আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
107 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
শাইখ, আসসালামু আলাইকুম  ওয়ারহমাতুল্লাহী ওয়াবারকাতুহ। আমি ইন্টার পরীক্ষা দেয়া শেষ করে এখন কুরআন হিফয করতে চাচ্ছিলাম।  হিফযের জন্য মাদ্রাসায় আবাসিক এ থেকে পড়াটা বেশী ভালো হতো আমার জন্য। আমাদের পরিচিত বিশ্বস্ত একজন মামার পরিচিত একটি খুব ভালো মহিলা মাদ্রাসার সন্ধ্যান পেয়েছি। আমার আম্মু রাজি আলহামদুলিল্লাহ।  আব্বু প্রথমে নিমরাজি ছিলেন,কিন্তু শুরু থেকেই আব্বুর আপত্তি, আমি এখন হিফয করতে পারবো কিনা, কত বছরে শেষ করবো,মনে রাখা কষ্টকর, হিফয করার প্রয়োজনীয়তা কি? হিফয করে লাভ কি?? কুরআন তিলাওয়াত আর অর্থ পড়াই কি যথেষ্ট না? ইত্যাদি বলছিলেন। আব্বু আরো চায়,আমি Higher Study গ্রহণ করি, চাকরী বাকরী করে নিজ পায়ে দাড়াই। আব্বু তাই আমায় চাচ্ছেন না হিফয করাতে।
একটা পর্যায়ে আমার দাদু আমার আব্বুকে ভুল বুঝায়,

তাদের বক্তব্য,  তুমি এখন হিফযে ভর্তি হয়ে কেন টাকা নষ্ট করবা, কেন পাগলামি করতাছো। তুমি বিদেশে এলে ভালো সুযোগ পাইলে তোমায় হিফযে ভর্তি করাবো ( আমাদের বিদেশে যাওয়ার কোনো নিশ্চিয়তা নাই, গত দেড় বছর ধরে আব্বু আমাদের আশা দেখাচ্ছেন যে আমরা লন্ডনে যাবো। আগামী তেও কবে যাবো,আদৌ যাওয়া কনফার্ম কিনা তার নিশ্চয়তা নাই, আর ততদিন যে আমি বেচে থাকবো বা বিদেশে যে সুযোগ পাবো তার গ্যারান্টি কি?? এখন সময় সুযোগ পেয়ে আমি কেন সেটা কাজে লাগাবো না??)। আব্বু আর দাদু মিলে আমার খুবই আশাহত করছে। তারা আমার উপর খুব রাগ ও করেছে।

শাইখ, আমার আম্মুর মত আছে, মাদ্রাসা ও মহিলা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আর সেইফ ইনশাআল্লাহ। আমার পরিচিত মামা আছেন এই দায়িত্বে।  আমার আপন মামা ও এই ভরসা দিয়েছেন, বাবার কথা শুনা লাগবে না, ভর্তি হয়ে যাও, আল্লাহ ভরসা।

শাইখ, আমার খুব ইচ্ছে হিফয যাত্রা শুরু করা। ঘরে একা একা মনের জোর পাবো না আমি। অনলাইন এ ও অনেক ফিতনা।আমার জন্য মাদ্রাসায় ভর্তি হিফয করা ছাড়া অন্য কোনো অপশন নেই।

আমি কি আব্বুর অনুমতি ছাড়া মাদ্রাসায় আবাসিক এ হিফয বিভাগ ভর্তি হয়ে ভুল করেছি?? আল্লাহ কি নারাজ হবেন আমার উপর? ইসলাম  কি আমায় এই অনুমতি দেয়???

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ


মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানা, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)
 
আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,
وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

 
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা মূলত তিনটি মূলনীতির আলোকে হয়ে থাকে।
(১) তাদের আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে।কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে হতে পারবে না।এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।
(২)যে কাজের আদেশ তারা দিবেন,এতে তাদের ফায়দা থাকতে হবে,বা শরীয়তের পছন্দসই কাজ হতে হবে।
(৩)যে কাজের আদেশ দিচ্ছেন,তা তাদের সন্তানদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারবে না।
সুতরাং যদি সন্তানের কষ্ট লাগবের জন্য তারা আদেশ দিয়ে থাকেন,তাহলে এক্ষেত্রে মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা ওয়াজিব।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1707

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবা যদি আপনাকে হিফজ বিভাগে ভর্তি হওয়ার অনুমতি না দেন,স্পষ্ট আকারে নিষেধ করেন,সেক্ষেত্রে আপনার বাবার এই আদেশ মানার পরামর্শ থাকবে। 
নিজে নিজে মেহনত করে ঘরোয়া ভাবে যতটুকু সম্ভব মুখস্থ করতে পারেন,আর সময় সুযোগ থাকলে কুরআনের তরজমা, ব্যাখ্যা পড়তে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 176 views
...