আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
949 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম

১.আযানের সময় কি ইবাদত করা যায়?? অর্থাৎ ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে আমি নামাযে দাঁড়ালাম আর আমার নামাজ চলাকালীন সময়েই আযান শুরু হলো। এতে কি সমস্যা হবে??

২. গ্রামে দেখা টানা ৩০ মিনিট মতো বিভিন্ন মসজিদে আযান শোনা যায়। এক্ষেত্রে কি আমার আযান শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে নাকি একটা আযানের জবাব দিয়েই নামাজ শুরু করতে পারব?

৩. ওয়াক্ত হওয়ার পর পর নামাজ শুরু করে দেওয়াতে যদি আমার নামাজের পরও আযান চলে এতে কি আমি আমার নামাজের পর আযানের জবাব দিতে পারব??
উক্ত ৩ টা প্রশ্নই মহিলারা ঘরে নামাজের ক্ষেত্রে কি করবে সে ব্যাপারে।

1 Answer

0 votes
by (589,740 points)
ওয়া আলাইকুম আসসালাম।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ- 

ভুমিকা
মহিলা একা নামায পড়ুক বা জমাতের সাথে পড়ুক তাদের জন্য ইক্বামত নেই।
আহসানুল ফাতাওয়া-২/২৮৩

নামাযের জন্য আযান ফরয বা ওয়াজিব নয় বরং সুন্নাত।
ফাতাওয়ায়ে ক্বাসিমিয়্যাহ-৫/৩৬২

ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেনঃ 
(ﻗَﻮْﻟُﻪُ: ﻟِﻠﺮِّﺟَﺎﻝِ) ﺃَﻣَّﺎ اﻟﻨِّﺴَﺎءُ ﻓَﻴُﻜْﺮَﻩُ ﻟَﻬُﻦَّ اﻷَْﺫَاﻥُ ﻭَﻛَﺬَا اﻹِْﻗَﺎﻣَﺔُ، ﻟِﻤَﺎ ﺭُﻭِﻱَ ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲٍ ﻭَاﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﻣِﻦْ ﻛَﺮَاﻫَﺘِﻬِﻤَﺎ ﻟَﻬُﻦَّ؛ ﻭَﻷَِﻥَّ ﻣَﺒْﻨَﻰ ﺣَﺎﻟِﻬِﻦَّ ﻋَﻠَﻰ اﻟﺴَّﺘْﺮِ، ﻭَﺭَﻓْﻊُ ﺻَﻮْﺗِﻬِﻦَّ ﺣَﺮَاﻡٌ ﺇﻣْﺪَاﺩٌ، ﺛُﻢَّ اﻟﻈَّﺎﻫِﺮُ ﺃَﻧَّﻪُ ﻳُﺴَﻦُّ ﻟِﻠﺼَّﺒِﻲِّ ﺇﺫَا ﺃَﺭَاﺩَ اﻟﺼَّﻼَﺓَ ﻛَﻤَﺎ ﻳُﺴَﻦُّ ﻟِﻠْﺒَﺎﻟِﻎِ ﻭَﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﻛَﺮَاﻫَﺔِ ﺃَﺫَاﻧِﻪِ ﻟِﻐَﻴْﺮِﻩِ ﻛَﻼَﻡٌ ﻛَﻤَﺎ ﺳَﻴَﺄْﺗِﻲ ﻓَﺎﻓْﻬَﻢْ.
আযান পুরুষদের জন্য সুন্নাত।এবং মহিলাদের জন্য আযান-ঈক্বামত মাকরুহ। হযরত আনস রাযি এবং ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,যে তারা মহিলাদের জন্য আযান-ইক্বামতকে অপছন্দ করতেন।কেননা মহিলাদের অবস্থান পর্দার আড়ালে।এবং তাদের স্বরকে পর পুরুষের সামনে উচ্ছ করা হারাম।নাবালেক বালকদের জন্য আযান-ঈক্বামত মাসনুন যখন তারা নামাযের ইচ্ছা পোষন করবে।যেভাবে বালেগদের জন্য মাসনুন।তবে যদিও নাবালেক কর্তৃক বালেগদের জন্য আযান-ঈক্বামত প্রদাণ মাকরুহ।এবং এ বিষয়ে আলোচনা রয়েছে।
{রদ্দুল মুহতার;১/৩৮৪} 

