জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
শুধু বাসায় প্রবেশের সময় দোয়া পড়বেন,প্রত্যেক ঘরে প্রবেশের সময় শুধু সালাম দিবেন।
,
(০২)
"সহবাসের সময়ে কথা বললে কি বোবা হবে সন্তান হবে" মর্মে কুরআন হাদীসে কিছুই নেই।
বানোয়াট, ও ভিত্তিহীন কথা।
,
(০৩)
কুরআনে কিছু সূরা রয়েছে যেগুলোর অতিরিক্ত কিছু ফযিলত রয়েছে যা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
কিছু এখানে উল্লেখ করছিঃ
সুরা ইয়াসিন সেই সুরাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
তিরমিযি শরীফে এসেছে
" إن لكل شيء قلبا وقلب القرآن يس ومن قرأ يس كتب الله له بقراءتها قراءة القرآن عشر مرات". ( سنن الترمذي، فضل يس، رقم:2887)
‘‘প্রত্যেক বস্তুর একটি হৃদয় রয়েছে, আর কুরআনে হৃদয় হচ্ছে ‘ইয়াসিন’। যে ব্যক্তি ‘ইয়াসিন’ পড়বে আল্লাহ তার আমলনামায় দশবার পূর্ণ কুরআন পড়ার নেকী দান করবেন।
সূরা ইয়াসিন কোরআনের রূহ। সুতরাং দিনের শুরুটা যদি সূরা ইয়াসিন দিয়ে করা হয় তাহলে তা অবশ্যই বরকতপূর্ণ হবে। এজন্য বিশিষ্ট তাবিঈ ইয়াহইয়া ইবন কাসীর রহ বলেন,
من قرأ ” يس ” إذا أصبح لم يزل في فرح حتى يمسي ، ومن قرأها إذا أمسى لم يزل في فرح حتى يصبح . قال : وأنبأنا مَن جرَّبَ ذلك
যে ব্যক্তি সকালে সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুখে-স্বস্তিতে থাকবে। যে সন্ধ্যায় পাঠ করবে সে সকাল পর্যন্ত শান্তিতে থাকবে। তিনি আরো বলেন, আমাকে এ বিষয়টি এমন এক ব্যক্তি বলেছেন, যিনি এর বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন। (বর্ণনাকারী ইবন যুরাইস, ফাযায়েলুল কুরআন, বর্ণনা নং ২১৮ পৃষ্ঠা ১০১)
আরো জানুনঃ
,
مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْوَاقِعَةِ كُلَّ لَيْلَةٍ ، لَمْ تُصِبْهُ فَاقَةٌ أَبَدًا
রাসুল সাঃ বলেছেন যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করবে, সে কখনও উপবাস করবে না৷ (তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন ৮/১০৬ সাফয়াতুত তাফাসীর ৩/৩০৪ ইবন কাসীর ৪/২৮১ তারিখে দামিশক ৩৬/৪৪৪ বাইহাকি ৪/১১৯
সূরা ওয়াক্বেয়ার ফযিলত সম্পন্ন হাদীস সম্পর্কে উলামায়ে কিরামের মতবিরোধ রয়েছে।অধিকাংশই যঈফ বলেছেন।কেউ কেউ সহীহ বলেছেন।
আরো জানুনঃ
,
হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن أبي هريرة رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال : ( إِنَّ سُورَةً مِنْ الْقُرْآنِ ثَلَاثُونَ آيَةً ، شَفَعَتْ لِرَجُلٍ حَتَّى غُفِرَ لَهُ ، وَهِيَ سُورَةُ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,কুরআনের একটি সূরা যার ত্রিশটি আয়াত রয়েছে,ঐ সূরাটি তার তেলাওয়াতকারীর জন্য মাগফিরাতের দু'আ করবে।এই সূরাটি হল,সূরা মূলক।(সুনানু তিরমিযি-২৮৯১,মসনদে আহমদ-৭৯১৫)
হযরত জাবের রাযি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
عن جابر رضي الله عنه : " أن النبي صلى الله عليه وسلم كان لا ينام حتى يقرأ آلم تنزيل ، وتبارك الذي بيده الملك "
রাসূলুল্লাহ সাঃ সূরায়ে সেজদা এবং মূলক পড়া ব্যতীত শয়ন করতেন না।(সুনানু তিরমিযি-২৮৯২,মসনদে আহমদ-১৪২৪৯)
,
সূরা ফাতহ কোরআনের একটি ফজিলতময় সূরা, তাই এটি তেলাওয়াত করতে পারেন। এই সুরার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ ওমর রাযি.-কে বলেছেন,
