস ধরে নিয়ে বাকিদিন ইস্তিহাজা গণ্য করবেন।
তবে কোনো মাসে যদি ১০ দিনের পূর্বেই হায়েজ বন্ধ হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে অপেক্ষা না করে সেই ওয়াক্ত থেকেই নামাজ শুরু করবেন।

(০২)
আপনি ১০ দিনকেই অভ্যাস ধরবেন।
তবে কোনো মাসে যদি ৫ দিনে বন্ধ হয়,তাহলে সেক্ষেত্রে সেই মাসের ক্ষেত্রে ১০ দিনের অপেক্ষা না করে সেই ওয়াক্ত থেকেই গোসল করে নামাজ শুরু করবেন।

(০৩)
১০ দিনের পর অতিরিক্ত যে ৩ দিনকে আপনি ইস্তিহাজা হিসেবে কাউন্ট করছেন, সেটা ভালো হলে আপনার ফরয গোসল করা লাগবেনা।

(০৪)
গড়গড়িয়ে কুলি করা যাবেনা।
নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌছানো যানেনা।

তাই চেহারা নিচু করে অল্প পানি দিয়ে কুলি করবেন,সতর্ক থাকবেন,যাতে গলার দিকে পানি না যায়।
আর আঙ্গুল ভিজিয়ে সেই আঙ্গুল দিয়ে নাকের ভিতর মুছে নিবেন।

সরাসরি নাকে পানি না দেয়ার চেষ্টা করবেন।

এভাবে তিনবার করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...