বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/53861/ নং
ফাতওয়াতে উল্লেখ আছে যে,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وَعَنْ جَابِرٍ أَنَّه سَمِعَ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ يَقُولُ عَامَ الْفَتْحِ
وَهُوَ بِمَكَّةَ : «إِنَّ اللّٰهَ وَرَسُوْلَه حَرَّمَ بَيْعَ الْخَمْرِ
وَالْمَيْتَةِ وَالْخِنْزِيرِ وَالْأَصْنَامِ». فَقِيلَ : يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ!
أَرَأَيْتَ شُحُومَ الْمَيْتَةِ؟ فَإِنَّه تُطْلٰى بِهَا السُّفُنُ وَيُدْهَنُ
بِهَا الْجُلُودُ وَيَسْتَصْبِحُ بِهَا النَّاسُ؟ فَقَالَ : «لَا هُوَ حَرَامٌ».
ثُمَّ قَالَ عِنْدَ ذٰلِكَ : «قَاتَلَ اللّٰهُ الْيَهُودَ إِنَّ اللّٰهَ لَمَّا
حَرَّمَ شُحُومَهَا أَجْمَلُوهُ ثُمَّ بَاعُوهُ فَأَكَلُوا ثَمَنَه». مُتَّفَقٌ
عَلَيْهِ
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন মক্কা বিজয়ের বৎসর, সেখানে অবস্থানকালে আল্লাহ ও তাঁর রসূল মদ বিক্রি, মৃতজীব বিক্রি, শূকর
বিক্রি, কোনো প্রকার মূর্তি বিক্রি হারাম
করে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! মৃত জীবের চর্বি নৌকায় (বিভিন্ন চামড়াজাত
দ্রব্যে) লাগানো হয় এবং লোকেরা তা দিয়ে বাতি জ্বালিয়ে থাকে, তা বিক্রি করা সম্পর্কে আপনার সিদ্ধান্ত কি? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তা-ও বিক্রি করা যাবে না, এটাও হারাম। অতঃপর এর সাথে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম) এ কথাও বললেন, আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদী জাতিকে
ধ্বংস করুন। নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য যখন (হালাল যাবাহকৃত জীবেরও) চর্বি
হারাম করলেন, তখন তারা (অবাধ্য হয়ে কৌশল অবলম্বন
করে) তা গলিয়ে বিক্রি করতে লাগলো ও এর মূল্য ভোগ করতে থাকলো। (সহীহ : বুখারী ২২৩৬, মুসলিম ১৫৮১, আবূ
দাঊদ ৩৪৮৬, নাসায়ী ৪২৫৬, তিরমিযী ১২৯৭, ইবনু
মাজাহ ২১৬৭, আহমাদ ১৪৪৯৫, ইরওয়া ১২৯০)
যে কোন বিষয়ের ‘হারাম হওয়া’
সাব্যস্ত হলে সে বিষয়ে সহযোগিতা করাও হারাম। যেমন- কোন রেস্টুরেন্টে মদ, মৃতজন্তু, বন্য
গাধার গোশত ইত্যাদি পরিবেশন করার কাজ করা।
সৌদি আরবের ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী
কমিটিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যে সকল হোটেলে শূকরের গোশত, মদ পরিবেশন করা হয় সে হোটেলে চাকুরি করা জায়েয কি না? তারা উত্তরে বলেছেন, এ
সকল হোটেলে কাজ করা হারাম। সেখানে কাজ করে যা উপার্জন করা সেটাও হারাম। কেননা এটা
অবৈধ বা হারাম কাজে সহযোগিতা। হারাম কাজে সহযোগিতা করা আল্লাহ নিষেধ করেছেন। তিনি
বলেছেন,
وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى
الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ
“মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের
সহযোগিতা করো না।” [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত:
২]
তাই আমরা আপনাকে উপদেশ দিচ্ছি-
আপনি এ জাতীয় হোটেলে চাকুরি করা পরিহার করুন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যা হারাম ও
অবৈধ বলে ঘোষণা করেছেন তা করতে কাউকে সাহায্য সহযোগিতা করবেন না। [ফতোয়া বিষয়ক
স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র (১৩/৪৯)]
প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য হল
সর্বদা আল্লাহকে ভয় করা। হালাল উপার্জনের মাধ্যম অন্বেষণ করা, হারাম মাধ্যম বর্জন করা। কারণ হারাম উপার্জন দিয়ে পরিপুষ্ট
দেহ জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন:
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ لَحْمٌ نبَتَ منَ السُّحْتِ وكلُّ
لحمٍ نبَتَ منَ السُّحْتِ كَانَتِ النَّارُ أَوْلَى بِهِ»
যে দেহের গোশত/গোশত হারাম উপার্জনে
গঠিত, তা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।
হারাম ধন-সম্পদে গঠিত ও লালিত পালিত দেহের জন্য জাহান্নামই উপযোগী। (মুসনাদে আহমাদ
১৪৪১, শু‘আবুল ঈমান ৮৯৭২, দারিমী ২৭৭৯)
আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/43877/?show=43877#q43877
আরো জানুন- https://ifatwa.info/25032/
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু হালাল হারাম উভয়
রকমের খাবার রান্না করা বা অন্যন্য সহযোগিতা করতে হয় তাই আপনার স্বামীর ইনকাম
হালাল হারাম মিশ্রিত। সুতরাং এ ধরনের চাকুরী ইসলাম অনুমতি দেয়না।
২.
যদি আপনার স্বামী শুকরের মাংসই রান্না করে থাকেন বা অন্যন্য হারাম খাবার রান্না
করে থাকেন অথবা পরিবেশন করে থাকেন বা হারাম খাবারের অন্যন্য সহযোগিতা করে থাকেন। তাহলে আপনার স্বামীর ফুল ইনকামই
হারাম। তাই তা দিয়ে উমরা
করা জায়েজ হবে না। বরং প্রশ্নোক্ত
ক্ষেত্রে হিসেব করে হারাম টাকাগুলো গরীবদেরকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকা করে দিতে হবে।
আর যদি এমন হয় যে, আপনার স্বামী হালাল-হারাম উভয় প্রকার খাবারই রান্না করে থাকেন বা পরিবেশন করে থাকেন তাহলে আপনার স্বামীর ইনকাম হালাল হারাম মিশ্রিত।
সুতরাং এ ধরনের চাকুরী ইসলাম অনুমতি দেয়না। তবে হালাল খাবার রান্না বা পরিবেশন করা
পরিমাণ কাজের হিসেব করে বেতন নেওয়া জায়েজ ও বৈধ এবং এই টাকাগুলো উমরা বা হজ্ব করার
জন্যও ব্যবহার করতে পারেবন। আর বেতনের
বাকী টাকাগুলো গরীবদেরকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকা করে দিতে হবে। সর্বোপরি এ ধরনের চাকুরী
করা আপনার স্বামীর জন্য বৈধ নয়।