আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
130 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম,
**১. আমি কাউকে দিয়ে কোনো কাজ করাতে চাইলাম। এজন্য আমি তাকে বলে বললাম যে, সে কবে কাজটি করে দিতে পারবে। সে বলল, আপনি আমাকে অমুক সময়ে কল দিয়েন আমার লোক গিয়ে কাজটি করে দিয়ে আসবে। পরে আমার মনে হল যে, কাজটি আমি নিজেই করতে পারবো। এজন্য পরে আমি তাকে কল দেয়নি। তার সাথে আমার শুধু কথা হয়েছিল যে, আমার একটি সমস্যা হয়েছে, তো আপনি কাজটি করে দিয়েন। আমি পরে আর প্রয়োজন মনে করি নাই এজন্য কল দেয় নাই। এ কারণে তাকে দিয়ে কাজও করানো হয়নি। পরে এই বিষয়ে, সেও আমার সাথে যোগাযোগ করেনি এবং আমিও তার সাথে যোগাযোগ করি নাই। তাকে দিয়েই যে আমি কাজটি করাবো এমন কোনো পাকা কথাও হয়েছিল না।

এক্ষেত্রে যাকে দিয়ে কাজ করাতে চেয়েছিলাম তার কোনো হক নষ্ট করা হয়েছে কি না?

**২. মনে করুন, আমি কোনো কোম্পানি অথবা প্রতিষ্ঠান থেকে একটি সার্ভিস নিলাম। সেই সার্ভিসের জন্য আমাকে মাসিকভাবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পরিশোধ করা লাগে। কখনো সেই সার্ভিসে কোনো সমস্যা হলে যারা সার্ভিসটি যারা দিয়েছে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে পরবর্তীতে ঠিক করে দেয়। আবার আমি চাইলে অন্যকে দিয়েও করিয়ে নিই (অথবা আমি নিজে ঠিক করতে পারলে নিজেও ঠিক করি)। অন্যদের থেকে অথবা নিজে সমস্যা ঠিক করা যাবে কি যাবে না, এমন কোনো কিছু আমাকে সার্ভিস প্রদানকারীরা বলেনি বা জানায়নি। তাহলে, আমি যদি সমস্যা গুলো অন্যদের দিয়ে অথবা নিজে ঠিক করে নিই, এতে কি যাদের থেকে সার্ভিসটি নেয়া হওয়া হয়েছে তাদের কোনো হক নষ্ট করা হবে?
উদাহরণ স্বরূপ সার্ভিস গুলো হতে পারেঃ বিদ্যুতের সংযোগ, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ, মোবাইল সিম অপারেটরদের সার্ভিস, গ্যাস সংযোগ, সাপ্লাই পানি সংযোগ ইত্যাদি।

1 Answer

0 votes
by (59,190 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/31561/?show=31561#q31561 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

ওয়াদাকে পূর্ণ করার বিধান কি? ওয়াজিব না মুস্তাহাব? এবং ওয়াদাকে ভঙ্গ করা  হারাম না মাকরুহ?

সে সম্পর্কে ইমাম নববী রাহ বলেন,

" ﺃﺟﻤﻊَ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀُ ﻋﻠﻰ ﺃﻥ ﻣَﻦ ﻭﻋﺪ ﺇﻧﺴﺎﻧﺎً ﺷﻴﺌﺎً ﻟﻴﺲ ﺑﻤﻨﻬﻲّ ﻋﻨﻪ ﻓﻴﻨﺒﻐﻲ ﺃﻥ ﻳﻔﻲ ﺑﻮﻋﺪﻩ ، ﻭﻫﻞ ﺫﻟﻚ ﻭﺍﺟﺐٌ ، ﺃﻭ ﻣﺴﺘﺤﺐّ ؟ ﻓﻴﻪ ﺧﻼﻑ ﺑﻴﻨﻬﻢ ، ﺫﻫﺐ ﺍﻟﺸﺎﻓﻌﻲُّ ﻭﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻭﺍﻟﺠﻤﻬﻮﺭُ ﺇﻟﻰ ﺃﻧﻪ ﻣﺴﺘﺤﺐّ ، ﻓﻠﻮ ﺗﺮﻛﻪ ﻓﺎﺗﻪ ﺍﻟﻔﻀﻞ ، ﻭﺍﺭﺗﻜﺐ ﺍﻟﻤﻜﺮﻭﻩ ﻛﺮﺍﻫﺔ ﺗﻨﺰﻳﻪ ﺷﺪﻳﺪﺓ، ﻭﻟﻜﻦ ﻻ ﻳﺄﺛﻢ .

