بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
শরীয়তের বিধান হলো সেজদায়ের আয়াত নিজে তিলাওয়াত করলে অথবা অন্যের তেলাওয়াত শুনলে
সেজদাহ ওয়াজিব হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عن ابن عمرؓ قال انما السجدۃ
علی من سمعہا۔ المصنف لابن ابي شیبہ ۳؍۳۹۰ رقم : ۴۲۵۲)
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নিশ্চয়ই সেজদাহ ঐ ব্যাক্তির উপর ওয়াজিব হবে যে উহা শুনেছে।
والسجدة واجبة في هذه المواضع على التالي والسامع سواء قصد سماع
القرآن أو لم يقصد، كذا في الهداية.
তেলাওয়াত কারী এবং শ্রবণকারী উভয়ের উপর তেলাওয়াতে সেজদা ওয়াজিব।চায় তারা শ্রবণের
ইচ্ছা করুক বা না করুক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩২)
সুতরাং সেজদা তেলাওয়াত করলে সেজদা দেওয়া
ওয়াজিব।এবং শ্রবণ করলে সেজদা দেওয়া ওয়াজিব। তবে
মোবাইলে রেকর্ড কৃত সেজদায়ে তেলাওয়াতের আয়াত শ্রবণ করলে সেজদাহ ওয়াজিব হবেনা।
সিজদার আয়াত শ্রবণ করার কারণে সিজদা ওয়াজিব হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে, তেলাওয়াত
এবং শ্রবণ উভয়টা এক সঙ্গে হওয়া। (বাদায়েউস সানায়ে, খণ্ড-১ম, পৃষ্ঠা-৫৫৭)।
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 773 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে
টেলিভিশন বা রেডিও,মোবাইল
তেলাওয়াত যদি সরাসরি হয়ে থাকে তাহলে সে তেলাওয়াত শ্রবণ করার কারণে সিজদা দেয়া
ওয়াজিব হবে। আর যদি প্রচারিত তেলাওয়াত সরাসরি না হয়ে রেকর্ডকৃত হয় তাহলে সে তেলাওয়াত
শ্রবণ করার কারণে সিজদা দেয়া ওয়াজিব হবে না। (রদ্দুল মুহতার, খণ্ড-২য়, পৃষ্ঠা-৭০২, ফতোয়ায়ে
মাহমুদিয়া, খণ্ড-১১,
পৃষ্ঠা-৫৫০)।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
رواه البيهقي بإسناده عن أم سلمة الأزدية قالت: رأيت عائشة تقرأ في
المصحف فإذا مرت بسجدة قامت فسجدت.
সারমর্মঃ হযরত আয়েশা রাঃ মাসহাফ থেকে কুরআন তেলাওয়াত করছিলেন,যখন
কোনো সেজদার আয়তে পৌছলেন,তখন দাঁড়িয়ে গেলেন,তারপর
সেজদাহ করলেন।
https://ifatwa.info/3874/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছেঃ
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
وَمِنْ حُكْمِ هَذِهِ السَّجْدَةِ التَّدَاخُلُ حَتَّى يَكْتَفِيَ
فِي حَقِّ التَّالِي بِسَجْدَةٍ وَاحِدَةٍ وَإِنْ اجْتَمَعَ فِي حَقِّهِ
التِّلَاوَةُ وَالسَّمَاعُ وَشَرْطُ التَّدَاخُلِ اتِّحَادُ الْآيَةِ وَاتِّحَادُ
الْمَجْلِسِ حَتَّى لَوْ اخْتَلَفَ الْمَجْلِسُ وَاتَّحَدَتْ الْآيَةُ أَوْ
اتَّحَدَ الْمَجْلِسُ وَاخْتَلَفَتْ الْآيَةُ لَا تَتَدَاخَلُ، كَذَا فِي
الْمُحِيطِ.
ভাবার্থঃ-সেজদায়ে তেলাওয়াতের একই আয়াতকে একই মজলিসে কয়েকবার তেলাওয়াত করলে তেলাওয়াতকারী
ও শ্রুতা উভয়ের উপর একই সেজদায়ে তেলাওয়াত আসবে।তবে শর্ত হলো,বারংবার
তেলাওয়াত একটি আয়াতকে কেন্দ্র করেই হতে হবে।এবং তেলাওয়াতের মজলিস এক হতে হবে।যদি সেজদায়ে
তেলাওয়াতের কোনো এক আয়াতকে কয়েক মজলিসে তেলাওয়াত করা হয়,তাহলে
মজলিস ভিন্ন হওয়ার ধরুণ কয়েক সেজদা আসবে।আবার একই মজলিসে যদি ভিন্ন ভিন্ন সেজদার আয়াতকে
তেলাওয়াত করা হয়,তাহলেও কয়েক সেজদা ওয়াজিব হবে।সুতরাং বারংবার তেলাওয়াত
করার পর এক সেজদা ওয়াজিব হওয়ার জন্য শর্ত হলো,একই আয়াতকে বারংবার তেলাওয়াত
করা।এবং মজলিস এক হওয়া।নতুবা এক সেজদা ওয়াজিব হবে না।বরং কয়েক সেজদা ওয়াজিব হবে।(ফাতাওয়ায়ে
হিন্দিয়া-১/১৩৪)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. আপনি যদি এক মজলিসে একাধিক শিক্ষার্থী থেকে তেলাওয়াতে সেজদার কোনো এক আয়াতকে
বারংবার শ্রবণ করেন করেন,তাহলে এক সেজদাই ওয়াজিব হবে। আর যদি কয়েক মজলিসে
একই আয়াতকে বারংবার শ্রবণ করেন, তাহলে কয়েক সেজদা ওয়াজিব হবে।
২. ছাত্রদের ক্ষেত্রেও একই বিধান যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।