আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
110 views
in পবিত্রতা (Purity) by (17 points)
আমার হলুদস্রাবের সমস্যা আছে। এক্ষেত্রে ফাতওয়ায় জানতে পেরেছিলাম যে লালকিছুর উপস্থিতিকেই হায়েজ ধরা হবে। সে হিসেবে গত ২৬ তারিখ আনুমানিক ৩টা থেকে হায়েজ শুরু হয় অর্থাৎ ব্লাড দেখা যায় তারপর ব্লাড বা লাল কিছুর উপস্থিতি ৩০তারিখ দুপুর পর্যন্ত দেখা গেলেও তারপর থেকে আবার হলুদস্রাব দেখা যায়। উল্লেখ্য যে আমি ব্রেস্ট টিউমারের চিকিৎসার জন্য ওষুধ খাচ্ছি। এই ওষুধের প্রভাবেও হলুদস্রাব দেখা দিতে পারে। এখন আমি কি এই অবস্থাকে পবিত্রতা হিসেবে ধরে নামাজ কন্টিনিউ করবো নাকি আমাকে ১০দিন পর থেকে নামাজ পড়া শুরু করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বোচ্চ সময়সীমা ১০দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে। 
উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা।
(কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)

তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)
,

أن النساء کن یبعثن بالکرسف إلی عائشۃ رضی اللہ تعالیٰ عنھا فکانت تقول : لا حتی ترین القصۃ البیضاء‘‘ ( المؤطأ للإمام مالک : ۱/۵۹۱ ،  : مصنف ابن عبد الرزاق، حدیث نمبر : ۱۱۵۹ )
সারমর্মঃ আয়েশা সিদ্দিকা রাঃ সেই সমস্ত মহিলাদের বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা দেখিতে না পাও। 
,
আরো জানুনঃ

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَقِيلٍ، عَنْ بُهَيَّةَ قَالَتْ: سَمِعْتُ امْرَأَةً تَسْأَلُ عَائِشَةَ عَنِ امْرَأَةٍ فَسَدَ حَيْضُهَا وَأُهْرِيقَتْ دَمًا، فَأَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ آمُرَهَافَلْتَنْظُرْ قَدْرَ مَا كَانَتْ تَحِيضُ فِي كُلِّ شَهْرٍ وَحَيْضُهَا مُسْتَقِيمٌ، فَلْتَعْتَدَّ بِقَدْرِ ذَلِكَ مِنَ الْأَيَّامِ، ثُمَّ لِتَدَعِ الصَّلَاةَ فِيهِنَّ أَوْ بِقَدْرِهِنَّ، ثُمَّ لِتَغْتَسِلْ، ثُمَّ لِتَسْتَثْفِرْ بِثَوْبٍ، ثُمَّ لِتُصَلِّ -

বুহায়্যাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শুনলাম, জনৈক মহিলা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে এমন মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে যার হায়িযের গোলমাল হয়েছে, রক্তস্রাব অনবরত জারী রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে (‘আয়িশাহ্’কে) নির্দেশ দিলেন আমি যেন তাকে বলি, ইতিপূর্বে প্রতিমাসে যে ক’দিন তার হায়িয হত তা গণনা করে রাখবে, আর ঐ দিনগুলো পর্যন্ত অপেক্ষা করবে এবং ঐ দিনগুলোতে সলাত ছেড়ে দিবে। অতঃপর গোসল করে (লজ্জাস্থানে) পট্টি বেঁধে সলাত আদায় করবে।
( আবু দাউদ ২৮৪)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم، أَنَّ امْرَأَةً كَانَتْ تُهَرَاقُ الدِّمَاءَ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم، فَاسْتَفْتَتْ لَهَا أُمُّ سَلَمَةَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ:لِتَنْظُرْ عِدَّةَ اللَّيَالِي وَالْأَيَّامِ الَّتِي كَانَتْ تَحِيضُهُنَّ مِنَ الشَّهْرِ قَبْلَ أَنْ يُصِيبَهَا الَّذِي أَصَابَهَا، فَلْتَتْرُكِ الصَّلَاةَ قَدْرَ ذَلِكَ مِنَ الشَّهْرِ، فَإِذَا خَلَّفَتْ ذَلِكَ فَلْتَغْتَسِلْ، ثُمَّ لِتَسْتَثْفِرْ بِثَوْبٍ، ثُمَّ لِتُصَلِّ فِيهِ

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে এক মহিলার (হায়িয-নিফাসের নির্দ্দিষ্ট সময় অতিক্রমের পরও) রক্তস্রাব হতো। উম্মু সালামাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ঐ মহিলার জন্য কি বিধান তা জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সে যেন ইস্তিহাযায় আক্রান্ত হবার আগে মাসের যে ক’দিন তার হায়িয হত তা খেয়াল করে গুনে রাখে এবং প্রতিমাসে সেই ক’দিন সে সলাত ছেড়ে দেয়। ঐ ক’দিন অতিবাহিত হয়ে গেলে সে যেন গোসল করে নেয়, অতঃপর (লজ্জাস্থানে) পট্টি বেঁধে সলাত আদায় করে।
(নাসায়ী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ হায়িয শেষে গোসল করা, হাঃ ২০৮), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ ঋতুবতী নারীর হায়িযের সময়সীমা পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হওয়া প্রসঙ্গে, হাঃ ৬২৩), আবু দাউদ ২৭৪. আহমাদ (৬/২৯৩, ৩২০, ৩২২), মালিক (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
গত ২৬ তারিখ আনুমানিক ৩টা থেকে হায়েজ শুরু হলে আজ ০১ তারিখ,অর্থাৎ সপ্তম দিন।
এক্ষেত্রে ৩০ তারিখে আপনার হলুদ বর্নের স্রাব বের হয়েছে,এটা যেহেতু ১০ দিনের মধ্যেই হয়েছে,তাই সেটি হায়েজ।
এই সময়ে নামাজ পড়া যাবেনা।

দশদিনের আগেই এই স্রাব বন্ধ হলে পুরোটাই হায়েজ বলে গন্য হবে।
১০ দিনের আগে সাদা স্রাব আসলে সেক্ষেত্রে হায়েজ বন্ধ হয়েছে বলে ধরা হবে।
দশদিন পরেও যদি সাদা ব্যাতিত এমন কিছু আসে,তাহলে পূর্বের মাসের অভ্যাস এর দিনের পর দিন থেকে ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা ধরা হবে। 
তখন নামাজ পড়তে হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...