আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
217 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
closed by
ক) সেহরির আযানের সময় যদি মুখে ভাত থাকে তখন সেটা কি করবো? আর এরপর একটু পানি খাওয়া যাবে কি? নাহলে তো সমস্যা হয়

খ) তিনদিন মুসলিম ভাইয়ের সাথে কথা না বললে আল্লাহ কেয়ামতে কথা বলবেন না।এইটা কি সত্য?

গ)এই পাপের শাস্তি নির্দিষ্ট ভাবে কি?


ঘ)কেউ যদি আমাকে কথা দিয়ে বা ব্যঙ্গ করে ছোট করে বা তার কাজকর্ম আমার ভালো লাগে না(যেমন সে অনেক অগোছালো আর অন্যদের কাজের মাঝে (যেমন পরিক্ষার সময়ে পড়তে দেয় না বা এইরকম) ডিস্টার্ব করে) তাহলেও কি তার সাথে কথা বলতে হবে বা সালাম দিতে হবে?কথা থামাতে পারবো না?
closed

1 Answer

+1 vote
by (675,600 points)
selected by
 
Best answer
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

(ক)
ফজরের আযানের সাথে সেহরী খাওয়া বন্ধ করা ও রোযা রাখার কোন সম্পর্কই নেই।
রোযার সম্পর্ক হল, সুবহে সাদিকের আগে সেহরী খাওয়া শেষ করল কি না।

যদিও ফজরের আজানেরও সম্পর্ক সেহরীর সময় শেষ হবার সাথে। অর্থাৎ সুবহে সাদিক হলেই কেবল ফজরের আজান দেবার ওয়াক্ত হয়। এরপর ফজরের আজান দেয়া যায়।
(তব অনেক মসজিদে রমজান মাস ব্যাতিত অন্যান্য মাসে সুবহে সাদিকের অনেক পড়ে ফজরের আযান দেওয়া হয়,তাই সেক্ষেত্রে সেহরীর সাথে আযানের কোনো সম্পর্কই নেই।)
 
আর সুবহে সাদিকের আগেই সেহরীর খানা শেষ করতে হয়। সুবহে সাদিকের পরও সেহরী খেলে রোযা হবে না। আগেই শেষ করতে হবে।

সুবহে সাদিক বলতে আমরা সেহরীর শেষ সময় বলতে যা বুঝে থাকি, সেটিকেই বুঝানো হয়েছে। তাই আপনি কখন খানা শেষ করলেন, সেটির উপর নির্ভরশীল আপনার রোযা হল? নাকি ভেঙ্গে গেল?

যদি সেহরীর সময় শেষ হবার আগে সেহরী শেষ করে থাকেন, তাহলে আপনার রোযা হয়েছে। আর যদি সময় শেষ হবার পরেও খেয়ে থাকেন, তাহলে রোযা হয়নি। পরে কাযা করতে হবে।

সেহরীর সম্পর্ক সুবহে সাদিকের সাথে। সুবহে সাদিক তথা সেহরীর সময় শেষ হবার আগে খেলে রোযা হয়েছে। পরে খেলে হয়নি।

وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ۖ [٢:١٨٧]
আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। [সূরা বাকারা-১৮৭]
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি সুবহে সাদিকের পরে আযান দেওয়া হয়,তাহলে রোযা কোনো ভাবেই হবেনা।
আর যদি সুবহে সাদিক হওয়া মাত্র আযান দেওয়া হয়,তাহলে আযান আগেই খাবার শেষ করতে হবে।
আযানের মাঝে পানির এক ফোটা পানি বা খাবার গলায় গেলে রোযা হবেনা।
,
সমস্যা হলেও সুবহে  সাদিকের পর পানি খাওয়া জায়েয নেই। 

(খ,গ)
কোনো মুসলমানের সাথে তিন দিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা,সম্পর্ক ছিন্ন করা নাজায়েজ। 
  
হযরত আবু আইয়ুব রাযি থেকে বর্ণিত

 وعَنْ أَبِي أَيُّوبَ : أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ: لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ، يَلْتَقِيَانِ, فَيُعْرِضُ هَذَا، ويُعْرِضُ هَذَا، وخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
সারমর্ম-কোনো মুসলমানের জন্য তিনদিনের বেশী সময় ধরে কথা না বলা জায়েয নয়।

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: لَا تَبَاغَضُوا، وَلَا تَحَاسَدُوا، وَلَا تَدَابَرُوا، وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا، وَلَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পরস্পরকে ঘৃণা করো না, পরস্পর হিংসা করো না, একে অপরের গোয়েন্দাগিরী করো নাম বরং আল্লাহর বান্দারা পরস্পর ভাই ভাই হয়ে যাও। যে কোনো মুসলিমের জন্য তার কোনো ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের বেশী সম্পর্ক বিচ্ছেদ করা জায়িয নয়।
(আবু দাউদ ৪৯১১)

বিস্তারিত জানুনঃ
,
তবে এর কারনে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার দিকে তাকাবেননা,বা কথা বলবেননা মর্মে কোনো হাদীস পাইনি।
,
একাজটি করা নাজায়েজ, এর জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো শাস্তির করা হাদীস শরীফে আসেনি।   

যাদের দিকে আল্লাহ তায়ালা রহমতের নজরে তাকাবেননা,সে সম্পর্কে জানতে জানুনঃ
,
(ঘ)
শরীয়তের বিধান হলো কাহারো সাথে শরয়ী ওযর ব্যাতিত  তিন দিনের বেশি কথাবার্তা বন্ধ রাখা, সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ নেই। 
(কিতাবুল ফাতওয়া ৬/২১৭)

এটা যদি তাদের সামনা সামনি না হওয়ার কারনে হয়,যে সামনা সামনি,দেখা সাক্ষাৎ  যেহেতু আমাদের  হচ্ছেনা,তাই কথা বলার সুযোগও হচ্ছেনা।
তাহলে কোনো সমস্যা নেই। 

তবে দেখা সাক্ষাৎ হওয়ার পরেও বিনা কারনে কাহারো সাথে কথা বার্তা বলা বন্ধ করে দেওয়া,সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ নেই।    
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেই ব্যাক্তির সাথে কথা বন্ধ করা,সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ হবেনা।
হ্যা যদি বেশি সমস্যা হয়,তবে কিছুদিন কথার আদান প্রদান না করা যেতে পারে,তবে সালামের আদান প্রদান অবশ্যই করতে হবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...