আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
147 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
অনেক সময় কারোর সাথে কথা বলার সময় হঠাৎ একজন অপর জনকে ছোট খাট বিভিন্ন বিষয়ে কথা দেয়া হয়ে যায়, যেমন: হ্যাঁ আমি ঐ ব্যাপারটা দেখবনে বা অমুক কাজটা করে দেবোনে অথবা দেখা যাবে সময় সুযোগ পেলে অমুক জায়গায় যাওয়া যাবে কিংবা ঠিক আছে অমুক জিনিস দেব ইনশাআল্লাহ, এহেন নানান ধরনের কথা। কিন্তু এগুলো আসলে নিছক কথা বলতে বলতে বলা হয়ে যায়। যাকে এসব কথা দেওয়া হয় সেও হয়তো পরে এসবের তেমন ধার ধারে না বা মনে করিয়ে দেয় না। কারণ যাকে কথা দেওয়া হয়েছে সেও খুব সচেতন ভাবে হয়তো বলে না এবং যে কথা দেয় সেও অতটা সচেতন ভাবে বলে না। বিষয়টা অনেকটা কথার ছলে বলা হয়ে থাকে।
এসব ক্ষেত্রে কি উক্ত সকল ধরনের কথা রাখা জরুরি। কেননা এমন কথা না রাখার ক্ষেত্রে যাকে কথা দেয়া হয় তার কোনো ক্ষতি হয় না বলা চলে।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/31561/?show=31561#q31561 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

ওয়াদাকে পূর্ণ করার বিধান কি? ওয়াজিব না মুস্তাহাব? এবং ওয়াদাকে ভঙ্গ করা  হারাম না মাকরুহ?

সে সম্পর্কে ইমাম নববী রাহ বলেন,

" ﺃﺟﻤﻊَ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀُ ﻋﻠﻰ ﺃﻥ ﻣَﻦ ﻭﻋﺪ ﺇﻧﺴﺎﻧﺎً ﺷﻴﺌﺎً ﻟﻴﺲ ﺑﻤﻨﻬﻲّ ﻋﻨﻪ ﻓﻴﻨﺒﻐﻲ ﺃﻥ ﻳﻔﻲ ﺑﻮﻋﺪﻩ ، ﻭﻫﻞ ﺫﻟﻚ ﻭﺍﺟﺐٌ ، ﺃﻭ ﻣﺴﺘﺤﺐّ ؟ ﻓﻴﻪ ﺧﻼﻑ ﺑﻴﻨﻬﻢ ، ﺫﻫﺐ ﺍﻟﺸﺎﻓﻌﻲُّ ﻭﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻭﺍﻟﺠﻤﻬﻮﺭُ ﺇﻟﻰ ﺃﻧﻪ ﻣﺴﺘﺤﺐّ ، ﻓﻠﻮ ﺗﺮﻛﻪ ﻓﺎﺗﻪ ﺍﻟﻔﻀﻞ ، ﻭﺍﺭﺗﻜﺐ ﺍﻟﻤﻜﺮﻭﻩ ﻛﺮﺍﻫﺔ ﺗﻨﺰﻳﻪ ﺷﺪﻳﺪﺓ، ﻭﻟﻜﻦ ﻻ ﻳﺄﺛﻢ .

ﻭﺫﻫﺐَ ﺟﻤﺎﻋﺔٌ ﺇﻟﻰ ﺃﻧﻪ ﻭﺍﺟﺐ ، ﻗﺎﻝ ﺍﻹِﻣﺎﻡُ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﻌﺮﺑﻲ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻲ : ﺃﺟﻞُّ ﻣَﻦ ﺫﻫﺐَ ﺇﻟﻰ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻤﺬﻫﺐ ﻋﻤﺮُ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰ ، ﻗﺎﻝ : ﻭﺫﻫﺒﺖِ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻴﺔ ﻣﺬﻫﺒﺎً ﺛﺎﻟﺜﺎً : ﺃﻧﻪ ﺇﻥ ﺍﺭﺗﺒﻂ ﺍﻟﻮﻋﺪُ ﺑﺴﺒﺐ ﻛﻘﻮﻟﻪ : ﺗﺰﻭّﺝ ﻭﻟﻚ ﻛﺬﺍ، ﺃﻭ ﺍﺣﻠﻒ ﺃﻧﻚ ﻻ ﺗﺸﺘﻤﻨﻲ ﻭﻟﻚ ﻛﺬﺍ، ﺃﻭ ﻧﺤﻮ ﺫﻟﻚ ، ﻭﺟﺐ ﺍﻟﻮﻓﺎﺀ ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻭﻋﺪﺍً ﻣُﻄﻠﻘﺎً، ﻟﻢ ﻳﺠﺐ .