لَقَدْ أُنْزِلَتْ عَلَيَّ اللَّيْلَةَ سُورَةٌ لَهِيَ أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ ، ثُمَّ قَرَأَ : إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُبِينًا
আজ রাতে আমার উপর এমন একটি সূরা নাযিল হয়েছে, যা আমার কাছে সূর্যালোকিত সকল স্থান হতে উত্তম। এরপর রাসূলুল্লাহ ﷺ পাঠ করলেন, إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُبِينًا ‘নিশ্চয় আমি তোমাকে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেছি।’ (বুখারি ৪১৭৭)
সূরা নাবা’র ফজিলত সম্পর্কে একটি দুর্বল হাদিসে এসেছে,
مَنْ قَرَأَ سُورَةَ عَمَّ يَتَسَاءَلُونَ سَقَاهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ بَرْدَ الشَّرَابِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
যে ব্যক্তি সূরা নাবা পাঠ করবে আল্লাহ তাকে কেয়ামতের দিন ঠাণ্ডা পানীয় দ্বারা তৃপ্ত করবেন। (তাফসিরে কাশশাফ ৬/৩০৩)
,
ইশার পরে বা রাতে সূরা মুলক পাঠ সম্পর্কে হাদিস শরিফে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
من قَرَأَ ( تبَارك الَّذِي بِيَدِهِ الْملك ) كل لَيْلَة مَنعه الله بهَا من عَذَاب الْقَبْر ، وَكُنَّا فِي عهد رَسُول الله ﷺ نسميها الْمَانِعَة ، وَإِنَّهَا فِي كتاب الله سُورَة من قَرَأَ بهَا فِي كل لَيْلَة فقد أَكثر وأطاب
যে ব্যক্তি প্রতি রাতে তাবারাকাল্লাযী বি ইয়াদিহিল মুলকু.. পাঠ করবে, আল্লাহ্ তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবেন। (আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. বলেন,) আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর যুগে সূরাটিকে মানেআ’ বা বাধাদানকারী সূরা বলে আখ্যা দিতাম। এটি আল্লাহ তাআলার কিতাবের মাঝে এমন একটি সূরা, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে পাঠ করবে সে অধিক ও উৎকৃষ্ট আমল করবে। (নাসাঈ ১০৫৪৭)
জাবির রাযি. বলেন,
أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ كَانَ لَا يَنَامُ حَتَّى يَقْرَأَ الم تَنْزِيلُ ، وَتَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ المُلْكُ
রাসূলুল্লাহ ﷺ সূরা সাজদাহ ও সূরা মুলক তেলাওয়াত করা ব্যতিরেকে ঘুমাতেন না। (তিরমিযি ২৮৯২)
সূরা ইখলাসের ফজিলতসমূহ নিম্নে পেশ করা হল–
১। কাতাদা ইবনু নুমান রাযি.বলেছেন, রাসূল ﷺ এর সময় এক ব্যক্তি শেষ রাতে সালাতে শুধুমাত্র “কুল হুআল্লাহু আহাদ” ছাড়া আর কোনো সূরাই তিলাওয়াত করেন নি। পরদিন সকালে কোন এক ব্যক্তি রাসূল ﷺ-এর কাছে আসলেন। তখন রাসূল ﷺ বললেন, وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّهَا لَتَعْدِلُ ثُلُثَ الْقُرْآنِ সে সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন। এ সূরা হচ্ছে সমগ্র কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (বুখারি ৪৬৪৫)
২। আবূ সাঈদ খুদরী রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল ﷺ তাঁর সাহাবীদেরকে বলেছেন, أَيَعْجِزُ أَحَدُكُمْ أَنْ يَقْرَأَ ثُلُثَ الْقُرْآنِ فِي لَيْلَةٍ তোমাদের কেউ কি এক রাতে কোরআনের এ-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করতে অসাধ্য মনে কর? এ প্রশ্ন তাদের জন্য কঠিন ছিল। এরপর তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে কার সাধ্য আছে যে, এমনটি পারবে? তখন তিনি বললেন, اللَّهُ الْوَاحِدُ الصَّمَدُ ثُلُثُ الْقُرْآنِ “কুল হুআল্লাহু আহাদ” অর্থাৎ সূরা ইখ্লাস কোরআন শরীফের এক-তৃতীয়াংশ। (বুখারি ৪৬৪৬)
