জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সুনানে দারা কুতনির একটি হাদীসে এসেছেঃ
حدثنا أبو سعيد الإصطخري ، ثنا محمد بن عبد الله بن نوفل ، ثنا عبيد بن يعيش ، ثنا يونس بن بكير عن عمرو بن شمر عن جابر عن محمد بن علي قال : إن لمهدينا آيتين لم تكونا منذ خلق السماوات والأرض ينكسف القمر لأول ليلة من رمضان وتنكسف الشمس في النصف منه ولم تكونا منذ خلق الله السموات والأرض.
(سنن الدارقطني »
كتاب العيدين »
باب صفة صلاة الخسوف والكسوف وهيئتهما
المكتبة الإسلامية)
তরজমাঃ মুহাম্মাদ বিন আলী রহঃ থেকেই বর্ণীত তিনি বলেনঃ “নিশ্চয় আমাদের মাহ্দীর সত্যতার এমন দু’টি লক্ষণ আছে, যা আকাশমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি অবধি আজ পর্যন্ত অন্য কারও সত্যতার নিদর্শন স্বরূপ প্রদর্শিত হয়নি। একই রমযান মাসে প্রথম রাতে চন্দ্র গ্রহণ হবে এবং মধ্যম তারিখে সূর্য গ্রহণ হবে।” (দারকুতনী,
২/২১০
(১০/১৭৭১)
এই হাদীসের হুকুমের ব্যাপারে মুহাদ্দিসিনের কেরামদের অনেক কথা আছে।
,
কিছু মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ
رواه الدارقطني عن محمد بن علي، ولم نعثر على فتوى من فتاوانا تفيد صحته، وكيف يكون صحيحاً وهو حديث مقطوع وقفه الدارقطني على محمد بن علي وهو من صغار التابعين، وفي سنده عمرو بن شمر، وقد ضعفه ابن أبي حاتم والنسائي وابن عدي وغيرهم، وفيه كذلك يونس بن بكير وهو متكلم فيه فقد ضعفه العقيلي.
সারমর্মঃ এই হাদীস মাকতু'
এটি বর্ণিত হয়েছে ছোট তাবেয়ী মুহাম্মাদ বিন আলী রহঃ থেকে।
অনেকেই তাকে জয়ীফ (দূর্বল রাবী বলে আখ্যায়িত করেছেন।)
আরেক রাবি ইউনুস বিন বুকাইর রহঃ কেউ দূর্বল রাবী বলে আখ্যায়িত করেছেন।
কিছু মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ
فليس بحديث عن النبي صلى الله عليه وسلم وإنما رواه الدارقطني في سننه (2/65) من قول محمد بن الحنيفية ( ابن علي بن أبي طالب ) قال الدارقطني : حدثنا أبو سعيد الاصطخري ثنا محمد بن عبد الله بن نوفل ثنا عبيد بن يعيش ثنا يونس بن بكير عن عمرو بن شمر عن جابر عن محمد بن علي قال:
" إن لمهدينا آيتين لم تكونا منذ خلق السماوات والأرض تنكسف القمر لأول ليلة من رمضان وتنكسف الشمس في النصف منه ولم تكونا منذ خلق الله السماوات والأرض".
وهذا الأثر موضوع مكذوب على محمد بن علي (ابن الحنفية) رحمه الله .
সারমর্মঃ উল্লেখিত রেওয়ায়েতটি মউজু, হাদীস।
قال الدكتور عبد العليم عبد العظيم البستوي في كتابه الموسوعة في أحاديث المهدي الضعيفة والموضوعة ص 169
সারমর্মঃ এটি মওজু হাদীস।
(وفيه : يونس بن بكير بن واصل الشيباني ، أبو بكر الجمَّال الكوفي. يخطئ . من التاسعة . مات 199 هـ.
وعمرو بن شَمِر الجعفي الكوفي الشيعي أبوعبد الله : وضاع.
এখানে একজন রাবী আছেন,আমর বিন শামির" উনি মওজু হাদীস বর্ণনা করেন।
قال السليماني: كان عمرو يضع للروافض .
وقال الجوزجاني : كذاب زائغ .
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস সুলাইমান এবং জাওযানী রহঃ উক্ত রাবীকে মিথ্যুক মাওজু রেওয়ায়াত কারী বলে আখ্যায়িত করেছেন।
قال الحاكم: كان كثير الموضوعات عن جابر الجعفي ، وليس يروي تلك الموضوعات الفاحشة عن جابر غيره.
قال ابن حبان : رافض يشتم الصحابة ويروي الموضوعات عن الثقات .
قال أبوحاتم : منكر الحديث جدا ضعيف الحديث لا يشتغل به ، تركوه .