 

ﻭﺍﺳﺘﺪﻝّ ﻣَﻦ ﻟﻢ ﻳﻮﺟﺒﻪ ﺑﺄﻧﻪ ﻓﻲ ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﻬﺒﺔ ، ﻭﺍﻟﻬﺒﺔ ﻻ ﺗﻠﺰﻡ ﺇﻻ ﺑﺎﻟﻘﺒﺾ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﺠﻤﻬﻮﺭ، ﻭﻋﻨﺪ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻴﺔ : ﺗﻠﺰﻡ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﻘﺒﺾ "

উলামায়ে কেরাম এ কথার উপর একমত যে,যদি কোনো মানুষ কারো সাথে এমন কোনো বিষয়ের ওয়াদা করে যা নিষিদ্ধ নয়, তাহলে তার জন্য উচিৎ হল সেই ওয়াদাকে পূর্ণ করা। ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না মুস্তাহাব? এ সম্পর্কে অবশ্যই মতপার্থক্য রয়েছে। ইমাম শা'ফেয়ী ও ইমাম আবু হানিফা এবং জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা মুস্তাহাব। যদি সে ওয়াদাকে ভঙ্গ করে ফেলে তাহলে যেন সে উত্তমতাকে পরিত্যাগ করল এবং শক্ত মাকরুহে তানযিহি সম্ভলিত কাজে লিপ্ত হল। কিন্তু সে আবার গোনাহগার হবে না। অন্যদিকে এক দল উলামায়ে কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব। ইমাম আবু বকর ইবনুল আরাবি মালিকি রাহ বলেন, যারা উক্ত মাযহাবের প্রবক্তা তাদের মধ্যে এটা উমর ইবনে আব্দুল আযিয রাহ শীর্ষে রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, মালিকি মাযহাবের উলামাগণ তৃতীয় আরেকটি মাযহাবকে বর্ণনা করেছেন। সেটা হল যে, যদি কেউ কাউকে বলে, তুমি বিয়ে করবে বলে ওয়াদা করো তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে। অথবা তুমি ওয়াদা করো আমাকে গালি দেবে না তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে ইত্যাদি বাক্য। তাহলে এমতাবস্থায় ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব হবে। আর যদি স্বাভাবিক ওয়াদা হয়ে থাকে তাহলে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না। যারা ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব বলেন না তারা বলেন, যে ওয়াদা হলো হেবার সমার্থক। আর জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে হেবা কবজা ব্যতীত পরিপূর্ণ হয় না। তবে ইমাম মালিক রাহ এর মতে ওয়াদা কবজার পূর্বেও ওয়াজিব হয়ে যায়। (আল-আযকার-৩১৭)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

উক্ত কথাগুলো কাউকে বলা মানে ওয়াদা করা। আর কোন বিষয়ে ওয়াদা করে তা পালন করা একজন মুমিনের কর্তব্য ও দায়িত্ব। সুতরাং শরীয়ত সম্মত কারণ ছাড়া এমন ওয়াদাও করে তা অযথা ভঙ্গ করা অত্যান্ত গর্হিত কাজ। তবে নিজের জন্য কল্যাণকর মনে হলে বা কোন শরীয়ত সম্মত কারণ থাকলে উক্ত ওয়াদা ভঙ্গ করলে এতে কোন গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ।

উল্লেখ্য যে, আর যদি কথা বলার সময় সে ওয়াদা হিসেবে না বলে থাকে। বরং এমনি কথার কথা বলে থাকে এবং যাকে বলা হচ্ছে সেও বিষয়টা জানে বা বুঝে যে, এগুলো এমনি বলেছে। তাহলে এটা ওয়াদাও হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (26 points)
edited by
আমার একটি জিনিস একজন আমার কাছ থেকে চেয়েছে। জিনিসটি আমি সাধারণত যত্ন সহকারে ব্যবহার করি। কিন্তু অন্য কাউকে দিলে আমার আশঙ্কা যে, সে আমার মত জিনিসটি যত্ন সহকারে হয়তো ব্যবহার করতে পারবে না। আর জিনিসটির কিছুটা ক্ষতি হলেও তা আমার জন্য মন খারাপের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

এখন সে যখন আমার কাছ থেকে জিনিসটি চেয়েছে, তখন আমি সরাসরি বলিনি আমি তাকে জিনিসটি দেবো। বরং একটু ঘুরিয়ে বলেছি। কারণ আমি চাই না সেটা কাউকে দিতে। কিন্তু সরাসরি নাও করতে পারিনি। এক্ষেত্রে উক্ত ওয়াদা কি রক্ষা না করলে গুনাহ হবে?
by (63,560 points)
প্রশ্নোত্ত ক্ষেত্রে আপনি চাইলে আপনার ওই জিনিসটি তাকে নাও দিতে পারেন। এতে কোনো গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে তাকে দিলে আপনি অনেক সওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।
by (26 points)
edited by
শায়খ, উপরের উক্ত কমেন্ট করার কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনি উত্তর দিয়েছেন। কিন্তু আমার উপরের কমেন্টটি করার কিছুক্ষণ পর আমি সেটি একটু সংযোজন ও সংশোধন করেছিলাম। 

তাহলে কি উত্তর একই থাকবে? না কি পরিবর্তন হবে? আরও একবার কমেন্টটি দেখলে ভালো হতো।
by (26 points)
শায়খ, উপরের কমেন্টটি একটু দেখবেন...
by (63,560 points)
জী, উত্তর ঠিক থাকবে

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...