৩। আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ এক সাহাবিকে একটি মুজাহিদ দলের আমীর করে জিহাদে পাঠালেন। তিনি যখন নামাজে ইমামতি করতেন, তখনই (প্রত্যেক রাকআতে সূরা পড়ার পর) ‘কুল হুআল্লাহু আহাদ’ (সূরা ইখলাস) দিয়ে (কিরাআত) শেষ করতেন। মুজাহিদগণ সেই অভিযান থেকে প্রত্যাবর্তন করে নবি ﷺ এর খিদমতে বিষয়টি আলোচনা করলেন। তিনি বললেন, سَلُوهُ لأَيِّ شَيْءٍ يَصْنَعُ ذٰلِكَ؟ ‘তাকে জিজ্ঞাসা কর, কেন সে এ কাজটি করেছে?’ সুতরাং তারা তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বললেন, لأَنَّهَا صِفَةُ الرَّحْمٰنِ فَأَنَا أُحِبُّ أنْ أقْرَأ بِهَا ‘এই সূরাটিতে পরম করুণাময় (আল্লাহ)র গুণাবলী রয়েছে। এই জন্য সূরাটি তেলাওয়াত করতে আমি ভালবাসি।’ তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, أخْبِرُوهُ أنَّ اللهَ تَعَالَى يُحِبُّهُ ‘তাকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ তাআলাও তাকে ভালবাসেন।’ (বুখারি ৭৩৭৫, মুসলিম ৮১৩, নাসায়ি ৯৯৩)
৪। আবু হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ এক ব্যক্তিকে সূরা ইখলাস পড়তে দেখে বলেন, وَجَبَتْ ‘অবধারিত হয়ে গিয়েছে’। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ‘কী অবধারিত হয়ে গিয়েছে?’ রাসূলুল্লাহ ﷺ উত্তর দিলেন, وَجَبَتْ له الجنة‘তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে গিয়েছে’। (মুসনাদ আহমদ ৭৬৬৯)
৫। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
من قرأ { قل هو الله أحد } عشر مرات بنى الله له بيتا في الجنة
‘যে ব্যক্তি সুরা ইখলাস দশ বার পড়বে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ তৈরী করবেন।’ (সহিহ জামে সগীর ৬৪৭২)
৬। আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত,
أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ كُلَّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ ثُمَّ نَفَثَ فِيهِمَا فَقَرَأَ فِيهِمَا قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ وَ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ثُمَّ يَمْسَحُ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلاثَ مَرَّاتٍ
নবী ﷺ প্রত্যেক রাতে যখন ঘুমাবার জন্য শয্যা গ্রহণ করতেন তখন দু’ হাতের চেটো একত্রে জমা করতেন এবং তাতে তিন ক্বুল পড়ে ফুঁ দিতেন। তারপর তার দ্বারা দেহের ওপর যতদূর সম্ভব বোলাতেন; মাথা, চেহারা ও দেহের সামনের অংশ থেকে শুরু করতেন। এরূপ তিনি তিনবার করতেন। (বুখারি ৪৪৩৯)
৭। উবাই ইবনু কাব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يُوتِرُ بِـ {سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى} وَ {قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ} وَ {قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ}
রাসূলুল্লাহ ﷺ বিতরের নামাযে সূরাহ আলা, সূরাহ কাফিরূন ও সূরাহ ইখলাস পড়তেন। (ইবন মাজাহ ১১৭১)
(০৪)
মুমিনের কিছু বৈশিষ্ঠঃ
এই বিষয়ে সুরা মুমিনুন এর শুরুর আয়াত গুলো দ্রষ্টব্য,,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالطّعّانِ، وَلَا اللّعّانِ، وَلَا الْفَاحِشِ، وَلَا الْبَذِيءِ.
