আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
122 views
in পবিত্রতা (Purity) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমার বাবুর বয়স পাঁচ মাস আলহামদুলিল্লাহ। বাবু হওয়ার আগে আমার পিরিয়ড নিয়মিত ছিলো। বাবু হওয়ার পর থেকে দেখা যায় পিরিয়ডের এক সপ্তাহ পর অথবা কয়েকদিন পর আবার কালচে স্রাব দেখা যায়। এটা পিরিয়ডের মতোই চার পাঁচ দিন থাকে আবার ঠিক হয়ে যায়। ডাক্তার বলেছে বাচ্চা হওয়ার পর এমন অনিয়মিত রক্তস্রাব হতে পারে তাই ঐ দিনগুলোতে আমি সলাত পড়ি।

এই মাসে আমার পিরিয়ডের ডেইট এর সময় শুধু স্রাবের রঙ গাঢ় লাল দেখা গেছে তেমন ব্লিডিং হয় নি, তখন এটাকে পিরিয়ড ধরে আমি সলাত বন্ধ রেখেছি।  কিন্তু এখন প্রায় ৮, ৯ দিন পর আবার শুরু হয়েছে।  এখন ৮ দিন আগেরটার চেয়ে ব্লিডিং একটু বেশী যদিও নরমাল পিরিয়ডের মতো এত ফ্লো নেই। হঠাৎ হঠাৎ রক্ত আসছে।

এখন আমি এই অবস্থাটা কী ধরবো? আর যেহেতু বাচ্চা হওয়ার পর  অনিয়মিত হয় তাই কোনটাকে হায়েজ ধরবো আগেরটা নাকি এখনেরটা?

প্রায় প্রতি মাসেই এগুলো নিয়ে কনফিউজড হয়ে যাই। আর এক মাস পরেরটা হায়েজ ধরে নিয়ে অন্যদিনগুলোতে সলাত, কুরআন পড়ি। এই আবস্থায় কোরআন পড়া যাবে?

1 Answer

0 votes
by (685,600 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০দিন।

এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)

বিস্তারিত জানুনঃ
,
★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তুহর তথা দুই হায়েজের মাঝে পবিত্রতার সর্বনিম্ন সীমা পনেরো দিন।
এই পনেরো দিনের মধ্যে কোনো রক্ত আসলে সেটি হায়েজ নয়,বরং সেটি ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা।
এই সময়ে নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।    

হজরত হান্নাদ [রহ] আম্মাজান আয়েশা [রা]-এর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, ফাতিমা বিনতে হুবাইশ নামক এক নারী একবার রাসুল [সা]-এর সমীপে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল, আমি একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত মেয়ে। আমি তো পাক হই না। তাই আমি কি নামাজ পড়া ছেড়ে দেবো? রাসুল [সা] বললেন, না, কারণ এ রক্ত হায়েযের নয়; বরং এ হলো শিরা থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত। সুতরাং যখন তোমার হায়েযের নির্ধারিত দিনগুলি আসে তখন সে দিনগুলি নামাজ ছেড়ে দেবে। আর হায়েযের দিন চলে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে নেবে এবং নামাজ আদায় করবে। [তিরমিজি, হাদিস-১২৫]
     
لما قال الحصکفیؒ: واقل الطہر بین الحیضتین او النفاس والحیض خمسۃ عشر یومًا ولیالیھا اجماعًا۔ (الدرالمختارعلی صدر ردّالمحتار:ج؍۱،ص؍۲۸۵، باب الحیض)
সারমর্মঃ দুই হায়েজ বা নিফাস ও হায়েজের মধ্যে   
পবিত্রতার সর্বনিম্ন সীমা সর্বসম্মতিক্রমে পনেরো দিন পনেরো রাত।

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার হায়েজের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০ দিনের মধ্যে যে কালারেরই স্রাব আসবে,সেটিকেই হায়েজ ধরবেন।
নামাজ,তিলাওয়াত বন্ধ রাখতে হবে 
স্পষ্ট সাদা আসলে কেবল সেটিকে পবিত্রতা ধরবেন।
১০ দিনের আগেই হায়েজ বন্ধ হয়ে গেলে যখন থেকে বন্ধ হবে,সেই ওয়াক্ত থেকে নামাজ আদায় করবেন,তিলাওয়াত করতে পারবেন।

হায়েজ শুরু হওয়ার ১০ দিন পরেও যদি সাদা ব্যাতিত অন্য কালারের স্রাব আসতেই থাকে,সেক্ষেত্রে ১০ দিন পর্যন্ত হায়েজ ধরবেন,১১ তম দিন থেকে ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা ধরবেন।
১১ তম দিন থেকে নামাজ তিলাওয়াত চালিয়ে যাবেন।
,

আর দুই হায়েজের মাঝে নুন্যতম ১৫ দিন যেহেতু পবিত্রতার সময়,সুতরাং এক হায়েজ শেষ হওয়ার পর ১৫ দিন শেষ  না হতেই সেই সময়ে সাদা ব্যাতিত যেকোনো কালারের স্রাব আসলে সেটিকে ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা ধরা হবে।
এর মধ্যে নামাজ তিলাওয়াত চালিয়ে যেতে হবে।

এভাবে ১৫ দিন যাওয়ার পর আবারো অন্য কালারের স্রাব আসবে সেটিকে হায়েজ ধরতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...