আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
133 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (31 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম

১/কেউ যদি বিবাহের আগেই বলে যে,,আমি যদি অমুক মেয়েকে বিয়া করি তাহলে সে তা,,,,এরপর সে যদি ওই মেয়েকে বিয়া করে তাহলে কি তার স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে?এই বেপারে কি নবী থেকে সহিহ কোনো হাদিস আছে?

হাদিসের সনদের পর্যালচনা সহ হাদিস দিলে উপকার হয়।

২/বিয়া আগে তালাক নেই এই হাদিস থেকে কেউ যদি এরকম ব্যাখ্যা করে যে,,,,,(বিয়ার  আগে তালাক নেই) এইখানে যেহেতু তালাক শব্দটাকে অনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে অর্থাৎ কোন তালাক বিয়ার আগে হয় আর কোন তালাক বিয়ার আগে হয়না এইভাবে স্পষ্ট বলা হয় নাই।তাই এখানে যেহেতু তালাক শব্দটা বলা হইছে তাই সকল তালাকই এর অন্তর্ভুক্ত সেটা যে তালাকই হোকনা কেনো,শর্তজুক্ত বা মুয়াল্লাক তালাক হোকনা কেন সেগুলো বিয়ার আগে দিলেও তালাক হবেনা।এইভাবে যদি হাদিসের ব্যাখ্যা করা হয় তাহলে কি এটা ভুল হবে?

৩/আর বিয়ার আগে তালাক দিয়ে রাখলে বিয়ার পরে যদি তালাক হয় তাহলে ওই ব্যক্তি বিয়া করবে কেন?কেননা বিয়ার সাথে সাথে তালাক হয়ে যাবে।

আর ইসলামকে তো সহজ করে দেওয়া হয়েছে আর এইভাবে জদি তালাক হয় তাহলে তো এটা কঠিন হয়ে গেলো।

আল্লাহ তোমাদের পক্ষে যা সহজ আল্লাহ্ তাই চান ও তোমাদের পক্ষে যা কষ্টকর তা তিনি চান না...”[সূরা বাকারাহ্; ০২:১৮৫]

আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে চান না। (সূরা আল মায়েদা, আয়াত ৬)

“তিনি (আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন) দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি’ ”[সূরা হজ্ব; ২২:৭৮]

আমি হানাফি মাজহাবের অনুসারি তারপরও কেন জানি তালাকের এই বিষয়টা মানতে পারতেছিনা, কেমন জানি অর্থহীন মনে হচ্ছে।

জাচাই বাচাই করতে ইচ্ছা করতেছে তাই যদি সাহায্য করেন তাহলে উপকার হবে,মুয়াল্লাক আর শর্তজুক্ত তালাকের হাদিস গুলোর সনদ এবং রাবি পর্যালোচনা সহ হাদিস গুলো দিবেন।

৪/পুর্বে একটা শপথ নিয়েছিলাম কিন্তু এখন আমার সন্দেহ হচ্ছে যে আমি শপথ ঠিকই নিয়েছি কিন্তু মনে মনে নিয়েছি নাকি মুখে উচ্চারণ করে নিয়েছি সেটা আর নিশ্চিত হতে পারতেছিনা, এখন আমি যদি ওই শপথ ভংগ করি তাহলে কি কাফফারা দিতে হবে?(আল্লাহর শপথ নিয়ে বলেছিলাম যে আমি ওই মেয়েটাকে বিয়া করবনা, যদি বিয়া করি তাহলে তা,,,,হবে)এখন যেহেতু আমি শিয়রনা যে মুখে উচ্চারণ করে কথাটা বলছিলাম নাকি মনে মনে বলছিলাম।যদি ওই মেয়েটাকে বিয়া করি তাহার কি এর ফলে তালাক হবে?

৫/শর্তজুক্ত তালাক দেওয়ার পরে যদি শর্তের সাথে কোন কাজটাকে জুক্ত করেছিলাম সে কাজের কথাটা মনে না থাকে তাহলে কি শর্তজুক্ত তালাক হিসেবে গন্য হবে নাকি?যেহেতু কোন কাজটা না করার কথা বলেছি সেটা আর মনে নাই।

1 Answer

0 votes
by (679,640 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

عَنْ الشَّعْبِیِّ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ رَجُلٍ قَالَ لامْرَأَتهِ: کُلُّ امْرَأَةٍ أَتَزَوَّجُهَا عَلَیْک فَهَیَ طَالِقٌ، قَالَ: فَکُلُّ امْرَأَةٍ یَتَزَوَّجُهَا عَلَیْهَا، فَهِیَ طَالِقٌ.
ابن أبي شیبة، المصنف، 4: 65، رقم: 17838، الریاض: مکتبة الرشد

সারমর্মঃ
শা'বি রহঃ থেকে বর্ণিত,তার নিকটে এক ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, যে তার স্ত্রীকে বলেছে যে আমি যেই মহিলাকেই তোমার উপরে বিবাহ করবো,সে তালাক।
ইমাম শা'বী রহঃ বলেন,তাহলে যেই মহিলাকেই সেই তার স্ত্রীর উপরে (স্ত্রী থাকা অবস্থায়) বিবাহ করবে,তার উপরেই তালাক পতিত হয়ে যাবে।     
(মুছান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ৪ঃ৬৫ হাদীস নং ১৭৮৩৮।)

ফাতাওয়ার কিতাব সমুহে উল্লেখ আছেঃ-

وإذا أضاف الطلاق إلی النکاح وقع عقیب النکاح مثل أن یقول لامرأة إن تزوجتک فأنت طالق أو کل امرأة أتزوجہا فہي طالق۔ (الہدایة ۲/۳۶۵)

