আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in পবিত্রতা (Purity) by (56 points)
edited by
১.শায়খ আমি বেশ কিছুদিন যাবৎ নামাজ ওজু পবিত্রতা নিয়ে সমস্যা ফিল করছি।ফরজ গোসল করতে গেলে মনে হয় অঙ্গ ভিজেনি বার বার পানি দি তাও সন্দেহ হয় বিশেষ করে কুলি করা নিয়ে গোসলের শেসে মনে হয় কুলি করি নি,আবার ওজু করতে গেলে মনে হয় অঙ্গ ভিজে আছে মাথা মাসেহ হচ্ছে না যতবার ওজু করি মনে হয় কোনো না কোনো অঙ্গ শুকনো আছে,আবার কোনো একটা ওয়াক্তের নামাজও আমি সন্দেহ ছাড়া পড়তে পারিনা।প্রতি ওয়াক্তেই সেজদা কয়টা দিলাম এটা নিয়ে সন্দেহ হয়। মাঝেমধ্যে রাকাত নিয়ে সন্দেহ হয়। এমনকি সহু সেজদা দিতে হয় প্রতি ওয়াক্তের নামাজেই। আবার সহু সেজদার ক্ষেত্রেও ১ নাকি ২ টা দিলাম তা নিয়েও মাঝে মধ্যে সন্দেহ হয়।প্রতি ওয়াক্তের নামাজেই সেজদা নিয়ে সন্দেহ,শুরুতে তাকবীর দিছি কিনা তা নিয়ে সন্দেহ,এক ওয়াক্তের নামাজ ছেড়ে দিয়ে ৩ বার পড়লেও একই অবস্থা।আমি আর সহ্য করতে পারছি।গোসলেও আগের চেয়ে সময় বেশি লাগছে।পানি খরচ ও বেশি হচ্ছে কিন্তু সন্দেহ যাচ্ছে না।আমি কি ওয়াসওয়াসার বা ocd তে আক্রান্ত রোগী??আমি ওজু নামাজ যাই আদায় করি কোনোটাই শান্তিতে করতে পারছি না শুধু সন্দেহ হচ্ছে।

২.তাশাহুদ পড়ার পর যদি সন্দেহ হয় যে এই রাকাতে বা পূর্বের রাকাতে সেজদা ১ করেছিলাম নাকি ২ টা এবং এই সন্দেহের বসে যদি তাশাহুদের পর ১ সেজদা দেয় ও নামাজ শেষে সহু সেজদা দেয় তাহলে কি নামাজ হবে??নিয়মটা বলবে প্লিজ

৩.সালাম ফেরানোর পর যদি মনে সন্দেহ জাগে শেষ বৈঠকে সহু সেজদা একটা নাকি দুইটা দিয়ছি।এবং যদি সালাম ফিরানোর পর আবার ২ টা সহু সেজদা দিয়ে পুনরায় সালাম ফিরায় এতে কি নামাজ?

৪,আমি ১ ওয়াক্ত নামাজও সন্দেহ ছাড়া আদায় করতে পারিনা একই নামাজ ২/৩ করে পড়লেও।ওজুতেও সর্বদা সন্দেহ থেকে যায় যতবারই করিনা কোনো না কোনো সন্দেহ থেকেই যায়। আমার ব্যপারে কি কোনো ছাড় আছে।সন্দেহসহ ওজু বা নমাজ পড়লে নামাজ হবে??

৫.নামাজে রুকু করেছি কিনা সন্দেহ হলে কি করবো?

৬.সামিআল্লাহ হুলিমান হামিদাহ বলার পর আগে রুকু করেচিলাম কিনা নিয়ে সন্দেহ হলে কি করবো?

৭.২য় রাকাত নামাজ পড়া অবস্থায় যদি সন্দেহ হয় যে পঊর্বের রাকাতে অর্থাৎ ১ম রাকাতে রুকু আদায় করেছি না।এভাবে সন্দেহ নিয়ে যদি নামাজ শেষ করি তাহলে উক্ত নামাজ আদায় হবে কি??

৮.১ টা নাকি ২ট সেজদা করেছি এটা নি সামান্য সন্দেহ হলেও যদি আরো একটা সেজদা আদায় করি এবং শেষ বৈঠকে সাহু সেজদা দি তাহলে কি নামাজ শুদ্ধ হবে?সামান্য সন্দেহেও আরেকটা সেজদা দি কারন সর্বদাই এমন হচ্ছে

৯.নামাজের শেষে ওখানে বসে পায়জামা চেক করছিলাম যে পাজামা টাকনুর উপর উঠে গেচিলো কিনা সেজদার সময় তখন হঠাৎ মনে সন্দেহ হলো সালাম পিরিয়েছিলাম কি মনে পড়ছে না।তখন পুনরায় সালাম ফিরিয়েছি কিনা ৩০ মিনিট পর আবার সন্দেহ হচ্চে।একন করনীয় কি?বিবরণ মতে উক্ত নামাজ হয়েছে কি?