قال (وليس على النساء أذان ولا إقامة) لأنهما سنة الصلاة بالجماعة وجماعتهن منسوخة لما في اجتماعهن من الفتنة وكذلك إن صلين بالجماعة صلين بغير أذان ولا إقامة 
মহিলাদের উপর আযান-ঈক্বামত নেই।কেননা আযান-ঈক্বামত হচ্ছে জামাতের সাথে নামায আদায়কালীন সুন্নাত।আর মহিলাদের জামাতের সাথে নামায মানসুখ বা রহিত কেননা মহিলাদের জমায়েত ফিৎনা আশংকাজনক।ঠিকতেমনিভাবে যদি তারা জামাতে নামায পড়েও নেয় তবে যেন তারা আযান-ঈক্বামত ব্যতীত পড়ে।
মাবসুত-সারখাসী-১/১৩৩)



আযান প্রচলনের হেকমত বা রহস্য হিসেবে 
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় "বর্ণিত রয়েছে,
شُرِعَ الأَْذَانُ لِلإِْعْلاَمِ بِدُخُول وَقْتِ الصَّلاَةِ، وَإِعْلاَءِ اسْمِ اللَّهِ بِالتَّكْبِيرِ، وَإِظْهَارِ شَرْعِهِ وَرِفْعَةِ رَسُولِهِ، وَنِدَاءِ النَّاسِ إِلَى الْفَلاَحِ وَالنَّجَاحِ
তরজমাঃ-
নামাযের ওয়াক্ত প্রবেশ হয়েছে, একথা বোঝানোর জন্য আযানের প্রচলন শুরু হয়।শুধু তাই নয় বরং তাকবীরের মাধ্যমে আল্লাহর নামকে উচু করার স্বার্থে।এবং আল্লাহ তা'আলার বিধি-বিধানকে প্রকাশ করতে ও তার রাসূল সাঃ এর মর্যদাকে বৃদ্ধি করতে সর্বোপরি লোকদিগকে কল্যাণ ও কামিয়াবির দিকে ডাকতে আযানের প্রচলন শুরু হয়।
(২/৩৫৯)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
ফুকাহায়ে কেরামদের উপরোক্ত  আলোচনা দ্বারা বুঝা যায় যে,আযান হচ্ছে নামাযের ওয়াক্ত প্রবেশের ঘোষক।কিন্তু যেহেতু আযানের পরপরই নামায শুরু করাটা সুবিধাজনক। তাই ওয়াক্ত প্রবেশের সাথে সাথেই আযান না দিয়ে বরং হাদীসে বর্ণিত মুস্তাহাব ওয়াক্তের কিছু পূর্বে আযান দেয়া হয়ে থাকে।
সুতরাং প্রত্যেক নামাযের ওয়াক্ত হয়ে গেলে আযান হোক বা নাই হোক, শোনা যাক বা নাই যাক।
নামায পড়ে নিলে নামায অাদায় হয়ে যাবে।
তবে প্রত্যেক নামাযের মুস্তাহাব ওয়াক্তেই নামায পড়া উত্তম।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/3575

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
আযানের সময় নামায পড়লে অর্থাৎ ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে যদি কেউ নামাযে দাঁড়িয়ে যায়, এবং তার নামাজ চলাকালীন সময়েই আযান শুরু হয়ে যায়।তাহলে এতে তার নামায ফাসিদ হবে না।তবে উত্তম হল,মহল্লার আযান হওয়ার পর আযানের জবাব প্রদানের পর নামাযে দাড়ানো।

(২)
গ্রামে অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ যাবৎ বিভিন্ন মসজিদে আযান হয়।এক্ষেত্রে কেউ তার নিকটের মসজিদের আযানের জবাব দেয়ার পরই নামায শুরু করবে।এটাই উত্তম।সবগুলো আযানের জবাব প্রদান করতে না।তবে কেউ কোনো একটা মসজিদের আযান শ্রবণ করার পর নামায পড়ে নিলেও নামাযে কোনো সমস্যা হবে না।


(৩)
ওয়াক্ত হওয়ার পর পর কেউ নামাজ শুরু করে দিলে যদি কেউ নামাজের পরও আযান শুনে, এতে নামাজ আদায়ের পরও আযানের জবাব দেওয়া মুস্তাহাব।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...