وكذلك وهّاه غير واحد ، منهم البخاري والنسائي وابن سعد والدارقطني وآخرون .
وجابر : هو الجعفي ، متروك الحديث . وثقه شعبة ووكيع والثوري ، ولكن كذبه ابن معين وأبو حنيفة وليث بن أبي سليم والجوزجاني وابن عيينة وابن خراش وسعيد بن جبير وغيرهم ، وضعفه كثيرون.
قال الذهبي : وثقه شعبة فشذ ، وتركه الحفاظ .
قال ابن حجر: ضعيف رافضي .
والخلاصة : أن هذا الخبر موضوع ، وآفته عمرو الجعفي
সারমর্মঃ প্রখ্যাত মুহাদ্দিস হাকিম,ইবনে হিব্বান,আবু হাতেম,জাবের,ছাওরি,যাহাবি ইবনে হজর রহঃ গন উক্ত রাবীকে মিথ্যুক মাওজু,জয়ীফ রেওয়ায়াত কারী বলে আখ্যায়িত করেছেন।
,
,
★সুতরাং উল্লেখিত হাদীস বর্ণনা না করে ইমাম মাহদী আঃ এর আগমনের ছহীহ রেওয়ায়াত আলোচনা করাই উত্তম।
.
★এই বিষয়ে কিছু ছহীহ রেওয়ায়াতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
الْمَهْدِيُّ مِنِّي أَجْلَى الْجَبْهَةِ أَقْنَى الْأَنْفِ يَمْلَأُ الْأَرْضَ قِسْطًا وَعَدْلًا كَمَا مُلِئَتْ جَوْرًا وَظُلْمًا يَمْلِكُ سَبْعَ سِنِينَ
‘‘মাহদী আসবেন আমার বংশধর হতে। তাঁর কপাল হবে উজ্জল এবং নাক হবে উঁচু। পৃথিবী হতে যুলুম-নির্যাতন দূর করে দিয়ে ন্যায়-ইনসাফ দ্বারা তা ভরে দিবেন। সাত বছর পর্যন্ত তিনি রাজত্ব করবেন’’।
আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুল মাহদী, সহীহুল জামে আস্ সাগীর, হাদীছ নং- ৬৬১২।
ইমাম মাহদী ফাতেমা রা-এর বংশে জন্মগ্রহণ করবেন্
উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মাহদী হবে ফাতেমার বংশধর। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৮৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৪০৮৬)
মাহদী রা.-এর নাম হবে মুহাম্মাদ এবং তার পিতার নাম হবে আবদুল্লাহ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যদি কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার মাত্র একদিনও বাকি থাকে তবুও-আল্লাহ তাআলা ঐ দিনকে দীর্ঘ করবেন এবং আমার বংশের এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করবেন। তার নাম আমার নামের সাথে এবং তার পিতার নাম আমার পিতার নামের সাথে মিলে যাবে। (অর্থাৎ তার নাম হবে মুহাম্মাদ ও তার পিতার নাম হবে আবদুল্লাহ)। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৮১; জামে তিরমিযী, হাদীস : ২২৩০)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘‘ততদিন দুনিয়া ধ্বংস হবেনা যতদিন না আমার পরিবারের একজন লোক আরবদের বাদশা হবেন। তাঁর নাম হবে আমার নামে এবং তাঁর পিতার নাম হবে আমার পিতার নামের অনুরূপ’’।
মুসনাদে আহমাদ, সহীহুল জামেউস্ সাগীর, হাদীছ নং- ৫১৮০।
অর্থাৎ তাঁর নাম হবে মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ।
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, ‘‘আখেরী যামানায় আমার উম্মাতের ভিতরে মাহদীর আগমণ ঘটবে। তাঁর শাসনকালে আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে, যমিন প্রচুর ফসল উৎপন্ন করবে, তিনি মানুষের মাঝে সমানভাবে প্রচুর সম্পদ বিতরণ করবেন, গৃহপালিত পশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং উম্মাতে মুহাম্মাদীর সম্মান বৃদ্ধি পাবে। তিনি সাত বছর কিংবা আট বছর জীবিত থাকবেন’’।
মুস্তাদরাকুল হাকিম। সিলসিলায়ে সাহীহা, হাদীছ নং- ৭১১।
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে আরও বর্ণিত আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘‘আমি তোমাদেরকে মাহদীর আগমণ সম্পর্কে সুসংবাদ দিচ্ছি। মানুষেরা যখন মতবিরোধে লিপ্ত হবে তখন তিনি প্রেরিত হবেন। পৃথিবী হতে জুলুম-নির্যাতন দূর করে ন্যায়-ইনসাফ দ্বারা তা ভরে দিবেন। আসমান-যমীনের সকল অধিবাসী তার উপর সন্তুষ্ট হবেন। তিনি মানুষের মাঝে সমানভাবে প্রচুর সম্পদ বিতরণ করবেন’’।মুসনাদে আহমাদ। ইমাম হায়ছামী বলেনঃ হাদীছের বর্ণনাকারীগন নির্ভরযোগ্য। মাজমাউ যাওয়ায়েদ (৭/৩১৩-৩১৪)।