কেহ যদি বিবাহের সাথে তালাক কে নিসবত করে,তাহলে বিবাহের পর তালাক পতিত হবে। 
(হেদায়াহ ২/৩৬৫)

بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع (3 / 132):
"وأما التعليق بالملك فنحو أن يقول لأجنبية: إن تزوجتك فأنت طالق، وإنه صحيح عند أصحابنا حتى لو تزوجها وقع الطلاق، وعند الشافعي لايصح ولايقع الطلاق، واحتج بقول النبي صلى الله عليه وسلم: «لا طلاق قبل النكاح». والمراد منه التعليق؛ لأن التنجيز مما لايشكل؛ ولأن قوله: أنت طالق في التعليق بالملك تطليق؛ بدليل أن الطلاق عند وجود الشرط يقع به إذا لم يوجد كلام آخر سواه، فكان الكلام السابق تطليقًا، إلا أنه لم يثبت الحكم للحال للمانع وهو عدم الشرط. والتصرف لاينعقد تطليقًا إلا في الملك ولا ملك ههنا فلاينعقد.
(ولنا) أن قوله: أنت طالق ليس تطليقًا للحال، بل هو تطليق عند الشرط على معنى أنه علم على الانطلاق عند الشرط فيستدعي قيام الملك عنده لا في الحال، والملك موجود عند وجود الشرط؛ لأنّ الطلاق يقع بعد وجود الشرط. وأما الحديث فنقول بموجبه: أن «لا طلاق قبل النكاح»، وهذا طلاق بغير النكاح؛ لأنّ المتصرف جعله طلاقًا بعد النكاح على معنى أنه جعله علمًا على الانطلاق بعد النكاح لا أن يجعل منشئًا للطلاق بعد النكاح، أو يبقى الكلام السابق إلى وقت وجود النكاح؛ لأن الثاني محال، والأول خلاف الحقيقة، وإضافة الطلاق إلى الشرع لا إلى الزوج"
সারমর্মঃ-
মালিকানার সাথে শর্ত যুক্ত করা,যেমন কোনো অপরিচিত মহিলাকে বলা,আমি যদি তোমাকে বিবাহ করি,তাহলে তুমি তালাক,সেক্ষেত্রে এটি আমাদের ইমামদেরর নিকটে সহীহ। এমনকি যদি সে সেই মেয়েকে বিবাহ করে,তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে। 
ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর নিকট এটি সহীহ নাই,তালাকও পতিত হবেনা,,,,।
(বাদাইউস সানায়ে' ৩/১৩২)

اللباب :
"وإذا أضاف الطلاق إلى النكاح وقع عقيب النكاح، مثل أن يقول: إن تزوجتك فأنت طالقٌ، أو كل امرأة أتزوجها فهي طالقٌ، وإن أضافه إلى شرطٍ وقع عقيب الشرط، مثل أن يقول لامرأته: إن دخلت الدار فأنت طالقٌ.
 (وإذا أضافه) أي الطلاق (إلى) وجود (شرط وقع عقيب) وجود (الشرط) وذلك (مثل أن يقول لامرأته: إن دخلت الدار فأنت طالق) ، وهذا بالاتفاق، لأن الملك قائم في الحال، والظاهر بقاؤه إلى وقت الشرط، ويصير عند وجود الشرط كالمتكلم بالطلاق في ذلك الوقت". (اللباب في شرح الكتاب ،کتاب الطلاق،(3/ 46)، ط: المكتبة العلمية، بيروت – لبنان)

حجة الله البالغة (2/ 214):
"وقال صلى الله عليه وسلم: " لا طلاق فيما لا يملك ". وقال عليه السلام: " لا طلاق قبل النكاح ". أقول: الظاهر أنه يعم الطلاق المنجر والمعلق بنكاح وغيره، والسبب في ذلك أن الطلاق إنما يجوز في للمصلحة، والمصلحة لا تتمثل عنده قبل أن يملكها، ويرى منها سيرتها، فكان طلاقها قبل ذلك بمنزلة نية المسافر الإقامة في المفازة أو الغازى في دار الحرب مما تكذبه دلائل الحال".
সারমর্মঃ-
যদি তালাককে সম্পর্কযুক্ত করে বিবাহের সাথে,সচক্ষে বিবাহের পর তালাক পতিত হবে।
যেমন কেহ যদি বলে,আমি যদি তোমাকে বিবাহ করি,তাহলে তালাক বা যে মহিলাকেই আমি বিবাহ করবো,সেই তালাক,যদি শর্তের সাথে যুক্ত করে,সেক্ষেত্রে শর্তের পরেই তালাক পতিত হয়ে যাবে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(১.২.৩)
উপরে যাহা উল্লেখ রয়েছে, এটিই হানাফি মাযহাবের ফতোয়া।
শর্তজুক্ত তালাকের হাদিস গুলোর সনদ এবং রাবি পর্যালোচনা জানতে আপনার প্রতি পরামর্শ থাকবে, কোনো উলুমুল হাদীস যেই মাদ্রাসা গুলিতে পড়ানো হয়,সেখানে যাওয়ার।

আরো জানুনঃ- 

(০৪)
আপনি যেহেতু সন্দেহে রয়েছেন সুতরাং এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবেনা।

কোনো শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

(০৫)
প্রবল ধারনার ভিত্তিতে মনে করার চেষ্টা করবেন।
তারপরে মনে না আসলে তালাক হবেনা।
তবে পরামর্শ থাকবে, বিবাহকে নবায়ন করে নেয়ার,তথা নতুন ভাবে বিবাহ পড়িয়ে নেয়ার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...