 ১০.সহু সেজদা নিয়ে সন্দেহ হলে যে ১ টা নাকি ২ টা। এভাবে সন্দেহ থাকাবস্থায় সালাম ফিরিয়ে পুনরায় আবার ২ টা সহু সেজদা দিলে কি নামাজ হবে?? নিয়মটা বলবেন প্লিজ

1 Answer

0 votes
by (686,800 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
নামাজের মধ্যে এসব ওয়াসওয়াসা আসলে প্রবল ধারনার উপর আমল করবেন।
প্রবল ধারনা না হলে কম সংখ্যাকে ধরে নামাজ শেষ করবেন,ও শেষে সেজদায়ে সাহু আদায় করবেন। 

এই ওয়াসওয়াসা থেকে আপনাকে বের হতে হবে।
এটি অসুস্থতার দিকে এগোচ্ছে। 
,
আপনি এই ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবেননা,মমে আসতেই দিবেননা। তাহলেই ইনশাআল্লাহ সমাধান মিলবে। 

যে কোনো ওয়াসওয়াসার প্রধান চিকিৎসা এটাই যে, একে গুরুত্ব না দেয়া।  কেননা, এটা মূলত শয়তানের কাজ। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّمَا النَّجْوَىٰ مِنَ الشَّيْطَانِ لِيَحْزُنَ الَّذِينَ آمَنُوا وَلَيْسَ بِضَارِّهِمْ شَيْئًا إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ

এই ওয়াসওয়াসা তো শয়তানের কাজ; মুমিনদেরকে দুঃখ দেয়ার দেয়ার জন্যে। তবে (এই ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে) সে মুমিনদেরকে চুল পরিমাণ ক্ষতি করতে পারে না, আল্লাহর হুকুম ছাড়া। মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপর ভরসা করা। (সূরা মুজাদালাহ ১০)

কিছু পরামর্শঃ-

আপনাকে এমন ভাবে নামাজ পড়তে হবে যেনো আমি আল্লাহ তায়ালার সামনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছি। আর আল্লাহ তায়ালা নামাজ পড়া দেখছেন। 

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,

قَالَ مَا الإِحْسَانُ قَالَ " أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ ".

‘আল্লাহর ইবাদত করো এমনভাবে যেন তাঁকে তুমি দেখতে পাচ্ছ। আর যদি দেখতে না পাও, তবে তিনি যেন তোমাকে দেখছেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ৫০; মুসলিম, হাদিস : ৮)
 
অন্য এক হাদীসে এসেছে-

ثُمَّ قَالَ مَنْ تَوَضَّأَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ لاَ يُحَدِّثُ نَفْسَهُ فِيهِمَا بِشَيْءٍ إِلاَّ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে সুন্দরভাবে অজু করে, অতঃপর মন ও শরীর একত্র করে একাগ্রতার সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে (অন্য বর্ণনায় এসেছে যে নামাজে ওয়াসওয়াসা স্থান পায় না) তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়)। ’ (নাসাঈ, হাদিস : ১৫১; বুখারি, হাদিস : ১৯৩৪)

★কিরাআত, তাসবিহ,তাকবির,তাশাহুদ,দরুদ ইত্যাদি পড়ার সময় নিজের কানে আসে,এমন আওয়াজে জিহবা নাড়িয়ে উচ্চারণ করুন।

নামাজে ‘হুজুরে দিল’ বা একাগ্র থাকা; এটি নামাজের প্রাণ। এমনভাবে নামাজ পড়তে হবে যেন আল্লাহ আমাকে দেখছেন। 

নামাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই কল্পনা ধরে রাখার অনুশীলন করুন যে ‘আল্লাহ আমাকে দেখছেন’। এভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে নামাজ শেষ করার চেষ্টা অব্যাহত রাখুন।

নামাজে যা কিছু পাঠ করা হয়, তা বিশুদ্ধ উচ্চারণে পড়ার চেষ্টা করুন। এটি অন্তরের উপস্থিতিকে আরো দৃঢ় করে।

নামাজে  দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করুন। ভাবুন, এই নামাজই হয়তো বা আপনার জীবনের শেষ নামাজ।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
হ্যাঁ, এভাবে নামাজ হয়ে যাবে।

(০৩)
এতে নামাজ হয়ে যাবে।
তবে শর্ত হলো এর মাঝে নামাজ ভঙ্গকারী কোনো কাজ, যেমন কথাবার্তা,খাওয়া দাওয়া ইত্যাদি করা যাবেনা।

(০৪)
আপনার অযু নামাজ হয়ে যাবে।
আপন এসব ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবেননা।
আপনার প্রতি চিকিৎসা গ্রহনের পরামর্শ রইলো।

(০৫)
প্রবল ধারনার উপর আমল করবেন। 
প্রবল ধারনা না হলে রুকু করেননি ধরে নিয়ে রুকু করবেন।
শেষে সেজদায়ে সাহু আদায় করবেন। 

(০৬)
আর রুকু করতে হবেনা।

(০৭)
আপনার নামাজ হয়ে যাবে।

(০৮)
হ্যাঁ, এভাবে আপনার নামাজ হয়ে যাবে।

(০৯)
আপনার নামাজ হয়ে গিয়েছে।
কিছুই করতে হবেনা।

(১০)
হ্যাঁ, এভাবে নামাজ হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...