ﻭﺫﻫﺐَ ﺟﻤﺎﻋﺔٌ ﺇﻟﻰ ﺃﻧﻪ ﻭﺍﺟﺐ ، ﻗﺎﻝ ﺍﻹِﻣﺎﻡُ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﻌﺮﺑﻲ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻲ : ﺃﺟﻞُّ ﻣَﻦ ﺫﻫﺐَ ﺇﻟﻰ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻤﺬﻫﺐ ﻋﻤﺮُ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰ ، ﻗﺎﻝ : ﻭﺫﻫﺒﺖِ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻴﺔ ﻣﺬﻫﺒﺎً ﺛﺎﻟﺜﺎً : ﺃﻧﻪ ﺇﻥ ﺍﺭﺗﺒﻂ ﺍﻟﻮﻋﺪُ ﺑﺴﺒﺐ ﻛﻘﻮﻟﻪ : ﺗﺰﻭّﺝ ﻭﻟﻚ ﻛﺬﺍ، ﺃﻭ ﺍﺣﻠﻒ ﺃﻧﻚ ﻻ ﺗﺸﺘﻤﻨﻲ ﻭﻟﻚ ﻛﺬﺍ، ﺃﻭ ﻧﺤﻮ ﺫﻟﻚ ، ﻭﺟﺐ ﺍﻟﻮﻓﺎﺀ ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻭﻋﺪﺍً ﻣُﻄﻠﻘﺎً، ﻟﻢ ﻳﺠﺐ .

ﻭﺍﺳﺘﺪﻝّ ﻣَﻦ ﻟﻢ ﻳﻮﺟﺒﻪ ﺑﺄﻧﻪ ﻓﻲ ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﻬﺒﺔ ، ﻭﺍﻟﻬﺒﺔ ﻻ ﺗﻠﺰﻡ ﺇﻻ ﺑﺎﻟﻘﺒﺾ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﺠﻤﻬﻮﺭ، ﻭﻋﻨﺪ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻴﺔ : ﺗﻠﺰﻡ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﻘﺒﺾ "

উলামায়ে কেরাম এ কথার উপর একমত যে,যদি কোনো মানুষ কারো সাথে এমন কোনো বিষয়ের ওয়াদা করে যা নিষিদ্ধ নয়, তাহলে তার জন্য উচিৎ হল সেই ওয়াদাকে পূর্ণ করা। ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না মুস্তাহাব? এ সম্পর্কে অবশ্যই মতপার্থক্য রয়েছে। ইমাম শা'ফেয়ী ও ইমাম আবু হানিফা এবং জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা মুস্তাহাব। যদি সে ওয়াদাকে ভঙ্গ করে ফেলে তাহলে যেন সে উত্তমতাকে পরিত্যাগ করল এবং শক্ত মাকরুহে তানযিহি সম্ভলিত কাজে লিপ্ত হল। কিন্তু সে আবার গোনাহগার হবে না। অন্যদিকে এক দল উলামায়ে কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব। ইমাম আবু বকর ইবনুল আরাবি মালিকি রাহ বলেন, যারা উক্ত মাযহাবের প্রবক্তা তাদের মধ্যে এটা উমর ইবনে আব্দুল আযিয রাহ শীর্ষে রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, মালিকি মাযহাবের উলামাগণ তৃতীয় আরেকটি মাযহাবকে বর্ণনা করেছেন। সেটা হল যে, যদি কেউ কাউকে বলে, তুমি বিয়ে করবে বলে ওয়াদা করো তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে। অথবা তুমি ওয়াদা করো আমাকে গালি দেবে না তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে ইত্যাদি বাক্য। তাহলে এমতাবস্থায় ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব হবে। আর যদি স্বাভাবিক ওয়াদা হয়ে থাকে তাহলে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না। যারা ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব বলেন না তারা বলেন, যে ওয়াদা হলো হেবার সমার্থক। আর জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে হেবা কবজা ব্যতীত পরিপূর্ণ হয় না। তবে ইমাম মালিক রাহ এর মতে ওয়াদা কবজার পূর্বেও ওয়াজিব হয়ে যায়। (আল-আযকার-৩১৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. উক্ত কথাগুলো কাউকে বলা মানে ওয়াদা করা। আর কোন বিষয়ে ওয়াদা করে তা পালন করা একজন মুমিনের কর্তব্য ও দায়িত্ব। সুতরাং শরীয়ত সম্মত কারণ ছাড়া এমন ওয়াদাও করে তা অযথা ভঙ্গ করা অত্যান্ত গর্হিত কাজ। তবে নিজের জন্য কল্যাণকর মনে হলে বা কোন শরীয়ত সম্মত কারণ থাকলে উক্ত ওয়াদা ভঙ্গ করলে এতে কোন গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ।

উল্লেখ্য যে, আর যদি কথা বলার সময় আপনি ওয়াদা হিসেবে না বলে থাকেন। বরং এমনি কথার কথা বলে থাকেন এবং যাকে বলা হচ্ছে সেও বিষয়টা জানে বা বুঝে যে, এগুলো এমনি বলেছে। তাহলে এটা ওয়াদাও হবে না।

২. সেই কোম্পানি অথবা প্রতিষ্ঠান থেকে সার্ভিস নেওয়ার শুরুতে তারা যদি এই ধরণের কোন নিষেধ না করে থাকেন যে, “আপনি তাদেরকে ব্যতিরেখে অন্য কারো থেকে বা নিজে সার্ভিস নিতে পারবেন না” তাহলে নিজে বা অন্য কারো দ্বারা উক্ত কাজ করলে কোন গুনাহ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...