মুমিন কটুভাষী হতে পারে না, লা‘নতকারী হতে পারে না এবং অশ্লীল ও অশালীন কথা বলতে পারে না। -আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস ৩১২; জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৭৭
এসব কর্ম ঈমানের ও মুুমিনের শানের পরিপন্থী। মুমিনের কর্তব্য, এগুলো থেকে নিজেকে পবিত্র রাখা। (মাআরিফুল হাদীস, খ. ১, হিস্যা. ১, পৃ. ১০২)
আবু বারযা আলআসলামী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
يَا مَعْشَرَ مَنْ آمَنَ بِلِسَانِهِ وَلَمْ يَدْخُلِ الْإِيمَانُ قَلْبَهُ! لَا تَغْتَابُوا الْمُسْلِمِينَ وَلَا تَتّبِعُوا عَوْرَاتِهِمْ؛ فَإِنّهُ مَنْ يَتّبِعْ عَوْرَاتِهِمْ يَتّبِعِ اللهُ عَوْرَتَهُ، وَمَنْ يَتّبِعِ اللهُ عَوْرَتَهُ يَفْضَحْهُ فِي بَيْتِهِ.
হে ঐ সকল লোক, যারা মুখে ঈমান এনেছে, অথচ ঈমান এখনো তাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি, তোমরা মুসলমানদের গীবত করো না, তাদের অপ্রকাশিত দোষ-ত্রুটির অনুসন্ধান করো না, কেননা যে ব্যক্তি তাদের দোষ অনুসন্ধান করবে, আল্লাহ তার দোষ অনুসন্ধান করবেন। আর আল্লাহ যার দোষ অনুসন্ধান করবেন তাকে তো তিনি তার ঘরে লাঞ্ছিত করবেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৯৭৭৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৮৮০
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
إِنّ الْمُؤْمِنَ إِذَا أَذْنَبَ كَانَتْ نُكْتَةٌ سَوْدَاءُ فِي قَلْبِهِ، فَإِنْ تَابَ وَنَزَعَ وَاسْتَغْفَرَ، صُقِلَ قَلْبُهُ، وَإِنْ زَادَ زَادَتْ، حَتّى يَعْلُوَ قَلْبَهُ. ذَاكَ الرّانُ الّذِي ذَكَرَ اللهُ عَزّ وَجَلّ فِي الْقُرْآنِ: كَلَّا بَلْ رَانَ عَلَى قُلُوبِهِمْ مَا كَانُوا يَكْسِبُونَ .
মুমিনের গুনাহ হয়ে গেলে তাতে তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে যায়। তখন সে যদি তাওবা করে, গুনাহ ছেড়ে দেয় এবং ইস্তিগফার করে তাহলে তার অন্তর পরিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু যদি আরো গুনাহ করে, তাহলে কালো দাগ বাড়তে থাকে, একসময় তার অন্তর কালো দাগে ছেয়ে যায়। এটাই সেই জং, যা আল্লাহ তাআলা কুরআনে উল্লেখ করেছেন-
كَلَّا بَلْ رَانَ عَلَى قُلُوبِهِمْ مَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
‘না, কখনো নয়; বরং তাদের কৃতকর্ম তাদের অন্তরে জং ধরিয়ে দিয়েছে। [সূরা মুতাফফিফীন (৮৩) : ১৪] -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৭৯৫২; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৪২৪৪
এই বিষয়ে মাসিল আল কাওসারে বিস্তারিত আছে।
জানুনঃ
,
(০৫)
ফরজ রোজা কাযা হলে তা পরবর্তীতে আদায় করে নেয়াও ফরজ। কারণ পবিত্র কুরআনে কাযা রোযা রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইরশাদ হচ্ছে-
فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۗ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ [٢:١٨٥]
কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর। {সূরা বাকারা-১৮৫}
আর আপনি যেসব রোজার কথা বলেছেন তা সুন্নত। সুন্নতের তুলনায় ফরজের গুরুত্ব কতটুকু তা আশা করি বলার প্রয়োজন নেই।
তাই নফল রোযা রাখার আগে ফরজ রোযার কাযাগুলো আগে আদায় করাই সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ফরজ রোযার কাযা আদায় না করে নফল রোযা রাখলেও তা আদায় হবে। বাকি ফরজের কাযার জন্য আখেরাতে পাকরাও হতে হবে। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।
★এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নঃ এসব নফল রোযা রাখার বিশেষ দিনগুলোতে আগের কাযা রোযা রাখলে কাযা আদায়ের সাথে সাথে নফলের সওয়াব হবে কি না?
