জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মনে করা হয় শিশুদের পোশাক সম্পর্কে শরীয়তের কোনো নীতিমালা নেই। যেমন ইচ্ছা পরানো যাবে। অথচ এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
বড়দের ব্যাপারে পোশাকের যে নীতিমালা, ছোটদের ক্ষেত্রেও তাই। বিজাতীয় পোশাক যেমন বড়দের জন্য নিষিদ্ধ তেমনি ছোটদের জন্যও নিষিদ্ধ। একইভাবে ছেলেদেরকে মেয়েদের পোশাক এবং মেয়েদেরকে ছেলেদের পোশাক পরানোও গুনাহ। নাবালেগ
সন্তানদেরকে এধরনের নিষিদ্ধ পোশাক পরালে এর গুনাহ হবে মা-বাবার; অথচ এর খারাপ প্রভাব তো সন্তানদের উপর পড়বেই।
ইসলামী শরিয়ত মতে, কোনো প্রাণীর ছবিযুক্ত পোশাক পরিধান করা হারাম। তবে প্রাণহীন বস্তু যেমন—বৃক্ষ, পাহাড়, ঝরনা ইত্যাদির ছবি বৈধ। (আল-বাহরুর রায়েক : ২/২৯, মেরকাতুল মাফাতিহ : ৪৪৮৯)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ أَخْبَرَنَا عَمْرٌو أَنَّ بُكَيْرَ بْنَ الأَشَجِّ حَدَّثَهُ أَنَّ بُسْرَ بْنَ سَعِيْدٍ حَدَّثَهُ أَنَّ زَيْدَ بْنَ خَالِدٍ الْجُهَنِيَّ حَدَّثَهُ وَمَعَ بُسْرِ بْنِ سَعِيْدٍ عُبَيْدُ اللهِ الْخَوْلَانِيُّ الَّذِيْ كَانَ فِيْ حَجْرِ مَيْمُوْنَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَدَّثَهُمَا زَيْدُ بْنُ خَالِدٍ أَنَّ أَبَا طَلْحَةَ حَدَّثَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيْهِ صُوْرَةٌ
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন,
‘ওই ঘরে (রহমতের) ফেরেশতা প্রবেশ করে না, যে ঘরে কোনো ছবি, কুকুর বা এমন ব্যক্তি থাকে, যার ওপর গোসল করা ফরজ।’ (বুখারী ৩২২৫,আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৫২)
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ حَدَّثَنِيْ ابْنُ وَهْبٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُمَرُ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ وَعَدَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم جِبْرِيْلُ فَقَالَ إِنَّا لَا نَدْخُلُ بَيْتًا فِيْهِ صُوْرَةٌ وَلَا كَلْبٌ
সালিম (রহ.) তাঁর পিতার নিকট হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, জিবরীল (আঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ওয়াদা দিয়েছিলেন। আমরা ঐ ঘরে প্রবেশ করি না, যে ঘরে ছবি এবং কুকুর থাকে। (বুখারী ৩২২৭,৫৯৬০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৯৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৯৯৭)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) এক সফর থেকে ফিরে আসেন। (এসে তিনি দেখতে পান) আমি ছবিযুক্ত একটি (দেয়ালের) পর্দা টাঙিয়েছি। তিনি আমাকে তা সরিয়ে নিতে বলেন। অতঃপর আমি তা সরিয়ে ফেলি। (বুখারি শরিফ : হা. ৫৯৫৫)
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একটি (দরজার) পর্দা ছিল। তাতে একটি পাখির ছায়াযুক্ত ছবি ছিল। কেউ এলে তা সামনে পড়ত। অতঃপর মহানবী (সা.) বললেন, আমার সামনে থেকে এটি সরিয়ে নাও। কেননা যখনই আমি এটা দেখি, দুনিয়ার কথা স্মরণ হয়। (মুসলিম শরিফ)
حَدَّثَنَا يَسَرَةُ بْنُ صَفْوَانَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنِ الْقَاسِمِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ دَخَلَ عَلَىَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَفِي الْبَيْتِ قِرَامٌ فِيهِ صُوَرٌ، فَتَلَوَّنَ وَجْهُهُ، ثُمَّ تَنَاوَلَ السِّتْرَ فَهَتَكَهُ، وَقَالَتْ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم" مِنْ أَشَدِّ النَّاسِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ الَّذِينَ يُصَوِّرُونَ هَذِهِ الصُّوَرَ ".
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট আসলেন। তখন ঘরে একখানা পর্দা ঝুলানো ছিল। যাতে ছবি ছিল। তা দেখে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর চেহারার রং পরিবর্তিত হয়ে গেল। এরপর তিনি পর্দাখানা হাতে নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন। ‘আয়িশাহ বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকেদের মধ্যে বললেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে ঐসব লোকের যারা এ সব ছবি অঙ্কণ করে। [বুখারী ৬১০৯,২৪৭৯] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৬৬)
.
.
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
শিশুদের খেলনা,বইয়ে ছবি থাকার বিধান নিয়ে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।
তাই সেক্ষেত্রে ছবির ব্যবহার নিয়ে কিছুটা ছাড় রয়েছে।
সেগুলো এক সময় অন্যত্রে তুলে রাখা যাবে,ঘরে ফেরেশতা প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা থেকে বাঁচা যাবে।
(সতর্কতামূলক সেক্ষেত্রেও ছবির ব্যবহার ঠিক নয়।)
তবে শিশুদের কাপড়ে ছবি থাকলে সেটি সর্বদায় ঘরে থাকবে,সেক্ষেত্রে ঘরে ফেরেশতা প্রবেশের কোনো সুযোগ দেখা যায়না।
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত "শিশুদের জন্য ছবি সম্বলিত কাপড় পরিধান করাও নাজায়েজ, এর গুনাহ বাবা মার হবে।
★সুতরাং বাচ্চাদেরকে কার্টুন আঁকা বা কোনো প্রানী আঁকা জামা পড়ানো যাবেনা।
প্রজাতির বা ময়ুরের ডিজাইন কিরা ক্লিপ বা অন্য কোনো গয়নার ক্ষেত্রে যদি প্রজাতি বা ময়ুরের চেহারা মুখ নাক কান চোখ না থাকে,সেক্ষেত্রে সেটি পড়ানো যাবে।
আর যদি প্রজাপতি বা ময়ুরের চেহারা মুখ নাক কান চোখ থাকে,সেক্ষেত্রে সেটি পড়ানো যাবেনা।
আরো জানুনঃ-