উম্মে সালামা (রাঃ) বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘কা’বা ঘরের পাশে একজন লোক আশ্রয় নিবে। তাঁর বিরুদ্ধে একদল সৈনিক প্রেরণ করা হবে। সৈন্যরা যখন ‘বায়দা’ নামক স্থানে পৌঁছবে তখন যমিন তাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে। উম্মে সালামা বলেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম অপছন্দ সত্ত্বেও যারা তাদের সাথে যাবে তাদের অবস্থা কি হবে? উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তাকে সহ যমিন ধসে যাবে। তবে কিয়ামতের দিন সে আপন নিয়তের উপরে পুনরুত্থিত হবে’’।
(মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।)
হাফসা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘‘অচিরেই এই ঘরের অর্থাৎ কা’বা ঘরের পাশে একদল লোক আশ্রয় গ্রহণ করবে। শত্রুর সাথে মোকাবেলা করার মত তাদের কোন উল্লেখযোগ্য সৈনিক কিংবা অস্ত্র-শস্ত্র বা প্রস্ত্ততি থাকবেনা। তাদেরকে হত্যা করার জন্য একদল সৈনিক প্রেরণ করা হবে। সৈন্যরা যখন ‘বায়দা’ নামক স্থানে পৌঁছবে তখন যমিন তাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে’’।
(মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।)
আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ ‘‘একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুমের ঘোরে এলোমেলো কিছু কাজ করলেন। আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ জাগ্রত হলে আমরা তাঁকে বললামঃ ঘুমের মধ্যে আপনি আজ এমন কিছু কাজ করেছেন যা অতীতে কখনও করেন নি। তিনি বললেনঃ আমার উম্মাতের একদল লোক কা’বার পাশে আশ্রয় গ্রহণকারী কুরাইশ বংশের একজন লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে। তারা যখন ‘বায়দা’ নামক স্থানে পৌঁছবে তখন তাদেরকে নিয়ে যমিন ধসে যাবে। আমরা বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! তখন তো রাস্তায় বিভিন্ন ধরণের লোক থাকবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তাদের ভিতর এমন লোক থাকবে যারা নিজেদেরকে গোমরাহ জেনেও বের হবে, কাউকে বল প্রয়োগ করে আনা হবে এবং তাদের মধ্যে মুসাফিরও থাকবে। তারা সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে সকলকেই আল্লাহ তা’আলা নিয়তের উপর পুনরুত্থিত করবেন।
(মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।)
আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মাহদী আমার বংশের হবে। তার চেহারা উজ্জ্বল হবে। (তার দ্বারা) গোটা দুনিয়ায় ইনসাফ কায়েম হবে। যেমনিভাবে (ইতিপূর্বে) পুরো দুনিয়ায় অন্যায় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। তিনি সাত বছর খেলাফতের দায়িত্ব পালন করবেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৮৪)
উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, এক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মাহদী (খলীফা হওয়ার পর) সাত বছর বেঁচে থাকবেন। এরপর মৃত্যুবরণ করবেন। মুসলমানগণ তার জানাযা পড়বে। (সুনানে আবু দাউদ, হা: ৪২৮৬)
,
তবে পশ্চিম দিকে সূর্য উদিত হওয়া নিয়ে ছহীহ হাদীস এসেছঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا فَإِذَا طَلَعَتْ وَرَآهَا النَّاسُ يَعْنِي آمَنُوا أَجْمَعُونَ فَذَلِكَ حِينَ ( لَا يَنْفَعُ نَفْسًا إِيمَانُهَا لَمْ تَكُنْ آمَنَتْ مِنْ قَبْلُ أَوْ كَسَبَتْ فِي إِيمَانِهَا خَيْرًا )
‘‘যতদিন পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবেনা ততদিন কিয়ামত হবেনা। যখন পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবে এবং মানুষ তা দেখতে পাবে তখন সকলেই ঈমান আনবে। তখন এমন ব্যক্তির ঈমান কোন উপকারে আসবেনা যে পূর্ব থেকে বিশ্বাস স্থাপন করেনি কিংবা স্বীয় বিশ্বাস অনুযায়ী কোন সৎকাজ করেনি’’।
(বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুর্ রিকাক।)