রোযা রাখবে ফরজের কাযার। তাই শুধু কাযা রোযাই আদায় হবে। নফল রোযার সওয়াব হবে না। {ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ-৬/৩০৬}
বাকি যেহেতু দিনগুলো বিশেষ রোযার সাথে খাস ছিল। তাই এদিন রোযা রাখার দ্বারা উক্ত বিশেষ নফলেরও সওয়াবের আশা করা যায়। বাকি এ বিষয়ে কুরআন ও হাদীসের কোন ঘোষণা নেই। এটি কেবলি রহমানুর রহীম আল্লাহর প্রতি আমাদের আশা ছাড়া আর কিছু নয়।
তবে একই সাথে যদি দুই নিয়তে [রোযার কাযা এবং নফল রোযা] এক রোযা রাখা যাবে না। বরং একটিকে নির্দিষ্ট করে রাখতে হবে।
وَمَتَى نَوَى شَيْئَيْنِ مُخْتَلِفَيْنِ مُتَسَاوِيَيْنِ فِي الْوَكَادَةِ وَالْفَرِيضَةِ، وَلَا رُجْحَانَ لِأَحَدِهِمَا عَلَى الْآخَرِ بَطَلَا، وَمَتَى تَرَجَّحَ أَحَدُهُمَا عَلَى الْآخَرِ ثَبَتَ الرَّاجِحُ كَذَا فِي مُحِيطِ السَّرَخْسِيِّ.الخ وَإِذَا نَوَى قَضَاءَ بَعْضِ رَمَضَانَ، وَالتَّطَوُّعُ يَقَعُ عَنْ رَمَضَانَ فِي قَوْلِ أَبِي يُوسُفَ – رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى -، وَهُوَ رِوَايَةٌ عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ – رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى – كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ.
যার সারমর্ম হলো যদি একই সাথে উভয় রোযার নিয়ত করে,তাহলে উভয়টাই বাতিল বলে গন্য হবে।
তাই যেকোনো একটাকে নির্দিষ্ট করতে হবে।
,
(০৬)
কাশফ বলা হয় কিছু গোপন ভেদ সম্পর্কে জানা,,,
কাশফ ও এলহাম শরীআতের মুতাবিক হলে, তা গ্রহণযোগ্য হবে। অন্যথায় তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
আরো জানুনঃ
.
(০৭)
ওহাবী বলা হয় محمد بن عبد الوهاب: মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাব) (জন্ম ১৭০৩ খ্রিস্টাব্দে, মৃত্যু ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে)
এর অনুসারীদের।
তিনি একজন ইসলামিক সালাফি পন্ডিত এবং ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা।তাঁর জন্ম নজদ প্রদেশে (বর্তমান রিয়াদ)।মূলত তাঁর নামানুসারে এই আন্দোলনের নাম হয়েছে।
,
শিয়া বলা হয় যারা আলী রাঃ কে সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করে,তাদের মধ্যে অনেক দল উপদল রয়েছে।
তাদের কেহ কেহ বলেন যে আলী রাঃই একমাত্র খেলাফতের দাবীদার।
কেহ তো বলেন যে নবুয়ত পাওয়ার হকদার আলী রাঃই ছিলেন রাসুল সাঃ নন।
,
সাধারণত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহঃ এর অনুসারীদেরকে সালাফি বলা হয়।
,
আহলে হাদীস বলা হয় যারা চার মাযহাবের কোনো মাযহাব মানেনা,ইজমা কিয়াস মানেনা।
তাদের দাবী মতে তারা সরাসরি কুরআন হাদীস মেনে আমল করার চেষ্টা করেন।